বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

কুষ্টিয়ায় অনুকূল আবহাওয়া ও খরচ কম হওয়ায় এ বছর ১৩ হাজার ৪৬৪ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ

বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

কুষ্টিয়া থেকে স্টাফ রির্পোটার | প্রকাশের সময় : ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ২:৩৪ পিএম

চারার পর্যাপ্ততা, সময়মতো প্রণোদনা, অনুকূল আবহাওয়া ও খরচ কম হওয়ায় এ বছর কুষ্টিয়া জেলায় ১৩ হাজার ৪৬৪ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের চারা রোপণ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১২ হাজার ৯১০ হেক্টর জমি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫৫৪ হেক্টর বেশি চাষ করা হয়েছে। এখন ভালো ফলনের আশায় খেতে পেঁয়াজের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটছে চাষিদের। জেলায় পেঁয়াজ চাষে বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ।

জেলার দৌলতপুর, মিরপুর, কুমারখালী ও সদর উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, চাষীরা পেঁয়াজ রোপণ শেষ করে এখন পেঁয়াজের ভালো ফলন করে ঘরে তোলার জন্য পেঁয়াজের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন জেলার চাষিরা। কাকডাকা ভোর থেকে উঠে দিনব্যাপী পেঁয়াজ ক্ষেত আঁকড়ানো, নিড়ানো, সার ও স্প্রে দেয়ার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুষ্টিয়া সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে পেঁয়াজ রোপনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১২ হাজার ৯১০ হেক্টর জমি, সেখানে অর্জিত হয়েছে ১৩ হাজার ৪৬৪ হেক্টর জমি। এরমধ্যে পেঁয়াজ মুলকাটা ৩ হাজার ২৯৯ হেক্টর ও চারা রোপণ পেঁয়াজ ১০ হাজার ১৬৫ হেক্টর। চলতি মৌসুমে কুষ্টিয়া জেলায় লালতীল কিং, মেটাল কিং, তাহেরপুরী, বারী পেঁয়াজ-১ ও কিংসুপার জাতের পেঁয়াজ কৃষকেরা রোপণ করেছে।

কুমারখালী উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের জোত মোড়া গ্রামের কৃষক আমিরুল ইসলাম তিন বিঘা জমিতে চারা রোপণ করেছেন। তিনি বলেন, বর্তমানে পেঁয়াজ খেত নিংড়ানো, সার বোনা ও স্প্রে করার কাজ চলছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে গত বছরের চেয়ে অর্ধেক খরচে পেঁয়াজ ঘরে তুলতে পারব। ভালো লাভবান হতে পারবো।

কয়েকজন পেঁয়াজ চাষি বলেন, কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে পরিচর্যা করছি। গাছ ভালো হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া পেলে ভালো ফলন হবে। এবার সময়মতো বীজ পেয়েছি কৃষি অফিস থেকে। তাদের দিকনির্দেশনায় চারা ভালো হয়েছিল। সময়মতো চারা রোপণ করেছি।

দৌলতপুরের কৃষক সাইদুর রহমান দেড় বিঘা জমিতে পেঁয়াজের চারা রোপণ করেছেন। তিনি বলেন, এবছরে পেঁয়াজের চারার দাম কম। গতবারের চেয়ে এবার চাষে খরচ কমেছে। এবার বিঘাপ্রতি ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। নিয়মিত পরিচর্যা করছি। আশা করছি, ফলন ভালো হবে। কৃষকরা পেঁয়াজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

জেলার চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পেঁয়াজের প্রতিকেজি চারা গত বছর ১৫০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হলেও এবার বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। প্রতিকেজি পেঁয়াজের বীজ গত বছর খোলা ৬ থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হলেও এ বছর তা কমে বিক্রি হয়েছে ৩ থেকে ৬ হাজার টাকায়। এবার বিঘাপ্রতি পেঁয়াজ উৎপাদনে বীজ, চারা, সার, পরিচর্যাসহ খরচ হবে ২৮ থেকে ৩২ হাজার টাকা। এ বছর লালতীল কিং এবং মেটাল কিং জাতীয় চারা বেশি রোপণ করা হয়েছে। এতে বিঘায় ৪৫ থেকে ৬০ মণ পেঁয়াজ উৎপন্ন হয়। যার বাজারমূল্য ৪০ থেকে প্রায় ৮০ হাজার টাকা হতে পারে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কুষ্টিয়া জেলার উপপরিচালক সুশান্ত কুমার প্রমানিক বলেন, কৃষকরা এখন পেঁয়াজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কৃষকদের অর্থকারী ফসলের মধ্যে অন্যতম পেঁয়াজ। এ অঞ্চলের মাটি পেঁয়াজ চাষে উপযোগী। সব সময় কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে আসছেন কৃষি কর্মকর্তারা। গতবারের চেয়ে খরচ কম, অনুকূল আবহাওয়া ও সময়মতো প্রণোদনার বীজ ও সার দেওয়া এবং লাভজনক হওয়ায় পেঁয়াজ চাষে আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এ বছর কুষ্টিয়া জেলায় ১৩ হাজার ৪৬৪ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের চারা রোপণ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১২ হাজার ৯১০ হেক্টর জমি। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫৫৪ হেক্টর বেশি চাষ করা হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন