ঢাকাই সিনেমা ও টেলিভিশন নাটকের অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৭ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে কেরানীগঞ্জের হযরতপুর ব্রিজের কাছে তার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে তোলপাড়।
ইতোমধ্যে এ ঘটনায় তার স্বামী সাখাওয়াত আমিন নোবেল ও নোবেলের গাড়ির চালক ফরহাদকে আটক করেছে র্যাব-১০।
এদিকে এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু জায়েদ খান জানিয়েছেন, এই হত্যাকাণ্ডের সাথে তার কোন ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। পাশাপাশি আসন্ন শিল্পী সমিতির নির্বাচনকে সামনে রেখে তাকে বিতর্কিত করতেই তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে বলে দাবি করেন এই অভিনেতা।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির বর্তমান কমিটির আগের কমিটির সিদ্ধান্তে চিত্রনায়িকা শিমুসহ ১৮৪ জনকে সমিতির সদস্যপদ থেকে বাদ দেয়া হয়। ওই কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন জায়েদ খান। শিমু এই ইস্যুতে আন্দোলনে সক্রিয় ভুমিকায় ছিলেন।
শিমুর হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে চিত্রনায়ক ওমর সানি ফেইসবুকে লিখেছেন, ‘শিমু অনেক ছবিতে অভিনয় করেছে, আমাদের বরিশালের মেয়ে, তাকে হত্যা করা হয়েছে, রাষ্ট্রের কাছে এই হত্যার বিচার চাই, প্রকৃত খুনিকে তারাই বের করবে। কিন্তু এর আগে কারো নাম বলা দণ্ডনীয় অপরাধ, আল্লাহ তাকে জান্নাত নসিব করুন।’
সাংবাদিক রুবিনা ইয়াসমিন রুবিনা লিখেছেন, ‘চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমু। তিনি শিল্পী সমিতির বাদপড়া সদস্যদের পক্ষে আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী ছিলেন। সরব ছিলেন জায়েদ খানের বিরুদ্ধেও। ছিলো পারিবারিক নানা জটিলতাও। হঠাৎ তাঁর মৃত্যু হয় রহস্যজনক ভাবে! পাওয়া যায় বস্তাবন্দি লাশ!’
রবিউল ইসলাম রুবেলের প্রশ্ন, ‘রাইমা ইসলাম আপু নাই আমাদের মাঝে! এটা কি আক্রোশের শিকার নাকি পারিবারিক কলহ?’
জনপ্রিয় অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান লিখেছেন, ‘নায়িকা শিমু আমার সাথে একাধিক নাটকে কাজ করেছে । তার মৃত্যুতে আমি গভীর শোক প্রকাশ করি। আল্লাহ পাক তাকে বেহেস্ত নসিব করুক। কালকে রাতে ঘুমানোর আগে এই নিউজটা দেখে যতটা দুঃখ পেয়েছি। তার চেয়ে বেশি দুঃখ পেয়েছি, হত্যাকাণ্ডের সাথে আমার বন্ধু জায়েদ খানের নামটি আসাতে। কিন্তু সে কোনোভাবেই জড়িত নয়। তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। দিনশেষে আমরা শিল্পীরা ভালো মানুষ,এটা দাবি করি। কিন্তু শিল্পী নামক কিছু অমানুষ আমাদের মাঝে ঢুকে পড়েছে। যারা নিজেদের স্বার্থের জন্য শিল্পীকে শিল্পী মনে করে না, মিথ্যাকে সত্য বানানোর চেষ্টা করে এদের বিচার হওয়া দরকার। আমি এর তীব্র নিন্দা জানাই। বিশেষ দ্রষ্টব্য : আমাদের নাটকের শিল্পী সংঘে এমন কিছু অমানুষ নামক শিল্পী আছে। এদেরকে বয়কট করা দরকার নির্বাচনের মাধ্যমে। অবশেষে শিল্পীর জয় হোক এবং সকল শিল্পীরাই ভালো থাকুক।’
চিত্রনায়ক সাইফ খান লিখেছেন, ‘রাইমা ইসলাম শিমু আমাদের চলচ্চিত্রে বহু ছবির নায়িকা। তাকে দুর্বৃত্তরা হত্যা করে কেরানী গঞ্জ,আলীপুর গ্রামের ব্রীজের পাশে ফেলে রেখেছিলো। এই নির্মম হত্যাকান্ডের সঠিক বিচার দাবি করছি | অপরাধী চিহ্নত হওয়ার আগে কাউকে মনগড়া ভাবে এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়ানোও অপরাধ। সব কিছু নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক না, এমনি সিনেমা শিল্পের ভাবমূর্তি তলানিতে।’
দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে অভিনেতা রেদওয়ান রাশেদ প্রহর লিখেছেন, ‘শোক সংবাদ! চলচ্চিত্র চিত্রনায়িকা রাইমা ইসলাম শিমুর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার। উল্লেখ্য, তিনি শিল্পী সমিতির বাদপড়া সদস্যদের পক্ষে আন্দোলনের অন্যতম নেত্রী ছিলেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন। এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।’
এমডি আশরাফুল ইসলাম আসিফ মনে করেন, ‘যারা বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তাদের বিরুদ্ধে দুই প্যানেলের ব্যবস্থা নেয়া উচিত। এদের কারণেই এখন মানুষ হাসাহাসি করে চলচ্চিত্রকে নিয়ে।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন