শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

শরীয়ার কথা বলে হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় এহসান গ্রুপ

হাইকোর্টের মন্তব্য

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০১ এএম

‘সুদবিহীন বিনিয়োগ’ আর ‘শরীয়াহ’র কথা বলে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করে এহসান গ্রুপ হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। গতকাল সোমবার বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান এবং বিচারপতি মো.জাকির হোসেনের ভার্চুয়াল ডিভিশন বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। ‘মাইক্রো ক্রেডিট’ বা ক্ষুদ্র ঋণের নামে এহসান গ্রুপের হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়ে রিট করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। বিষয়টির ওপর শুনানিকালে আদালত তার কাছে (ব্যারিস্টার সুমন) এহসান গ্রুপের অর্থ আত্মসাৎ সংক্রান্ত যত তথ্য আছে তা সরবরাহ করার নির্দেশ দেন। রিটের পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করেন ২০ সেপ্টেম্বর।
ব্যারিস্টার সুমন এহসান গ্রুপের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন পোর্টালের প্রতিবেদন তুলে ধরেন। তিনি দেশে ক্ষুদ্র ঋণ প্রদানকারী ৭৫৮টি প্রতিষ্ঠান আছে বলে জানান আদালতকে। এসময় আদালত জানতে চান, কিছু প্রতিষ্ঠানের নাম বলেন যাদের নিবন্ধন নেই। তখন সুমন বলেন, আমি প্রতিষ্ঠানের নাম বলতে চাচ্ছি না। তবে আমরা খোঁজ নিতে চাই, কতগুলো প্রতিষ্ঠান গরিব-অসহায় মানুষের সর্বনাশের সঙ্গে জড়িত। পিরোজপুরভিত্তিক ‘এহসান গ্রুপ’র চেয়ারম্যান রাগীব আহসানকে নিয়ে এসময় আদালত বলেন, শরীয়াহ ও সুদবিহীন বিনিয়োগের কথা বলে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এহসান গ্রুপ। তারা শরীয়াহ ও ইসলামের কথা বলে এসব করেছে।
এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর মাইক্রোক্রেডিটের নামে সুদব্যবস্থা বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়। রিট আবেদনে সারাদেশের সুদ ব্যবসায়ীদের তালিকা চাওয়া হয়। রিটে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি), ৬৪ জেলার ডিসি ও এসপিকে বিবাদী করা হয়।
বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে জনস্বার্থে গত ৭ সেপ্টেম্ব হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এ রিট করেন। এ আইনজীবী জানান, দেশের প্রত্যেক গ্রাম ও মহল্লায় সমবায় সমিতিসহ বিভিন্ন নামে সুদের লেনদেন চলছে। অনেকে ব্যক্তিগতভাবে ঋণের নামে উচ্চহারে সুদ নিয়ে ব্যবসা করে আসছেন। তাদের কোনো নিবন্ধন নেই। গরিব-অসহায় মানুষ সুদ কারবারিদের কাছে জিম্মি। তাদের সাপ্তাহিক ও মাসিক ভিত্তিতে আদায় করা সুদের পরিমাণও গরিব মানুষের কাছে খুব বেশি।
সুমন বলেন, এদের নেটওয়ার্ক যদি ভেঙে দেয়া যায়, তাহলে দাদন কারবারিদের সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়া কোনো বিষয় নয়। এজন্য ডিসি-এসপি তালিকা তৈরি করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন। এটা যদি কোনোভাবে ভেঙে দেয়া যায় তাহলে দেখবেন অনেক মানুষ বেঁচে যাবে। তিনি জানান, বাংলাদেশে ৮৪টি মাইক্রোক্রেডিটের অথরিটি লাইসেন্স রয়েভে। অথচ হাজার হাজার মানুষ সুদের কারবার করছে। বাংলাদেশ ব্যাংক যদি এটা নিয়ে কোনোভাবে নাড়াচাড়া করে তাহলেই হবে। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক ও সরকার চাইলে এই নেটওয়ার্ক ভেঙে দেয়া সম্ভব।
সুমন বলেন, দাদন ব্যবসায়ীদের নেটওয়ার্ক ভাঙতে কাউকে গুলি করতে হবে না। বড় কোনো অভিযান চালাতে হবে না। শুধু কারা এ দাদন কারবারের সঙ্গে জড়িত তাদের তালিকা করলেই হবে। সফলতার মাত্রায় আমরা আরেকটা জিনিস যোগ করতে চাই, শপথ নিতে চাই, দাদন কারবার নিয়ন্ত্রণে। তবেই এ দেশে সোনার বাংলা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Farhan Shahriar Raihan ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৫৩ এএম says : 0
ওয়াজ- মাহফিলের আড়ালে নিজের প্রতারণামূলক ব্যবসা চালিয়ে এভাবে হাজার হাজার মানুষের টাকা আত্নসাত করার মাধ্যমে এরা যেভাবে ইসলামের ক্ষতি করছে সেটা বর্ণনাতীত। সমাজের ধর্মপ্রাণ মানুষের বিশ্বাসকে এরা সুযোগ হিসেবে লুফে নেয়
Total Reply(0)
Mohmmed Younus Meah ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৫৪ এএম says : 0
সব সম্পদ নিলামে বিক্রি করে গ্রাহকের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করছি সরকারকে মূনাফা সহ। আর সব শয়তান গুলোকে দ্রুত ফাঁসি দিন যাতে আর কোন কেউ এরকম বাটপারি করে মানুষের টাকা মেরে না খায়।
Total Reply(0)
Md Nasim ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৫৪ এএম says : 0
এই সকল ধর্ম ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দেশবাসী সচেতন হওয়া উচিত
Total Reply(0)
Md Nasim ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৫৫ এএম says : 0
এরা হাজার কুড়ি টাকা লোপাট করে কিভাবে আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে বেরিয়ে যায়
Total Reply(0)
Mokhlesur Rahman ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:৫৫ এএম says : 0
এত বছর কিভাবে এত বড় প্রতারণা করলো ? আমার বিশ্বাস আরো বড় বড় প্রতারক আছে। আরো জোড়ালো তৎপরতা চালালে এদের সবাইকে ধরা সম্ভব।
Total Reply(0)
Mohammad Ayub Ali ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১১:১০ এএম says : 0
যুবক ডেস্টিনির গ্রাকদের টাকাগুলো কোথায়? আসলে সরকার এবং তারঁ দলের লোকেরা মিলে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের সম্পদগুলো লুটেপুটে খাচ্ছে। গ্রাহকদের কিছুই করার নেই। ডেস্টিনি কি একদিনে গ্রাহকদের টাকা নিয়েগেছে? সরকারই সুযোগ করে দিয়েছিল আবার সুযোগ বুঝে টানমেরে টাকাগুলো নিয়ে গেলো।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন