নির্বাচনী সহিংসতায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে যশোর। প্রতিদিন কোন না কোন ইউনিয়নে মারামারি হচ্ছে। শার্শা, ঝিকরগাছা ও বাঘারপাড়ায় পরিস্থিতি অবনতি ঘটেছে। সর্বশেষ বাঘারপাড়ার জহুরপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বদর উদ্দিনসহ ৫ জনের উপর হামলা হয়েছে।
১১ নভেম্বর ঝিকরগাছা ও চৌগাছা উপজেলার ২২ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। আর ২৮ নভেম্বর ভোট হবে শার্শা, মণিরামপুর ও বাঘারপাড়ার ইউনিয়নগুলোতে। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বেশিরভাগ ইউনিয়নে নৌকার বিপক্ষে স্বতন্ত্রভাবে চেয়ারম্যান পদে মাঠে রয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। ফলে দল সমর্থিত ও বিদ্রোহীদের মধ্যে হচ্ছে মারামারি।
গত ২৮ অক্টোবর শিমুলিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জহুরুল হককে মারপিট করে প্রতিপক্ষ। এছাড়া পানিসারা ইউনিয়নে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সেখানে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর নির্বাচনী পথসভা ২৮ অক্টোবর বেজিয়াতলার মালোপাড়ায় চারপাশ ঘিরে ফেলে। এ সভায় হামলাও চালানো হয়। প্রার্ধীর প্রাইভেটকারও ভাঙচুর করা হয়। মোহীনিকাঠি বাজারে তার নির্বাচনী কার্যালয়ে ভাঙচুর ও হামলা চালানো হয়। এ সময় বেশ কয়েকটি নৌকা পুড়িয়ে দেয়া হয়। গঙ্গানন্দপুর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহেদুর রহমান শিপলুর প্রচার মাইক ও ভ্যান ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে, শার্শা উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নে সংঘর্ষ ও বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। ২৩ অক্টোবর গোগা ইউনিয়ের গোগা বাজার ও পুটখালী ইউনিয়নের খলসী বাজারে হামলার ঘটনায় ইউপি সদস্যসহ কমপক্ষে ১০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে গত সোমবার বাঘারপাড়ার জহুরপুর ইউনিয়নে নির্বাচনী সহিংসতায় পাঁচ জন আহত হয়েছেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহতরা জানান, এদিন সকালে বাঘারপাড়ার জহুরপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বদরউদ্দিন মোল্যা নেতাকর্মী নিয়ে বাঘারপাড়া উপজেলা নির্বাচন অফিসে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে জামতলা নামক জায়গায় পৌঁছালে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আসাদুজ্জামান মিন্টুর লোকজন হিসেবে পরিচিত আব্দুর রশিদ, জসিম, মাসুদ, করিমসহ ২০-২৫ জন তাদের উপর হামলা করে। এসময় স্বতন্ত্র পার্থী বদরউদ্দিন মোল্যা, তার ছেলে আশিক ইকবাল, কর্মী মাহাবুব, লোটাসসহ অন্তত পাঁচজন আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
তবে নৌকার প্রার্থী ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক আসাদুজ্জামান মিন্টু বলেছেন, ‘এ ঘটনায় আমার কোন কর্মী বা সমর্থক জড়িত নেই। পরিকল্পনা অনুযায়ী শালিখা উপজেলার জামায়াত-বিএনপির লোকজনকে ব্যবহার করে স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজেই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। যার দোষ চাপাচ্ছে আমার কর্মী-সমর্থকের উপর।’ বাঘারপাড়া থানার ওসি ফিরোজ উদ্দিন বলেন, ঘটনা শুনেছি।
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, বিভিন্ন স্থানে মারামারি হচ্ছে। দলের নেতাকর্মীরাই আহত হচ্ছে এটা আমরা অবহিত আছি। এ বিষয়ে কেন্দ্রকে জানানো হচ্ছে। দ্রুত মিটিং করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন