মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

চোখে দেখা সর্বশক্তিমান আল্লাহর কুদরত

উবায়দুর রহমান খান নদভী | প্রকাশের সময় : ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

সকল ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহর, বিশ্বপ্রকৃতি তার হুকুমেই চলে, আল্লাহর রহমত ছাড়া মানুষ চরম অসহায়। আল্লাহ সব বিষয়ে সর্বশক্তিমান। ইল্লাল্লাহা আলা কুল্লি শাইয়িন কাদীর। পবিত্র কোরআনে বহুবার এ কথাটি এসেছে। এ বিশ্ব প্রকৃতি সৃষ্টিজগত আল্লাহর নির্দেশে তার নিঁখুত ব্যবস্থাপনায় প্রতিনিয়ত চলছে। মানুষের ধারণা ও কল্পনার চেয়েও বড় এবং সুনিপুন সৌরজগত, মহা বিজ্ঞানময় অনুপম এই পৃথিবীর প্রতিটি কণা, অণু-পরমাণু আল্লাহর হুকুমে বিবর্তিত হয়। ইউসাব্বিহু লাহূ মা ফিস সামাওয়াতি ওয়াল আরদ। আকাশ মণ্ডলী ও বিশ্ব চরাচরে যা কিছু আছে, সবই আল্লাহর গুণগান ও পবিত্রতা বর্ণনার তসবিহ পড়ে। আল্লাহ পরম ক্ষমতাশালী, মহাপ্রজ্ঞা ও কৌশলময়। (সূরা হাশর : ২৪)।

তুরস্কে সর্বকালের বড় দাবানল দেখা গেছে ২০২১ এর জুলাই ও আগস্টের দশ পনেরো দিন। তুরস্ক বিশাল একটি রাষ্ট্র। এর পার্বত্য বনাঞ্চল ও উপকূলীয় পর্যটন এলাকায় শত শত জায়গায় একই সাথে দাবানল জ্বলে ওঠে। এর ভয়াবহতা ছিল ভাবনাতীত। মাইলের পর মাইল বন ও পাহাড়ি গ্রাম পুড়িয়ে আগুনের লেলিহান শিখা সমুদ্রপার পর্যন্ত চলে যায়। পর্যটন রিসোর্ট জ্বলতে থাকে। আগুন লাফিয়ে চলে নতুন এলাকায় দাবানল হয়ে জ্বলে।

বাতাসের গরম তেজ ও আগুনের কালো ধোঁয়ায় আকাশ ঢাকা পড়ে। মানুষ নিঃশ্বাস নিতে না পেরে দৌড়াতে থাকে। নিজের পরনের কাপড়টুকু নিয়েই মানুষ পালাতে শুরু করে। কিছু মানুষ টাকা পয়সা গয়নাগাটি আর ব্যবহারের সামান্য বস্ত্রাদি নিয়ে বাড়িঘর আগুনের মুখে রেখে পালাতে থাকে। গ্রামের নারী পুরুষদের দেখা যায় নিজেদের গবাদি পশুগুলোকে হাঁকিয়ে সমুদ্র তীরে নিয়ে যেতে। আগুনের হাত থেকে আত্মরক্ষার আর কোনো উপায় তাদের ছিল না।

একাধারে দুই সপ্তাহ দাবানল জ্বলতে এবং নতুন নতুন জায়গায় ছড়াতে থাকে। পাশ্ববর্তী অঞ্চল ইজরায়েলে এ দাবানল দেখা গেছে। বিশেষ করে গ্রিসের অনেক অঞ্চল দাবানলের শিকার হয়। তবে তুরস্কের ব্যাপক এলাকাজুড়ে শত শত দাবানল একই সাথে জ্বলতে শুরু করলে দেশটিতে বিপুল আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সতর্কতা ও অব্যাহত নির্বাপন চেষ্টায় প্রাণহীন কম হলেও মানবিক বিপর্যয় ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি বিপুল আকার ধারণ করে।

একসময় তুরস্ক সরকার রাষ্ট্রীয়ভাবে তওবা ও দোয়ার ঘোষণা দেয়। সর্বশক্তিমান আল্লাহর কাছে রহমত ও নাজাত কামনা করার, দাবানল নির্বাপন, আবহাওয়ার তাপদাহ, চরম উষ্ণতা, সূর্যালোকে আগুনের হল্কাময় বাতাস আর্দ্রতায় পরিণত করাসহ মুষলধারায় রহমতের বৃষ্টি কামনা করে ইসতিসকার নামাজ এবং জাতীয় পর্যায়ে দোয়া মুনাজাতের ব্যবস্থা নেয়। এতে সে দেশের সেক্যুলার মহল ঠাট্টা বিদ্রুপ শুরু করে। সরকারের এ ঘোষণা নিয়ে স্যোশাল মিডিয়াতেও আল্লাহর শক্তিতে অবিশ্বাসী ধর্মহীনতায় বিশ্বাসী নাস্তিক্যবাদী গোষ্ঠি ব্যাপক ট্রল আরম্ভ করে।
এক পর্যায়ে গত ৬ আগস্ট-২১ তুরস্কের ধর্ম বিষয়ক ডাইরেক্টরেট দিয়ানাত এর প্রধান এবং প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগানের ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আলী এরবাশ জাতীয় পর্যায়ে ইসতিসকার নামাজের ব্যবস্থা করেন এবং নিজেই এতে ইমামতি ও দোয়া মুনাজাত করেন। স্থানীয়ভাবেও উপদ্রুত প্রতিটি এলাকায় ইসতিসকা ও তাওবার নামাজ পড়া হয়।

আল্লাহর রহমত নাজিল হয়। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস ছিল আগামী ২০ দিন আনাতোলিয়া অঞ্চলে তাপদাহ চলবে। বৃষ্টিপাতের কোনোই সম্ভাবনা নেই। বাস্তব অবস্থা, আলামত এবং ধারণা মিথ্যা প্রমাণিত করে নামাজের সাথে সাথে তুরস্কে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হয়। দাবানল দুর্বল হয়ে আসে। ৯৮% দাবানল নিভে যায়। সারাদেশে নেমে আসে স্বস্তি। একই সময়ে বিশ্ব মিডিয়া তুরস্কের রহমতের বৃষ্টির সংবাদ প্রচারের সাথে মন্তব্য করে যে, পার্শ্ববর্তী গ্রিসে এসময় একফোঁটা বৃষ্টিও হয়নি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
Md Zamirhussain ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১১:০৩ পিএম says : 0
মানুষ বড়ই জালেম, শয়তানের প্ররোচনায় সহসাই তারা আল্লাহ কে ভুুলে যায়। কিছু দিন আগেই ইটালীর প্রেসিডেন্টকে অসহায় হয়ে আল্লাহ কে স্মরন করতে দেখেছি। তার পরও তোমরা আল্লাহ কে অস্বীকার করবে।
Total Reply(0)
Shahidul Islam ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৪:১৪ এএম says : 0
আল্লাহ রহমত,ইচ্ছে করলে সবকিছু পারেন তার প্রমান।
Total Reply(0)
হাবীব ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৪:১৮ এএম says : 0
বিশাল এ সৃষ্টির ছোট থেকে ছোট, বড় থেকে বড় সবকিছুতেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মহান আল্লাহতায়ালার অগণিত নিদর্শন। মুক্তবুদ্ধির জানালা খোলে গভীর দৃষ্টিতে প্রকৃতির দিকে তাকালে মনের পর্দায় ভেসে উঠে আল্লাহর অসীম কুদরতের খেলা।
Total Reply(0)
জহির ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৪:১৮ এএম says : 0
আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেছেন, নিশ্চয়ই নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডল সৃজনে এবং দিন-রাতের পরিবর্তনে সুস্পষ্ট নিদর্শন রয়েছে জ্ঞানীদের জন্য। যারা দাঁড়িয়ে, বসে, শোয়ে আল্লাহর জিকির করে এবং নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডল সৃজন নিয়ে চিন্তাভাবনা করে। (তারা স্বত:স্ফূর্তভাবে স্বীকার করতে বাধ্য হয়) হে আমার প্রতিপালক! আপনি এগুলো বৃথা সৃষ্টি করেননি। আপনি (বৃথা সৃষ্টি করার দোষ থেকে) পবিত্রতম। -সূরা আল ইমরান : ১৯১-১৯২
Total Reply(0)
মমতাজ আহমেদ ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৪:২০ এএম says : 0
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সব ধরনের বিপদাপদে ধৈর্য ধারণ করা এবং তাঁরই নিকট সাহায্য চাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
Total Reply(0)
সাইফুল ইসলাম ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৪:২৪ এএম says : 0
পৃথিবীতে আল্লাহর কুদরতি নিদর্শনাবলির অন্ত নেই। পাহাড়-পর্বত, আকাশ-জমিন, নদ-নদী, চন্দ্র-সূর্য, তরুলতা ও পাখ-পাখালি সবই আল্লাহর কুদরতের সৃষ্টি। এগুলোর সৃষ্টি মানুষের কল্যাণার্থে। পাশাপাশি এতে উপদেশও নিহিত আছে। জ্ঞানীরা এসব দেখে আল্লাহর পরিচয় লাভ করে। ঈমান মজবুত করে।
Total Reply(0)
Dadhack ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:১৪ পিএম says : 0
We muslim have forgotten our Creator the Omnipotent The Al-Mighty Allah as such we are suffering in the hand of Kafir and also the Munafiq ruler. May Allah guide all the muslim to Islam. Ameen
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন