শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

পৃথিবীভর্তি পাপও তিনি ক্ষমা করেন

মুহাম্মাদ ফজলুল বারী | প্রকাশের সময় : ১৩ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০৭ এএম, ১৩ নভেম্বর, ২০২১

বান্দা নিজের পাপ দেখে নিজেই নিরাশ হয়ে যায়- আমি যত পাপ করেছি, আমার ক্ষমা নেই। বান্দার পাপের সীমা আছে, কিন্তু রহমানুর রাহীমের ক্ষমার কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। একটি হাদীসে কুদসীতে এরই একটা উদাহরণ টেনেছেন আল্লাহ তাআলা। বান্দা! কত গোনাহ করেছ? তোমার গোনাহ দ্বারা পৃথিবী পূর্ণ হয়ে গেছে, আসমান পর্যন্ত পৌঁছে গেছে তোমার পাপরাশি! শিরক থেকে মুক্ত হয়ে, তওবা করে ফিরে আস আমার কাছে, সকল পাপ ক্ষমা করে দিব; কোনো পরোয়া করব না!

(হাদীসে কুদসী) আনাস ইবনে মালেক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তাআলা বলেছেন : বনী আদম! তুমি যতক্ষণ আমাকে ডাকতে থাকবে, আমার কাছে (ক্ষমার) আশা করতে থাকবে, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিব; কোনো পরোয়া করব না।
বনী আদম! তোমার পাপরাশি যদি মেঘমালা পর্যন্ত পৌঁছে যায়, অতপর তুমি আমার কাছে ক্ষমা চাও আমি ক্ষমা করে দিব; কোনো পরোয়া করব না। বনী আদম! তুমি যদি পৃথিবীভর্তি পাপ নিয়ে আমার কাছে আস এবং শিরক থেকে মুক্ত হয়ে আমার সাথে সাক্ষাৎ করো আমি পৃথিবীভর্তি ক্ষমা নিয়ে তোমার সাথে সাক্ষাৎ করব। (জামে তিরমিযী : ৩৫৪০)।

নিরাশ হয়ো না, তিনি সব গোনাহ মাফ করে দেন : পাপের বোঝায় ন্যুব্জ কোনো বান্দা মনে করতে পারে- আমার গোনাহ তো অনেক বেশি; কয়েক পৃথিবী পূর্ণ হয়ে যাবে আমার পাপ দ্বারা। মদ, যিনা, হত্যা, লুণ্ঠন কোনো পাপ নেই যা আমি করিনি; জীবনটাই কেটেছে পাপের মাঝে। এখন আর তওবা করে কী হবে? তাছাড়া আমার মতো পাপীকে কি আল্লাহ ক্ষমা করবেন!

তো এমন পাপীর জন্যও আল্লাহ ক্ষমার ঘোষণা দিলেন- তুমিও নিরাশ হয়ো না আল্লাহর রহমত থেকে; তোমারও সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত- : কিছু মুশরিক নবীজীর কাছে এলো, যারা মানুষ হত্যা করেছে; অগণিত মানুষকে হত্যা করেছে। যারা যিনা করেছে; প্রচুর পরিমাণে যিনা করেছে। তারা বলল, আপনি যা বলেন এবং যেদিকে আহ্বান করেন তা তো খুব সুন্দর ও উত্তম। যদি আপনি আমাদের বলতেন যে, আমাদের অতীত পাপের কাফফারা আছে!

তখন নাযিল হলো : এবং যারা আল্লাহর সাথে অন্য কোনো মাবুদের ইবাদত করে না। এবং আল্লাহ যে প্রাণকে মর্যাদা দান করেছেন তাকে অন্যায়ভাবে বধ করে না এবং ব্যভিচার করে না। (যে ব্যক্তিই এরূপ করবে তাকে তার গোনাহের শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। কিয়ামতের দিন তার শাস্তি বৃদ্ধি করে দ্বিগুণ করা হবে। এবং সে লাঞ্ছিত অবস্থায় তাতে সর্বদা থাকবে।

তবে কেউ তওবা করলে, ঈমান আনলে এবং সৎকর্ম করলে, আল্লাহ এরূপ লোকদের পাপরাশিকে পুণ্য দ্বারা পরিবর্তিত করে দেবেন। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।) (সূরা ফুরকান : ৬৮-৭০)। এবং নাযিল হলো : বলে দাও, হে আমার বান্দারা! যারা নিজেদের ওপর অবিচার করেছ- আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। (আল্লাহ সব পাপ ক্ষমা করে দেবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।) [সূরা যুমার (৩৯) : ৫৩] (সহীহ বুখারী : ৪৮১০)।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন