মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

ইসলামে স্বাস্থ্যবিধি-২

তানভীর সাকী ভূঁইয়া | প্রকাশের সময় : ৩১ আগস্ট, ২০২১, ১২:০০ এএম

যাদের ওপর আল্লাহ তা’আলার ইচ্ছা হয় বিভিন্ন আজাব পাঠান। পরবর্তীতে তিনি তা ঈমানদারদের জন্য নিজ অনুগ্রহে রহমতে রূপান্তর করেন এভাবে যে- কোনো ব্যক্তি যদি মহামারি আক্রান্ত এলাকায় থাকে এবং নিজ বাড়িতে ধৈর্য সহকারে সাওয়াবের নিয়তে এ বিশ্বাস নিয়ে অবস্থান করে যে, আল্লাহ তাআলা ভাগ্যে যা রেখেছেন তার বাইরে মহামারি তার কিছু করতে পারবে না তাহলে তার জন্য রয়েছে একজন শহিদের সাওয়াব।’ (মুসনাদে আহমাদ)।

মহামারি রোধকল্পে আরেকটি সার্বজনীন কার্যকরী পদক্ষেপ হলো লকডাউন পদ্ধতি। নানা কারণে পদ্ধতিটি উপেক্ষিত হলেও শব্দটির সাথে আজ আমরা সকলেই বেশ পরিচিত। উম্মতের মুক্তির দিশারি প্রিয় নবীজী (সা.) আজ থেকে প্রায় চৌদ্দোশত বছর আগে লকডাউন পালনের নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘তোমরা যখন কোনো এলাকায় মহামারি প্লেগের বিস্তারের কথা শুনো, তখন সেখানে প্রবেশ করো না। আর যদি কোনো এলাকায় এর প্রাদুর্ভাব নেমে আসে, আর তোমরা সেখানে থাকো, তাহলে সেখান থেকে বেরিয়েও যেও না।’ (বুখারি)।

আজ আমরা প্রয়োজনে কিংবা অসাবধানতা বশত: নিয়মিত লকডাউনকে উপেক্ষা করে চলছি। যার খেসারত দিতে হচ্ছে প্রতিদিন অসংখ্য মৃত্যুর মধ্যমে। অথচ বিশ্বনবী (সা.) মহামারি আক্রান্ত অঞ্চলে প্রবেশ করতে এবং সেই অঞ্চলের লোকদের নিজ এলাকা ছেড়ে অন্যত্র যেতে নিষেধ করেছেন। হাদিসে এসেছে, ‘মহামারি হচ্ছে একটি আজাবের নিদর্শন। আল্লাহ তা’আলা এর মাধ্যমে তাঁর বান্দাদের পরীক্ষা নিয়ে থাকেন। সুতরাং, তোমরা যদি কোথাও মহামারির সংবাদ শোনো তাহলে কিছুতেই সেখানে যাবে না। আর যদি তোমাদের বসবাসের শহরে মহামারি দেখা দেয় তাহলে সেখান থেকে পলায়ন করবে না।’ (মুসলিম)।

ইদানিংকালে আল্লাহর কিছু ওভার স্মার্ট বান্দা রোগাক্রান্ত হলে চিকিৎসা নিতে গড়িমসি করেন। আবার কেউবা ভ্যাক্সিন নিতে অনাগ্রহও প্রকাশ করেন। তাদের আবশ্যিক কর্তব্য হলো, মহান আল্লাহর ওপর পরিপূর্ণ আস্থা এবং বিশ্বাস রেখে কোরআন-সুন্নাহর নির্দেশনা মেনে অসুস্থতায় চিকিৎসা গ্রহণের ওপর আমল করে লকডাউন, আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টিন পদ্ধতিগুলোর অনুসরণ করা।

আমাদের উচিত মহান আল্লাহ তায়া’লার ফয়সালার ওপর পূর্ণ আস্থা রেখে ধৈর্যের সাথে তামাম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। কেননা সকল ফয়সালা কেবলমাত্র আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসে। আল্লাহ তাআলা এ সম্পর্কে কোরআনে বলেন, ‘তোমরা যেখানেই থাক না কেন মৃত্যু কিন্তু তোমাদেরকে পাকড়াও করবেই। যদি তোমরা সুদৃঢ় দুর্গের ভেতরেও অবস্থান কর, তবুও। বস্তুত তাদের কোনো কল্যাণ সাধিত হলে তারা বলে যে, এটা সাধিত হয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে। আর যদি তাদের কোনো অকল্যাণ হয়, তবে বলে, এটা হয়েছে তোমার পক্ষ থেকে, বলে দাও, এসবই আল্লাহর পক্ষ থেকে। পক্ষান্তরে তাদের পরিণতি কী হবে, যারা কখনও কোনো কথা বুঝতে চেষ্টা করে না।’ (সুরা নিসা: ৭৮)।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
কামরু জ্জামান ৩১ আগস্ট, ২০২১, ৬:০৫ এএম says : 0
ইসলাম মানুষকে প্রয়োজনীয় সব বিষয়ের সচেতনার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছে। কেননা সচেতনা ছাড়া মানুষ ইসলামের কোনো বিধানই পালন করতে পারবে না, পালন করা সম্ভবও হবে না।
Total Reply(0)
সৈকত ফকির ৩১ আগস্ট, ২০২১, ৬:০৬ এএম says : 0
স্বাস্থ্য মানব জীবনে আল্লাহর এক অশেষ দান ও অনুগ্রহ। তাই ইসলাম মুমিনদেরকে স্বাস্থ্য সচেতনার প্রতি অধিক গুরুত্বারোপ করেছে।
Total Reply(0)
হাদী উজ্জামান ৩১ আগস্ট, ২০২১, ৬:০৬ এএম says : 0
আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তার ইবাদত করার জন্য। আর ইবাদত করতে হলে শরীরিক ও মানসিককভাবে সুস্থ থাকা জরুরি। কেননা শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকলেই কেবল একাগ্রতার সঙ্গে ইবাদাত করা সম্ভব । সুতরাং একজন মানুষ বিশেষত একজন মুমিন যেন শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকে সে বিষয়ে ইসলাম গুরুত্ব সহকারে তাগিদ দিয়েছে।
Total Reply(0)
মোঃ নাজমুল ইসলাম ৩১ আগস্ট, ২০২১, ৬:০৬ এএম says : 0
মানুষকে সুস্থ থাকতে হলে তাকে অবশ্যই শরীর ও স্বাস্থের প্রতি নজর রাখতে হবে। সেই সঙ্গে তাকে প্রতিদিন নিয়মিতভাবে শরীর ও স্বাস্থের পরিচর্যা করতে হবে।
Total Reply(0)
তানিম আশরাফ ৩১ আগস্ট, ২০২১, ৬:০৬ এএম says : 0
ইসলামের আদেশ অনুযায়ী মুমিন বান্দা প্রথমত খেয়াল রাখবেন যেন সে কখনও শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ না হয়ে পড়েন। অবশ্য কখনও কোনো কারণে অসুস্থ হলে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করবেন।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন