কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় আনইকে তোয়াক্কা না করেই ফসলি জমিতে ইটাভাটা নির্মাণ করা হচ্ছে। আবার ফসলি জমির মাটি দিয়ে ইট তৈরি করা হচ্ছে। কৃষককে নগদ টাকার লোভ দেখিয়ে সংগ্রহ করছে আবাদি জমির উপরিভাগের (টপসয়েল) মাটি। দালালদের খপ্পরে কতিপয় জমির মালিক লোভে পড়ে ইটভাটায় মাটি বিক্রি করছেন।
এদিকে আইন থাকলেও প্রশাসন তা প্রয়োগ করছে না অজ্ঞাত কারণে। তাই অবাধে চলছে জমির উপরিভাগের মাটি বিক্রি। এতে জমির উর্বরতা শক্তি কমে যাচ্ছে। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইনে ইট তৈরির জন্য কৃষিজমি বা পাহাড় বা টিলা থেকে মাটি কেটে বা সংগ্রহ করে তা ইটের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা নিষেধ থাকলেও অজ্ঞাত কারণে এই আইনের প্রয়োগ না থাকায় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ইট তৈরির জন্য কৃষিজমির মাটি ব্যবহার করা হচ্ছে। আর ধীরে ধীরে ইটভাটার আগুনে পুড়ে যাচ্ছে ফসলি জমির প্রাণ। এতে একদিকে যেমন জমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে ট্রাকটর দিয়ে ইটভাটায় মাটি নেয়ায় নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ কাঁচা-পাকা সড়ক। এলাকার সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
জনবসতি ও ফসলি জমিতে ইটভাটা নির্মাণ করায় এর প্রভাব ফসলের উপর পড়ার সাথে সাথে পড়ছে মানুষের উপরও। উপজেলার ফকিরপাড়া এলাকার নজরুল, খরখড়িয়া জামেরতলের ফেরদৌসি, আঃ জলিল, ব্যাপারী বাজার এলাকার নিত্যসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, ইটভাটায় ইট তৈরির জন্য মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে কৃষিজমি থেকে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চিলমারী উপজেলায় পাঁচটি ও উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষে আটটি ইটভাটা রয়েছে। প্রতিটি ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে আবাদি জমি ও জনবহুল এলাকায়। নিয়মনীতি উপেক্ষা করে এসব ইটভাটার মালিকরা একের পর এক ফসলি জমির প্রাণ ধ্বংস এবং গাছপালা কেটে পরিবেশকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
কৃষকরা জানায়, এক বিঘা জমির উপরিভাগের মাটি ১০-১৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরেজমিন শরিফেরহাট, মাছাবান্দা, বালাবাড়িহাট ও টিএনটি এলাকায় ঘুরে দেখা যায় উক্ত এলাকায় নির্মিত ভাটাগুলো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই জনবসতি ও ২/৩ ফসলি জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে। তবে ভাটার মালিকরা এ ব্যাপারে কথা বলতে নারাজ। কৃষি জমির মাটি ইট ভাটায় ব্যবহার করা নিষিদ্ধ জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুবুর রহমান বলেন, যে গাড়িগুলো মাটি-বালি সরবরাহ করে তাদের অবশ্যই মাটি-বালি ঢেকে নিতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন