টাকার দাবিতে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে এক কিশোরের লাশ সারা দিন আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। হতভাগ্য বাবা ভ্যানচালক কয়েক দফায় টাকা দিয়েও ছেলের লাশ নিতে পারেননি। ছেলের লাশের জন্য তিনি দিনভর মর্গের সামনে অপেক্ষা করেন। তবে বিকালে সাংবাদিকরা মর্গের সামনে গেলে দুই ডোম তাড়াহুড়া করে লাশ একটি অ্যাম্বুলেন্সে উঠিয়ে দেন। মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, দৌলতপুর উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের গাছিরদিয়া গ্রামের টলটলিপাড়ার হতদরিদ্র ভ্যানচালক কমল প্রমাণিকের ছেলে শান্ত (১৩) সোমবার সন্ধ্যায় কীটনাশক পান করে। তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। রাত পৌনে ১০টার দিকে শান্ত মারা যায়। অভাব-অনটনের সংসারে পড়াশোনা ছেড়ে মাদ্রাসার ছাত্র শান্ত কৃষি কাজ করত। মায়ের ওপর অভিমান করে সে আত্মহত্যা করে।
মঙ্গলবার বিকালে মর্গের সামনে কমলকে কান্নারত অবস্থায় দেখা যায়। তিনি বলেন, মর্গে ডেকে নিয়ে ডোম লক্ষ্মণ ও হীরালাল ছেলের লাশ দেখিয়ে বলে- টাকা না দিলে ময়নাতদন্ত করা হবে না। লাশও দেওয়া হবে না। বারবার অনুরোধ করেছি। বলেছি, টাকা কোথায় পাব। কিন্তু ওরা আমার কথা শোনেনি। ১০ হাজার টাকা দিয়ে লাশ নিতে বলে তারা। পুলিশের সামনেই এ টাকা দাবি করা হয়। তিনি আরও বলেন, লাশ পাহারা দেওয়ার কথা বলে প্রথমে সোমবার রাতে দেড় হাজার টাকা দাবি করে দুই ডোম। সকালে আসার সঙ্গে সঙ্গে আবার ৭০০ টাকা, পরে আরও ১০০ টাকা নেয়।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ডোম লক্ষ্মণ জানান, কোনো টাকা দাবি করা হয়নি। ইচ্ছে করে লাশ ফেলে রাখে। পুলিশ কনস্টেবল হাবিব জানান, তার সামনে দুই ডোম টাকা দাবি করেছে। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এম এ মোমেন বলেন, এ ধরনের কোনো অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন