শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খেলাধুলা

বাংলাদেশের কাছ থেকে পাওয়া সম্মান ভুলবেন না টেইলর

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০৭ এএম

জীবনের শেষ টেস্টটি খেলতে নেমেছেন রস টেইলর। ক্রাইস্টচার্চের হেগলি ওভাল তাই এই কিউই গ্রেটের বিদায়ের মঞ্চ হয়েই সেজেছে। দেশের হয়ে ১১২টি টেস্ট খেলেছেন। দেশের হয়ে টেস্টে সর্বোচ্চ রানও তার। এমন একজন ক্রিকেটার যখন বিদায় নিতে যাচ্ছেন, সেই মুহূর্তটি আবেগ ছড়াবে, এটাই তো স্বাভাবিক। গতকাল হেগলি ওভালে হয়তো জীবনের শেষ টেস্ট ইনিংসটি খেলতেই নামলেন টেইলর। ঠিক সেই মুহূর্তে ক্রাইস্টচার্চের গোটা মাঠ দাঁড়িয়ে তাঁকে সম্মান দিল। সেই সঙ্গে দুই সারিতে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশি ক্রিকেটাররাও বিদায়ী কিংবদন্তিকে সম্মানিত করলেন। আম্পায়াররাও তখন সঙ্গী হন বাংলাদেশ দলের। খেলায় জয়-পরাজয়, উইকেট দেওয়া-নেওয়া ছাপিয়ে হেগলি ওভালে সকল পক্ষই মিলে গেল একই বিন্দুতে।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে টেস্টে টেইলর করেছেন ৭,৬৮৩ রান। এটি দেশটির টেস্ট ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান। দ্বিতীয় স্থানে থাকা কেন উইলিয়ামসনের রান ৭,২৭২; হয়তো আর কিছু দিনের মধ্যেই টেইলরকে ছাপিয়ে যাবেন তিনি। কিন্তু দেশটির ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা হিসেবে এই টেলরের নাম থেকে যাবে চিরদিনের জন্য।
বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজটি যে টেস্টে তার শেষ সিরিজ, এটি আগেই জানিয়েছিলেন তিনি। মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে দলের ত্রাতা হতে পারেননি, দল হেরে গিয়েছিল। কিন্তু এবার ক্রাইস্টচার্চের দ্বিতীয় টেস্টে যেন কিংবদন্তি সতীর্থকে মাথা উঁচু করে বিদায় দেওয়ার সব ব্যবস্থাই করে রেখেছেন নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটাররা। টসে হেরে ব্যাটিং করেও হেগলি ওভালের সবুজ উইকেটে ৫২১ রানের পাহাড় গড়েছে নিউজিল্যান্ড। জবাবে বাংলাদেশকে গুটিয়ে দেওয়া গেছে ১২৬ রানেই। ৩৯৫ রানে এগিয়ে থেকে নিশ্চিত করেই বড় জয়ের পথে আছে তারা। টেলরের মতো ক্রিকেটারকে বিদায় দেওয়ার জন্য এত সুন্দর ব্যবস্থা আর হতে পারে না।
তবে বিদায়ী টেস্টে মাঠে নামার সময় প্রতিপক্ষের কাছ থেকেও যে অভ্যর্থনা পেয়েছেন টেইলর, তাকে তা ছুঁয়ে গেছে প্রবলভাবে। নিউজিল্যান্ডের সফলতম ব্যাটসম্যান বললেন, বাংলাদেশের কাছ থেকে পাওয়া সম্মান তার হৃদয়ে রয়ে যাবে সবসময়। বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হকের সঙ্গে করমর্দন করে টেইলর ক্রিজে যান। সেখানে তার সঙ্গী তখন ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক টম ল্যাথাম। মাঠের ভেতরে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা মুখোমুখি দুই সারিতে দাঁড়িয়ে ‘গার্ড অব অনার’ দেন এই কিউই গ্রেটকে। দিনের খেলা শেষে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে টেইলর কতৃজ্ঞতা জানান বাংলাদেশ দলের প্রতি, ‘ধন্যবাদ বাংলাদেশ, আজকে (গতকাল) ক্রিজে যাওয়ার সময় সত্যিই সম্মানজনক একটি মুহূর্ত উপহার দেওয়ায়। এটা এমনকিছু, যা আমি কখনোই ভুলব না।’
টেলর জীবনের শেষ টেস্ট ইনিংসটি খেলে ফেলেছেন কিনা, সেটি অবশ্য এখনই বলা যাচ্ছে না। টেস্টের প্রথম দিনে নিউজিল্যান্ড ব্যাট করলেও টেইলর নামার সুযোগ পাননি। দ্বিতীয় দিন সকালে ডেভন কনওয়ে রান আউট হওয়ার পর ব্যাট হাতে ক্রিজে যান ৩৭ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। শেষ টেস্টে অবশ্য বড় কিছু করতে পারেননি টেইলর। আউট হয়েছেন ২৮ রানে। ম্যাচের যা গতিপ্রকৃতি, তাতে আরেকটি ইনিংস পাওয়ার সম্ভাবনা তার সামান্যই। তবে আজ টেস্টের তৃতীয় দিন যদি নিউজিল্যান্ড বাংলাদেশকে ফলোঅন করায়, তাহলে হয়তো এরই মধ্যে শেষ টেস্ট ইনিংসটি খেলে ফেলেছেন তিনি। অধিনায়ক টম ল্যাথাম এখন চাইতেই পারেন, টেইলর টেস্টে নিজের শেষটা করবেন দারুণ একটা ইনিংস দিয়ে। তিনি তা চান কিনা, সেটি অবশ্য জানা যাবে আজই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন