আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও স্বতন্ত্র (হাতি মার্কা) মেয়র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার নির্বাচনকে সামনে রেখে গতকাল প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করেছেন। স্বতন্ত্র (হাতি মার্কা) মেয়র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার বলেছেন, পুলিশ নৌকার পক্ষের কোনো লোকজনকে গ্রেফতার করেনি, তাদের বাড়িতে যায়নি। আমার সিদ্ধিরগঞ্জের প্রধান সমন্বয়ককে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমার লোকজনের বাড়ি বাড়ি পুলিশ যাচ্ছে। এটা দিনের আলোর মতো পরিষ্কার। তারপরেও যদি তিনি বলেন আমার লোকজনকে হয়রানি করা হচ্ছে না সেটা আপনারাই বিবেচনা করে দেখবেন। শহরের খানপুর এলাকায় গতকাল বুধবার নির্বাচনী পথসভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার এ কথা বলেন।
তৈমূর বলেন, যারা নারায়ণগঞ্জের সচেতন জনগণ যারা শহরকে নিয়ে ভাবেন। এই আঠারো বছরের ক্ষোভ থেকে যারা অবসান চান তারা সকলে আন্তরিকভাবেই এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। আমি আশা করবো এই নির্বাচন কমিশন জনগণের আশা আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে কাজ করার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিবেন। নির্বাচনে যেন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকে। জনগণ যেন ভোট দিতে পারে এবং কোনো ইঞ্জিনিয়ারিং যেন না হয় সেজন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করি।
তিনি বলেন, জনগণ দলমত নির্বিশেষে আমার এই প্রচারণায় অংশগ্রহণ করছে। পুলিশ প্রশাসন আমাদের নেতাকর্মীদের ধড়-পাকড় করছে। তারা ইতোমধ্যে অনেককেই গ্রেফতার করেছে। অনেকে বাড়ি থেকে পলাতক অবস্থায় আছে। পলাতক থেকেই তারা আমার প্রচারণায় অংশ নিচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, আমি তিন সেট করে পোলিং এজেন্ট ঠিক করে রেখেছি। একজনকে বের করে দেয়া হলে আরেকজন কাজ করবে। শুধু তাই নয়, কেন্দ্র রক্ষার জন্য আলাদা কমিটি করা হয়েছে। তারা সেখানে কেন্দ্র রক্ষা করবে। আমাদের চিফ এজেন্ট এটিএম কামাল নির্বাচন কমিশনের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছেন। কেন্দ্র যেন দখল না হয় সেজন্য জনগণ পাহারায় থাকবে।
এদিকে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, আপনারা দেখেছেন ঋষিপাড়ায় আমরা তিনটা বিল্ডিং করছি দশতলা করে। অনেকেই তো জানেন ঋষিপাড়া বস্তি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের আট একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত। আমিতো সেই বস্তি তুলে দেইনি। আমি আঠারো বছর যাবৎ আপনাদের শহরে। তাহলে আমার বিরুদ্ধে নির্বাচন আসলেই যারা মিথ্যা কথা বলে তাদেরকে কখনও বরদাস্ত করবেন না। সকলে নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন। গতকাল বুধবার সকালে নগরীর ১৫ নং ওয়ার্ডে ভোটারদের উদ্দেশ্যে একথা বলেন তিনি।
আইভী বলেন, আমার আসলে বলার কিছু নেই। আমি আঠারো বছর ধরে আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি। আমি কী কখনও মিথ্যা কথা বলেছি, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি আমি কী দখলবাজি করেছি? সকল ধর্মের জন্য সমানভাবে কাজ করেছি। এই যে আপনাদের কাছে এসে মিথ্যা কথা বলছে যে এই র্যালি বাগান আমি তুলে দেব এটা কী সঠিক? আমার বাবা আপনাদের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন। আমার স্কুল জীবন এখানে কেটেছে। আমরা এখানেই থাকতাম।
তিনি আরও বলেন, আমি শেখ হাসিনার প্রার্থী হয়ে আপনার ভোটে পাশ করবো। আমার ওপর বিশ্বাস রাখবেন। আমি জিমখানা বস্তি তুলেছি কারণ সেখানে সরকারিভাবে পার্ক করার কথা ছিল। সেখানে কেউ স্থায়ীভাবে থাকত না। আপনারা যারা দীর্ঘদিন যাবৎ র্যালি বাগানে থাকছেন হিন্দু মুসলমান মিলেমিশে আমি তাদেরকে অনুরোধ করবো আপনাদের জায়গার যদি সমস্যা না থাকে তাহলে নিম্নআয়ের মানুষদের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে প্রকল্প গ্রহণ করেছেন আমি চেষ্টা করবো নেত্রীর সঙ্গে কথা বলে আপনাদের এখানে সুব্যবস্থা করার জন্য।
হাতপাখা প্রতীকের মেয়র প্রার্থীর ২৭ দফা নির্বাচনী ইশতেহার : মেয়র পদে ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী মুফতী মাসুম বিল্লাহ তার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন। এতে তিনি ২৭ দফা কর্মসূচি সম্বলিত ইশতেহার নগরবাসীর উদ্দেশ্যে তুলে ধরেন। গতকাল দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ইশতেহার ঘোষণা করেন তিনি। তাকে হাতপাখা প্রতীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে ইশতেহারে বর্ণিত কর্মসূচিসমূহ বাস্তবায়নের মাধ্যমে এবং সকলের সহযোগিতা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনকে একটি উন্নত ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন মানবিক শান্তির নগরী হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত করবেন বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের লাউঞ্জে ইশতেহার ঘোষণাকালে আরো উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, নাসিকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা দ্বীন ইসলাম, জেলা ইসলামী আন্দোলনের সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর কবির, মহানগর কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ নূর হোসেন, সেক্রেটারী সুলতান মাহমুদ, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের মহানগরের সভাপতি এম শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন