বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিন্মচাপের প্রভাবে উপক’লভাগ সহ সমগ্র দক্ষিনঞ্চল যুড়ে ঝড়ো হাওয়ার সাথে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। শরতের এ দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া দক্ষিনাঞ্চলের প্রধান খাদ্য ফসল আমনের ঝুকি যথেষ্ঠ বৃদ্ধি করছে। বায়ু তাড়িত জলোচ্ছাসের সাথে ফুসে ওঠা সাগরের জোয়ারে উপক’লভাগ সহ দক্ষিনাঞ্চলের বিশাল এলাকার ফসলী জমি সহ বিচ্ছিন্ন দ্বীপ এবং চরাঞ্চল পুনরায় প্লাবিত হতে শুরু করেছে। অথচ ভাদ্রের অমাবশ্যার প্রভাবে মাত্র ৫দিন আগেই উপক’লসহ দক্ষিনাঞ্চল আরো একবার প্লাবনের শিকার হয়েছিল। সে ধকল কাটিয়ে ওঠার অগেই পুনরায় এ প্লাবন দেশের উত্তর ও মধ্যভাগের বণ্যা পরিস্থিতির উন্নতি বিলম্বিত করার পাশাপাশি দক্ষিণাঞ্চলের ১১টি জেলার প্রায় সোয়া ৭ লাখ হেক্টরর জমির সদ্য রোপা আমনকে পুনরায় ঝুকির মুখে ফেলল।
বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের নদী বন্দরগুলোকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেতের পাশাপাশি পায়রা সহ সবগুলো সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া বিভাগ। সাগর মাঝারী মাত্রায় উত্তাল রয়েছে। কুয়কাটা সৈকতে গর্জনের সাথে ৪Ñ৬ ফুট উচ্চতার ঢেউ আছড়ে পড়ছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর সহ গভীর সমুদ্রে মাছ ধরারত সব ট্রলারকে অবিলম্বে নিরাপদ আশ্রয়ে অবস্থান গ্রহনের পাশাপাশি সাগরে যেতে বারন করেছে আবহাওয়া বিভাগ। বরিশাল সহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল ছাড়াও গোটা উপকূলভাগে পূর্বÑদক্ষিণ দিক থেকে ২৫Ñ৩০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়ার সাথে থেমে থেমে মাঝারী বৃষ্টি হচ্ছে। সোমবার সকাল দুপুর ১টা পর্যন্ত বরিশালে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়া বিভাগ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উড়িশ্যা উপক’লীয় এলাকায় অবস্থানরত নি¤œচাপটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনিভ’ত হয়ে সকাল ৯টায় একই এলাকায় অবস্থানের কথা জানিয়ে তা গভীর নি¤œচাপে পরিনত হবার কথা বলা হয়েছে। ঝড়টি এসময়ে পায়রা বন্দরের ৪২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। নিন্মচাপটির কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ৫০ কিলোমিটার হলেও দমকা আকারে তা ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মাঝারী আকারের এ নিন্মচাপটি বাংলাদেশ উপক’লে আঘাত হানার সম্ভবনা কম হলেও দক্ষিণাঞ্চল সহ উপক’লভাগের প্রশাসন পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে। প্রয়োজনে স্বল্পতম সময়ের মধ্যে উপক’লভাগের ১৩ জেলার ৪১টি উপজেলার ৭০১টি ইউনিটের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রায় ৭৫ হাজার সেচ্ছা সেবককে যেকোন দূর্যোগ মোকাবেলায় কাজে লাগান হবে। তবে উপক’লভাগ সহ দক্ষিণাঞ্চলের বিপুল সংখ্যক ফসলী জমি সহ একের পর এক জনপদ মাত্র ৫ দিনের ব্যাধানে পুনরায় প্লাবিত হওয়ায় এ অঞ্চলের বিশাল জনগোষ্ঠী আরো একবার বিপর্যয়ের আশংকায় রয়েছেন। পাশাপাশি উঠতি আউশ সহ প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল রোপা আমন-এর ঝুকি নিয়ে তাদের দুঃশ্চিন্তারও শেষ নেই। গতবছরও ভাদ্রের বড় অমাবশ্যার ভয়াবহ প্লাবনে সাড়ে ৭ লাখ টন খাদ্য উদ্বৃত্ত দক্ষিণাঞ্চলে দেড় লক্ষাধীক টন আমন চালের উৎপাদন কম হয়েছিল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন