একদিকে গাজীপুর মহানগরীর উন্নয়ন, অপরদিকে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কট‚ক্তি- কোন পথে এগিয়ে চলেছে গাজীপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতি? এ প্রশ্ন এখন গাজীপুরে সচেতন মহলের মুখে মুখে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন জাতিসংঘের এসডিজি পুরস্কারে ঘোষিত হলেন ঠিক সেই সময়ে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গাজীপুর সিটি কপোরেশনের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের একটি বক্তব্যের ভিডিও ফেসবুক ও ইউটিউবে ভাইরাল হয়।
ভিডিওটি যখন প্রকাশ করা হয় তখন মেয়র ছিলেন দেশের বাইরে। দেশে ফিরে তিনি ভিডিওতে যে বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে তার প্রতিবাদ জানিয়ে ফেসবুক লাইভে বলেন, যারা গাজীপুর মহানগরবাসীর উন্নয়ন চায় না তারাই আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। যে বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে সেটি তার নয় বলে দাবি করে তিনি আরো বলেন, এডিট ও কাটপিস করে তার বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে। যারা এগুলো করেছেন তারা কখনোই আমার এবং নগরবাসীর ভালো চায়নি। প্রথম থেকেই তারা বিরোধীতা করে আসছেন। এক প্রশ্নের উত্তরে মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বঙ্গবন্ধুর আমার আদর্শ। তার আদর্শকে বুকে ধারণ করে ছাত্রজীবন থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে আসছি। বঙ্গবন্ধু তথা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধুকে কট‚ক্তি করা আমার দ্বারা কি সম্ভব? তিনি বলেন, মিথ্যা মিথ্যাই থাকবে, ষড়যন্ত্রকারীরা যতো বড় শক্তিশালীই হোক এক সময় তাদের মুখোশ একদিন খুলবে। যারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করছে, যতো বড় ষড়যন্ত্রকারীই হোক তাদের মুখোশ খুলে দেব। জনগণকে সাথে নিয়ে তাদের মোকাবেলা করবো। তারা অনেককেই ভুল বুঝিয়েছে, মিথ্যা আইডি দিয়ে ফেসবুক খুলে আমাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে, আওয়ামী লীগকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
মেয়র বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পুরস্কার পাওয়ায় বোর্ডবাজার এলাকায় আনন্দ মিছিল ও সমাবেশে যাওয়ার পথে আমাদের উপর হামলা করা হয়। মেয়র প্রশ্ন রেখে আরো বলেন, যারা আমাদের উপর হামলা করেছে তারা কেমন আওয়ামী লীগ? যারা আমাদের উপর হামলা করেছে আমি মনে করি এ হামলা শুধু আমাদের উপর নয়, তারা শেখ হাসিনার উপর হামলা করেছে।
উল্লেখ্য, বেশ কয়েক দিন ধরে বঙ্গবন্ধুকে কট‚ক্তির অভিযোগ এনে মহানগরীর বিভিন্ন জায়গায় সিটি মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ চলে আসছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যে বিষয়টি নিয়ে এত আন্দোলন, প্রতিবাদ সভা-সমাবেশ তা কতটুকু সত্য খতিয়ে দেখা দরকার। সত্য হলে আওয়ামী লীগের মত বড় দল সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবে। আর যদি বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্রচারিত বক্তব্য অসত্য হয় তা হলে যারা এই মিথ্যা বক্তব্য প্রচার করে দলের ভেতরে বিভক্তি সৃষ্টি করতে চাইছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত বা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা আরো মনে করছেন, দলের সিনিয়র নেতাদের এখন উচিত বক্তব্যের বিষয়টির সত্যতা বের করা। যেহেতু মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, প্রচারিত বক্তব্যটি তার নয়। কাটপিস ও এডিট করে তার নামে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এর সত্যতা খুঁজে বের করার আগে প্রতিবাদ সমাবেশ কেবলই দলের ভেতর বিভক্তিই সৃষ্টি করবে। কোন সমাধান দিতে পারবে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন