মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক নারী সাহসিকা (ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ) পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১৪ মার্চ (সোমবার) ভার্চুয়াল এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুরস্কারপ্রাপ্তদের সম্মান জানাবে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসে (৮ মার্চ) এ বছর ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ (আইডব্লিউওসি) পুরস্কারপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ১১ নারী এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন। বাংলাদেশে পরিবেশ রক্ষা, প্রান্তিক মানুষের মর্যাদা ও অধিকার রক্ষায় অবদানের জন্য রিজওয়ানা এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন। এ বিষয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, আমি খুব খুশি। কারণ একটা বৈরি পরিবেশে থেকে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে লড়াই করে দরিদ্রদের জন্য পরিবেশ রক্ষার কাজ অনেকটাই কঠিন। অনেক চেষ্টার পরও মন খারাপ হয়ে যায়। পরিবেশ পরিস্থিতিতে ‘ডি মোরালাইজড’ হয়ে পড়ার মতো অবস্থা হয়। তিনি বলেন, কিন্তু কেউ না কেউ এই কাজ দেখে। এ পুরস্কার খারাপ মনকে ভালো করে দেয়। দায়িত্ববোধ বাড়িয়ে দিয়েছে এই সম্মাননা। হতাশার মধ্যেও এ পুরস্কার ইতিবাচক অনুভূতি যোগাচ্ছে।
আগামী ১৪ মার্চ পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন উপস্থিত থাকবেন। মার্কিন ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন পুরস্কারপ্রাপ্ত নারীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেবেন বলে জানা গেছে। এ বছর ১২ জন সাহসী নারী এ পুরস্কার পাচ্ছেন। তার মধ্যে বাংলাদেশের সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ছাড়াও আছেন ব্রাজিলের সিমোন সিবিলিও দো নাসিমেন্টো, মিয়ানমারের ই থিনজার মং, কলম্বিয়ার জোসেফিনা ক্লিঞ্জার জোনিগা, ইরাকের তাইফ সামি মোহাম্মদ, লাইবেরিয়ার ফ্যাসিয়া বোয়েনোহ হ্যারিস, লিবিয়ার নাজলা মাঙ্গোশ, মলদোভার ডোইনা ঘেরমান, নেপালের ভূমিকা শ্রেষ্ঠা, রোমানিয়ার কারমেন ঘেওর্গে, দক্ষিণ আফ্রিকার রোয়েগচান্দা পাস্কো ও ভিয়েতনামের ফুমওয়ান ট্রাং।
মার্কিন ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের ওয়েবসাইটে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান সম্পর্কে লেখা হয়েছে, রিজওয়ানা হাসান একজন বাংলাদেশি আইনজীবী। তিনি পরিবেশ এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মর্যাদা ও অধিকার রক্ষায় সাহসী নেতৃত্ব দেখিয়েছেন। গত ২০ বছর ধরে যুগান্তকারী আইনি মামলার মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের উন্নয়নের গতিশীলতা পরিবর্তন করে পরিবেশগত ন্যায়বিচারের ওপর জনকেন্দ্রিক দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী হিসেবে বন উজাড়, দূষণ, অনিয়ন্ত্রিত জাহাজ ভাঙা এবং অবৈধ ভূমি উন্নয়নের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ মামলা লড়েছেন এবং জিতেছেন। প্রসঙ্গত সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ২০০৯ সালে টাইম ম্যাগাজিনের বিশ্বের ৪০ জন এনভায়রমেন্টার হিরোদের একজন হিসেবে মনোনীত হন। ২০১২ সালে পান র্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন