শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

এক ইনিংসে কীর্তিময় মাহমুদউল্লাহ

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ এএম

ব্যাটে রান ছিল, কার্যকর ইনিংসও এসেছে। কিন্তু মাহমুদউল্লাহর কাছ থেকেন যেমন ইনিংস প্রত্যাশিত, এবারের বিপিএলে তেমন ইনিংস দেখা যাচ্ছিল না। বারবার ফিরছিলেন কাজ অসমাপ্ত রেখে। অবশেষে পাওয়া গেল সেই মাহমুদউল্লাহকে, যিনি দলের হাল ধরেন, ইনিংস গড়েন এবং কাজ শেষ করে ফেরেন!
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে ব্যাট হাতে মিনিস্টার ঢাকাকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন মাহমুদউল্লাহ। এবারের বিপিএলে পেলেন প্রথম ফিফটির দেখা। পরে সেটিকে রূপ দিলেন বিপিএলে নিজের সর্বোচ্চ ইনিংসে। স্পর্শ করলেন টি-টোয়েন্টিতে নিজের আগের সেরা ইনিংসও। গতকাল চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে ৩ চার ও ৪ ছক্কায় ৪১ বলে ৭০ রানের ইনিংস খেলেন মাহমুদউল্লাহ।
২৭২ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে তার আগের সেরাও ছিল অপরাজিত ৭০। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টির ফাইনালে জেমকন খুলনার হয়ে ইনিংসটি খেলেছিলেন তিনি গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের বিপক্ষে। বিপিএলে আগের সেরা ছিল খুলনা টাইটানসের হয়ে ৬২। এবার মিনিস্টার ঢাকার হয়ে ৭০ রানের ইনিংসটি খেলার পথে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে বিপিএলে দুই হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন মাহমুদউল্লাহ। ৭৬ ম্যাচ খেলে এ রান করলেন তিনি। একই সঙ্গে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে পাঁচ হাজার রান পূরণ হয় তার। সবমিলিয়ে ২৭২ ম্যাচে ৫০৪৫ রান এখন মাহমুদউল্লাহর। এর আগে দেশের হয়ে পাঁচ হাজার রান পেরিয়েছেন সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল। বিপিএলে অবশ্য সাকিবের চেয়ে বেশি রান মাহমুদউল্লাহর। তার সামনে রয়েছেন মুশফিকুর রহিম ও তামিম। মুশফিকের সংগ্রহ ২৪০৮ রান। আর সবার উপরে থাকা তামিমের সংগ্রহ ২৪৮৩ রান। এদিন ইনিংসটি জুড়ে ছিল তার সহজাত ছাপ, সেরা ছন্দে থাকলে যেমন খেলেন। সবশেষ ম্যাচে তাকে ব্যাটিংয়ে নামতে হয়নি। তামিম ইকবালের সেঞ্চুরি ও মোহাম্মদ শাহজাদের ফিফটিতেই বড় রান তাড়া করে ফেলে ঢাকা। তাই চট্টগ্রামের ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে প্রথম সুযোগ পেয়েই মাহমুদউল্লাহ কাজে লাগালেন দারুণভাবে।
মিরপুরে ব্যাটসম্যানদের কঠিন পরীক্ষায় ফেলা উইকেটে চার ম্যাচের দুটিতেই দলের সর্বোচ্চ রান মাহমুদউল্লাহর। প্রথম ম্যাচে পরিস্থিতির দাবি মিটিয়েই ২০ বলে ৩৯ রান করেন। তবে শেষ পর্যন্ত থাকতে পারেননি ক্রিজে। পরের ম্যাচে রান তাড়ায় আউট হয়ে যা ৫ রানেই। তৃতীয় ম্যাচে পরিস্থিতির দাবি মিটিয়ে ৪৭ বলে ৪৭ রানের ইনিংস খেলেন। তবে দলকে জয়ের কাছে নিয়ে গিয়ে আউট হয়ে যান। পরের ম্যাচে উইকেটে থিতু হওয়ার পর দলের যখন চাওয়া বড় ইনিংস, তিনি আউট হয়ে ফেরেন ৩৩ রানে।
এবারের ইনিংসে পূরণ করলেন যেন সবটুকু প্রত্যাশা। টানা তিন ম্যাচ জিতে উড়তে থাকা কুমিল্লার বিপক্ষে অষ্টম ওভারে ক্রিজে আসেন মাহমুদউল্লাহ। দল ততক্ষণে বেশ ভালো ভিত পেয়ে গেছে। প্রথম ৬ বলে করেন ৩ রান। বিপিএল জুড়ে দারুণ বোলিং করা অফ স্পিনার নাহিদুল ইসলামকে চোখধাঁধানো শটে ছক্কায় উড়িয়ে দেখা পান প্রথম বাউন্ডারির। এরপর কেবল এগিয়ে চলা। এক-দুই করে নিয়ে সচল রাখের রানের চাকা। চতুর্দশ ওভারে শাফল করে পেসার শহিদুল ইসলামকে ছক্কা মেরে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে স্পর্শ করেন পাঁচ হাজার রান।
অন্য প্রান্তে চার-ছক্কা মারছিলেন ব্যাটসম্যানরা, আউটও হচ্ছিলেন। কিন্তু অবিচল ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। ১৬ ওভার শেষে ২৭ বলে তার রান ছিল ৩৫। পরের চার ওভারে সেটা হয় দ্বিগুণ। সপ্তদশ ওভারে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে মুস্তাফিজুর রহমানের মাথার ওপর দিয়ে মারেন চার। পরে করিম জানাতের কোমড়ের চেয়ে বেশি উচ্চতার ফুলটসকেও পাঠান বাউন্ডারিতে। জাতীয় দলের সতীর্থ মুস্তাফিজকে কাভার দিয়ে চার মেরে স্পর্শ করেন ক্যারিয়ারের ১৯তম ফিফটি, স্রেফ ৩৪ বলে। ঝড়ের সবচেয়ে বড় ঝাপটা যেন শেষ ওভারের জন্য রেখে দিয়েছিলেন মাহমুদউল্লাহ। করিমের শর্ট অব লেংথ ডেলিভারি উড়িয়ে মারেন সীমানার বাইরে। কোমর উচ্চতার ফুল টস পেয়ে কাজ লাগান আরেকটি ছক্কা। ইনিংসের শেষ বলে ২ রান নিয়ে ছুঁয়ে ফেলেন নিজের আগের সেরা। শেষ ওভার থেকে আসে ২০ রান, শেষ ৫ ওভারে ৬৪। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা মিনিস্টার ঢাকা পায় ১৮১ রানের পুঁজি।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন