শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সওজ’র কারখানা সার্কেলের দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদক

ইনকিলাবে প্রতিবেদন

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২১ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের কারখানা সার্কেলের দুর্নীতি অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ লক্ষ্যে ওই বিভাগের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মোসলেহউদ্দিন আহম্মেদকে তলব করেছে সংস্থাটি। আগামীকাল বুধবার তাকে হাজির হয়ে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে বলা হয়েছে।
দুদক সূত্র জানায়, দুর্নীতি প্রতিরোধের লক্ষ্যে ‘সড়ক ও জনপথ অধিদফতর’ সংক্রান্ত একটি প্রাতিষ্ঠানিক টিম গঠন করে সংস্থাটি। ওই টিম দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে দফতরটিতে দুর্নীতির খাতসমূহ চিহ্নিত করে। এ বিষয়ে ২০১৮ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কাছে প্রতিবেদন জমা দেয়। এতে সওজ’র প্রকৌশলীদের বহু মাত্রিক অনিয়ম-দুর্নীতির কৌশল সম্পর্কেও সবিস্তর উল্লেখ করা হয়। সুপারিশ প্রণয়ন করা হয়েছে অন্তত: ৩ বছর আগে। তা সত্ত্বেও দায়মুক্তি দেয়া হয় দুর্নীতির অভিযোগ সংশ্লিষ্ট একাধিক দুর্নীতিবাজকে। এর মধ্যে ছিল প্রতিষ্ঠানটির কারখানা সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোসলেহউদ্দিন আহম্মেদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ। দুদকের সুপারিশ সম্বলিত প্রতিবেদন সম্পর্কে গত ৯ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন প্রকাশ করে দৈনিক ইনকিলাব। ওই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে দুদক অনুসন্ধান শুরু করে।
সূত্রমতে, ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয়ভাবে মাস্টার রোলে জনবল নিয়োগ, নিয়োগকৃত কর্মচারীদের পরবর্তীতে নিয়মিতকরণের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। এই কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ সরকারের লাখ লাখ টাকা অপচয় করেন। নিয়োগপ্রাপ্ত এসব কর্মচারীদের দিয়ে তিনি ব্যক্তিগত ফুটফরমাস খাটান। কারখানা সার্কেলে চাকরি করার সময় তিনি অন্তত ১৬ জন এম আর কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। তাদের মাসিক বেতন ১৫ হাজার টাকা করে প্রদান করে সরকারের প্রতি মাসে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ টাকা অপচয় করেছেন-মর্মে অভিযোগ রয়েছে মোসলেহউদ্দিনের বিরুদ্ধে। সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রণ ও সংগ্রহ সার্কেল থেকে কারখানা সার্কেল, ঢাকায় বদলি হওয়ার আগমুহূর্তেও তিনজনকে নিয়োগ দেন। এখানেও ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক।
বদলি-বাণিজ্যেও এগিয়ে তিনি। বাসায় কর্মরত ওই দুই বিশ্বস্ত কর্মচারীকে মোসলেহউদ্দিন আহম্মেদ অবৈধভাবে নিয়ম ভেঙে ফেরী প্লানিং সার্কেল থেকে বদলি করে নিয়ে আসেন। এ ছাড়া নিয়ম ভেঙে বার বার এ দুই কর্মকর্তার পদ পদবি পরির্বতন করেন তিনি। বদলি হওয়ার আগেও নিয়ম বহির্ভূতভাবে দু’জন কর্মচারীকে পিয়ন থেকে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে পদোনড়বতি দেন (স্মারক নং-৩৬ তারিখ ১১/০৮/২০২১)।
দুদক এসব তথ্য আমলে নিয়ে গত ১২ ডিসেম্বর তাকে নোটিশ (স্মারক নং-০০.০১.০০০০.৪৯৫.১২.১৮৯.২১) দেয়। উপ-পরিচালক মো. তাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত নোটিশের ‘অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বিষয়’এ লেখা হয়, সড়ক ও জনপথ অধিদফতরের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী থাকাকালে মোসলেহউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, অর্থের বিনিময়ে কর্মচারী নিয়োগ, সীমাহীন ঘুষ, সরকারি টাকা আত্মসাৎ ও বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ’। সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে আপনার বক্তব্য শ্রবণ করা একান্ত প্রয়োজন। তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকৌশলী মোসলেহউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, আমি আজ পর্যন্ত দুদকের কোনো নোটিশ পাইনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন