কেউ জয়ে হ্যাটট্রিক করে আবার কেহ পরাাজয়ে। এবার নাসিক নিবার্চনে সিদ্ধিরগঞ্জে জয়ের যেমন কাউন্সিলর পদে হ্যাটট্রিক করেছেন পরাজয়েও হ্যাটট্রিক করেছেন অনেকে। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচন হয় ২০১১ সালের ৩০ অক্টোবর এবং দ্বিতীয় নির্বাচন হয় ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর। এ দুই নির্বাচনে চার কাউন্সিলরই বড় ব্যবধানে জয়লাভ করেন। এবারের নির্বাচনেও তার ব্যতিক্রম ঘটে নি।
বিজয়ে হ্যাটট্রিক করেছেন ৫ জন কাউন্সিলর। এদের মধ্যে ৩জন পুরুষ এবং ২জন সংরক্ষিত মহিলা।হ্যাটট্রিক বিজয়ী এই ৫ কাউন্সিলরের জনপ্রিয়তা আকাশ ছোয়া। প্রতিটি নির্বাচনে সাধারণ এরা নিকটতম প্রতিদ্বন্ধীর চেয়ে দ্বিগুন ভোট বেশি পেয়ে বিজয়ী হয়ে আসছেন। ঠিক তেমনি পরাজয়ের হ্যাটট্রিক করেছেন ১২জন কাউন্সিলর প্রার্থী। যাদের মধ্যে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৮ জন ও সংরক্ষিত আসনে ৪ জন। প্রতি নির্বাচনে পরাজিতরা তাদের অধিকাংশের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। নিবার্চনী গন-সংযোগে পরাজিত প্রার্থীরা বড় বড় মিছিল করে নিজের জনপ্রিয়তা প্রমাণ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু মিছিলে বহিরাগত লোক আর শিশু কিশোর দেখে লোকজন হাসা হাসি করলেও পরাজিতরা ওয়ার্ডবাসীর মনের ইচ্ছা বুঝতে পারেননি। যার উত্তর পরাজিতরা পেয়েছেন ১৬ জানুয়ারি নির্বাচনি ফলাফল ঘোষনার পর। তারা বিপুল ভোটে বিজয়ী প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়।
হ্যাটট্রিক বিজয়ী কাউন্সিলররা হলেন, নাসিক ৩নং ওয়ার্ডের শাহজালাল বাদল, নাসিক ৮ নং ওয়ার্ডের রুহুল আমিন মোল্লা ও ৯নং ওয়ার্ডের ইস্রাফিল প্রধান।
হ্যাটট্রিক কাউন্সিলদের সাথে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ভোটের ব্যবধানে: নাসিক ৩ নং ওয়ার্ডে শাহজালাল বাদল ছয় হাজার ৩২০ ভোট পেয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রার্থী তোফায়েল হোসেন পেয়েছেন দুই হাজার ৬০১ ভোট।
নাসিক ৮ নং ওয়ার্ডে রুহুল আমিন মোল্লা সাত হাজার ৭১৮ ভোট পেয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রার্থী মহসিন ভুইয়া পেয়েছেন চার হাজার ৫১৮ ভোট।
নাসিক ৯ নং ওয়ার্ডে ইসরাফিল প্রধান পাঁচ হাজার ৩০৩ ভোট পেয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রার্থী বিল্লাল হোসেন পেয়েছেন চার হাজার ২৮০ ভোট। এবার নিবার্চনে সিদ্ধিরগঞ্জে বিজয়ী পুরুষ কাউন্সিলরদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী ভোট পেয়ে নিবার্চিত হয়েছেন জনতার কাউন্সিলর রুহুল আমীন মোল্লা।
সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলররাও তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের থেকে কয়েকগুন বেশী ভোট পেয়ে নিবার্চিত হয়েছেন। এরা হলো হ্যাটট্রিক একমাত্র সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ১,২,৩ নং ওয়ার্ডের মাকসুদা মোজাফ্ফর ও ১০,১১, ১২ ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মিনুয়ারা বেগম মিনু।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তার স্বাক্ষরিত বার্তাশিট থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
এদিকে হ্যাটট্রিক বিজয়ী কাউন্সিলরদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান নিজ নিজ ওয়ার্ডবাসী। বিজয়ী কাউন্সিলরগণ ওয়ার্ডবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সাথে সাথে যারা পরাজয়ে হ্যাটট্রিক করেছেন তাদেরকে লজ্জা থাকলে আর নিবার্চন না করার জন্য বিজয়ীরা আহবান জানিয়েছেন। নাসিক নির্বাচনে পরাজয়ের হ্যাট্রিক করা কাউন্সিলর প্রার্থীরা হলেন, নাসিক ২ নং ওয়ার্ডের সোহরাব হোসেন, ইসমাইল, ৩ নং ওয়ার্ডের তোফায়েল হোসেন, আলমগীর হোসেন, ৪’নং ওয়ার্ডের নজরুল ইসলাম, ৫ নং ওয়ার্ডের আনিসুর রহমান, ৮ নং ওয়ার্ডের আ.লীগ নেতা মহসিন ভূঁইয়া ও সাগর প্রধান। সংরক্ষিত নারী আসনের পরাজয়ের হ্যাটট্রিক করেন ১,২,৩ নং ওয়ার্ডে আশুরা বেগম, শামীম আরা লাভলী, নাজমা আক্তার নাজু ও ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডে সুমি বেগম। এদের প্রতি প্রতি নির্বাচনে অনেকই জামানত হারিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০১১ ও ২০১৬ সালের নির্বাচনে পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ হলেও এবারই প্রথম এ নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে ২৭টি ওয়ার্ডের ১৯২টি কেন্দ্রের এক হাজার ৩৩৩টি বুথে একযোগে ইভিএমে ভোট হয়। যন্ত্রে ভোট দেওয়ার বিষয়টি অধিকাংশের জন্য ছিল নতুন এক অভিজ্ঞতা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন