বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সম্পাদকীয়

শেয়ারবাজারের গতি-প্রকৃতি

মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ৩১ আগস্ট, ২০২১, ১২:০২ এএম

অদৃশ্য এক শত্রুর বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করে যাচ্ছি। নতুন আতঙ্কের নাম ডেলটা প্লাস। করোনা ভাইরাসের ভয়াবহ ভারতীয় সংস্করণ এটি। এই পরিবর্তিত ভাইরাসটি ভারতের পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী তান্ডব চালাচ্ছে। এর ভয়াবহতা কোথায় যাবে তা এখনই বলা মুশকিল। তবে এতটুকু বোঝা যাচ্ছে, অর্থনীতির চাকা গতিশীল রাখতে আজ অনেক কিছুই উপেক্ষিত। শুধু বাংলাদেশেই নয়, সমস্ত বিশ্বেই এই প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে। জীবনের চেয়ে জীবিকাকেই প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। চেষ্টা করা হচ্ছে, নতুন জীবনে অভ্যস্থ হওয়ার।

করোনা ভাইরাস কবে নাগাদ পৃথিবী থেকে বিদায় নেবে তা স্পষ্ট নয়। বাস্তবতা হচ্ছে, করোনা ভাইরাস মহামারীতে প্রতি মিনিটে বিশ্বজুড়ে মানুষ মারা যাচ্ছে ৭ জন। আর মারাত্মক ক্ষুধার কারণে মারা যাচ্ছে ১১ জন। গত ৯ জুলাই যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফাম এ তথ্য জানিয়েছে। সংস্থাটির হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বে ক্ষুধায় ধুঁকছে এমন মানুষের সংখ্যা ২০২০ সালে ব্যাপক বেড়েছে। ২০১৯ সালের চেয়ে পরের বছরে ‘দুর্ভিক্ষের মতো অবস্থায়’ বসবাস করা মানুষের সংখ্যা ছিল ৬ গুণের বেশি। জলবায়ু পরিবর্তন ও সংঘাতের পাশাপাশি করোনা ভাইরাসের মহামারী এ সংকট তীব্র করে তুলেছে বলে অক্সফাম জানিয়েছে। জি-২০ ভুক্ত দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীরা সতর্ক করে বলেছেন, ডেলটা ধরনের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার ফলে বৈশ্বিক অর্থনীতির পুনরুদ্ধার আরও ধীর গতিতে হবে। বাংলাদেশেও জীবন ও জীবিকার জাঁতাকলে পড়ে ৮০ শতাংশ লোক ব্যবসার পুঁজি ভেঙে খাচ্ছে। সঞ্চয় ভেঙে ফেলেছে ৬০ শতাংশ লোক। ৮৬ লাখ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী দুঃসহ জীবনযাপন করছে। দারিদ্র্যের হার বেড়ে হয়েছে ৪২ শতাংশ। নতুনভাবে দরিদ্র হয়েছে ২ কোটি ৪৫ লাখ মানুষ।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই আড়াই কোটি দরিদ্র মানুষকে সরকার কতদিন খাওয়াবে? তাই-তো চলছে কঠোর লকডাউনের নামে ‘চোর-পুলিশ’ খেলা। ব্যবসা-বাণিজ্য যেন একেবারে স্থবির হয়ে না পড়ে সেজন্য চলছে বিধিনিষেধে শিথিলতা, যার সুফলও মিলছে ব্যবসা-বাণিজ্যে। সদ্যবিদায়ী অর্থবছরের পুরোটাই ছিলো করোনাময়। তারপরও এই অর্থবছরে ভালো করেছে বাংলাদেশ। ২০২০-২১ অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছে মোট ৩ হাজার ৮৭৬ কোটি ডলারের পণ্য। আগের অর্থবছরের তুলনায় বেড়েছে ১৫ দশমিক ১০ শতাংশ। চলতি অর্থবছর ৫১ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। রপ্তানি চিত্রের বাস্তবতাও সেই আভাস দিচ্ছে। ইউরোপ ও আমেরিকার করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া ছাড়াও আগামী শীত ও বড়দিন ঘিরে পোশাকের প্রচুর ক্রয়াদেশ পেয়েছে কারখানাগুলো। জুন ও জুলাই মাসে পোশাক খাতে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার ক্রয়াদেশ পেয়েছে, ফলে শেয়ারবাজারে বস্ত্র খাতে দেখা দিয়েছে চাঙাভাব। বস্ত্রখাতে মোট ৫৮টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত, সম্প্রতি এই খাতের প্রায় সব কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনও বেড়েছে। যদিও এর আগে বেশ কিছু মাস ধরে এই দর বাড়ার দাপট লক্ষ করা যাচ্ছিল দুর্বল ও রুগ্ণ বিমা খাতে। এছাড়া নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নানা উদ্যোগের ফলে দেশের শেয়ারবাজার এক নতুন দিগন্তে প্রবেশ করেছে। জুন-জুলাই মাসের ধারাবাহিকতায় আগস্ট মাসের শুরুতে শেয়ারবাজার সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন হয়েছে, তাতে ডিএসইর প্রধান সূচক ৬ হাজার ৭০০ পয়েন্ট অতিক্রম করেছে, পাশাপাশি বাজার মূলধন বেড়ে সাড়ে ৫ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে, যা শেয়ারবাজারের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড। আর তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর মধ্য থেকে বাছাই করা ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচকটিও বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় আড়াই হাজার পয়েন্ট। এ দুটি সূচকে কয়েক দিন ধরে প্রায় প্রতিদিনই রেকর্ড হচ্ছে। সূচক বৃদ্ধি মানেই আগের রেকর্ড ভেঙ্গে নতুন রেকর্ড। আনুষ্ঠানিকভাবে চালুর পর এটিই সূচক দুটির সর্বোচ্চ অবস্থান। তবে নতুন সূচক চালুর আগে ডিএসই সাধারণ সূচক (ডিজিইএন) ছিল ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক। ওই সূচকের অবস্থান বিবেচনা করলে সূচকের বর্তমান অবস্থান প্রায় এক দশকের সর্বোচ্চ।

সূচক সাড়ে ৬ হাজার বা বর্তমানে প্রায় ৭ হাজার এবং ভবিষ্যতে হয়তো ৮ হাজার পয়েন্টে যাবে। সূচকের এই অবস্থানগুলোকে মাইলফলক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এটি বিনিয়োগকারীদের একটি মনস্তাত্ত্বিক ব্যাপার বৈ আর কিছু নয়। লক্ষ করার বিষয় হলো, সূচকটির ইতিহাসে আরও বেশ কয়েকবার এই অবস্থানের কাছাকাছি উন্নীত হয়েছিল। ২০১৩ সালের ২৮ জানুয়ারি সূচকটি সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়। চালুর ওই বছরই ৩০ এপ্রিল সূচকটির সর্বনিম্ন অবস্থান ৩ হাজার ৪৩৮ পয়েন্ট পর্যন্ত নেমেছিল। আর ৪ হাজার পয়েন্ট পার করেছিল একই বছরের ৮ জুন। ৫ হাজার পয়েন্টের মাইলফলক অতিক্রম করে ২০১৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর। সূচকটি ২০১৭ সালের ৩১ আগস্ট সর্বপ্রথম ৬ হাজার পয়েন্টের মাইলফলক পার করে। ওই বছর ২৬ নভেম্বর সূচক ৬ হাজার ৩৩৬ পয়েন্ট পর্যন্ত উঠেছিল। কিন্তু সূচকটি স্থায়ী হয়নি। আবার ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ৬ হাজার ৩০০ পয়েন্ট অতিক্রম করে। যথারীতি শুরু হয় দরপতন এবং ওই বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি সূচকটি ফের ৬ হাজার পয়েন্টের নিচে নামে। ক্রমাগত দরপতনে গত বছর মহামারীর শুরুতে সূচকটি ৪ হাজার পয়েন্টের নিচে নেমে আসে। এরপর বিএসইসির নেতৃত্বে আসে পরিবর্তন। নতুন চেয়ারম্যানের সঠিক পরিকল্পনা ও দিকনির্দেশনায় শেয়ারবাজারে আপতদৃষ্টিতে এক নতুন যুগের সূচনা হয়। ফলে চলতি বছরের ৩০ মে সূচক বেড়ে আবার ৬ হাজার পয়েন্ট অতিক্রম করে। বিনিয়োগকারীরা ফিরে পায় আস্থা। ২০১০ সালের পর যেকোনো সময়ের চেয়ে লেনদেনে আসে গতিশীলতা। লেনদেন এখন ৩ হাজার কোটি টাকা ছুঁই ছুঁই করছে। ২০১০ সালের রেকর্ড (৫ ডিসেম্বর লেনদেন ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকা) যেকোনো সময় ভেঙ্গে যেতে পারে। এ অবস্থায় উদ্বেগের বড় বিষয় হচ্ছে, রেকর্ডের এ ভিড়ে দুর্বল ও মানহীন কোম্পানির শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, যা প্রতিনিয়ত ঝুঁকি তৈরি করছে এবং বিনিয়োগের এই প্রবণতা চলতে থাকলে শেয়ারবাজারে ফের ধসের আশঙ্কা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

তবে আমাদের শেয়ারবাজার পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায় এখনো অনেক অবমূল্যায়িত, এখনো অনেক শেয়ার বিনিয়োগযোগ্য রয়েছে। গত এপ্রিলে মার্জিন ঋণ নীতিমালার পরিবর্তন করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। সে সময় সূচকের সঙ্গে সমন্বয় করে ঋণসীমা নির্ধারণ করা হয়। ডিএসইর প্রধান সূচক-ডিএসইএক্সের ৭ হাজার পয়েন্ট অতিক্রম না করা পর্যন্ত ঋণসীমা নির্ধারণ করা হয় প্রতি ১০০ টাকার বিপরীতে ৮০ টাকা, যা আগে ছিল ৫০ টাকা। ঋণসীমা বাড়লে স্বাভাবিকভাবেই শেয়ারবাজারে লেনদেন বাড়ে। কারণ, গ্রাহকদের শেয়ার কেনার সক্ষমতা বাড়ে। এখন ১ লাখ টাকা বিনিয়োগের বিপরীতে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত ঋণ পায় বিনিয়োগকারীরা। এরপর ওই বিনিয়োগকারীর শেয়ারের দাম যত বাড়বে তার ঋণ নেওয়ার সক্ষমতাও তত বাড়বে। এভাবে ঊর্ধ্বমুখী বাজারে বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগ বাড়ায় এবং অবশেষে অতি লোভে ঋণের জালে আটকে পড়ে। কারসাজির ঘটনাও বেড়ে যায়। বুঝে শুনে সঠিক সময় শেয়ার বিক্রি করতে না পারলে ফোর্সড সেলের সম্মুখীন হয়ে সর্বস্বান্ত হয় বিনিয়োগকারীরা। যা ছিল ২০১০ সালে বাজার ধসের অন্যতম মূল কারণ। এভাবে শেয়ারবাজারে উচ্চ মার্জিন ঋণসীমা দিয়ে সাময়িকভাবে একটি বুদবুদ সৃষ্টি করা যায় ঠিকই। কিন্তু সেটির স্থায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন রয়েই যায়।

গত ৪ এপ্রিল যেদিন ঋণসীমা বাড়ানো হয়। সেদিন সূচক ছিল ৫ হাজার পয়েন্টে। চার মাসের ব্যবধানে সূচক বেড়েছে ১ হাজার ৭৮৭ পয়েন্ট বা ৩৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ। গত কয়েক মাসে সূচক বেশ বাড়লেও ভালো মৌলভিত্তি কোম্পানির শেয়ারের দাম এখনো অবমূল্যায়িত। এসব শেয়ারের দাম বাড়তে থাকলে সূচকটি আরও বাড়বে এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার বেঁধে দেওয়া ৭ হাজার পয়েন্টে যেতে খুব বেশি সময় লাগবে না। তাই নিয়ন্ত্রক সংস্থা ১২ আগস্ট ফোর্সড সেল বন্ধে সর্বোচ্চ ঋণসুবিধার পরিধি ৭ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৮ হাজার পয়েন্টে উন্নীত করেছে। ফলে আপাতত সূচক বাড়লেও ঋণ সমন্বয়ে শেয়ার বিক্রির চাপ আসবে না। তবে নতুন নির্দেশনায় সূচক ৮ হাজার পয়েন্ট অতিক্রম করলে ঋণসীমা স¦য়ংক্রিয়ভাবে কমে ১০০ টাকার বিপরীতে ৫০ টাকায় নেমে আসবে। তখন আবার ঋণ সমন্বয়ের সেই ধাক্কা সামলে সূচক কতটুকু স্থায়ী হবে সেটি ভেবে দেখার বিষয়। তাই বিনিয়োগকারীদের সাবধান থাকতে হবে। সূচকের এ ঊর্ধ্বমুখী অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের নতুন করে ঋণের সক্ষমতা বাড়লেও ঋণ নেওয়া ঠিক হবে কিনা, সেটি ভেবে দেখতে হবে। অন্যদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা সূচকের সঙ্গে মার্জিন ঋণ বারবার সমন্বয় করে একটি ঋণনির্ভর বাজার ও ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে সূচক ধরে রাখার ব্যর্থ প্রয়াস না চালিয়ে, ধীরে ধীরে ঋণের আনুপাতিক হার কমিয়ে, বাজারকে ঋণনির্ভরতা থেকে বের করে একটি সুষ্ঠু, স্বাভাবিক ও স্বনির্ভর বাজার গঠনে মনোযোগ দিতে হবে। মার্জিন ঋণ অথবা সম্প্রতি শোনা যাচ্ছে, সরকার ঘোষিত প্রণোদনা ঋণসহ যেকোনো ঋণের টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বাজারকে সাময়িক চাঙা করলেও নিঃসন্দেহে বাজারে ঝুঁকি তৈরি করে, যা সুষ্ঠু স্থিতিশীল বাজার গঠনে অন্তরায়। ইতিহাস এটাই সাক্ষ্য দেয়।

বিনিয়োগকারীর বিনিয়োগ সুরক্ষা নিশ্চত করা না গেলে দেশের শেয়ারবাজারের কাক্সিক্ষত বিকাশ ঘটবে না। শেয়ারবাজার খুবই সংবেদনশীল জায়গা। এখানে অল্পতেই প্রভাব পড়ে। তাই শেয়ারবাজারী অনেক বেড়ে যাওয়া বা লাগাম টেনে ধরা এধরনের অযাচিত ও অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য করে বাজারকে বিতর্কিত করে তোলা থেকে বিরত থাকা উচিত। বাজারকে নিজস্ব গতিতে চলতে দেয়াই শ্রেয়। সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে শেয়ারবাজার নিয়ে মন্তব্যের ব্যাপারে দায়িত্বশীল ও সতর্ক থাকতে হবে। বাংলাদেশ এশিয়ার দ্রুত উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোর একটি। করোনা মহামারীর মধ্যেও বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য। উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় শেয়ারবাজারেও তৈরি হয়েছে অপার সম্ভাবনা। তাই শেয়ারবাজারে স্বল্পমেয়াদি গতানুগতিক বিনিয়োগ চিন্তা ও অধিক মুনাফার আশায় মার্জিন ঋণ না করে, নিজের বিনিয়োগ সক্ষমতা, ব্যাংকের সুদহার, মূল্যস্ফীতি ও কোম্পানির ডিভিডেন্ড ইল্ড পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে ক্যাপিটাল গেইন মাথায় রেখে, একটু ভেবেচিন্তে সুপরিকল্পিত বিনিয়োগ করলে বিনিয়োগকারীরা দেশের উন্নয়নের সুফল ঘরে নিতে পারবে।
লেখক: পুঁজিবাজার বিশ্লেষক
monirulislammi888@gmail.com

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন