শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

কোরআন মানবজাতির রূহ

মাওলানা মুহাম্মাদ তাওহীদুল ইসলাম তায়্যিব | প্রকাশের সময় : ২২ মার্চ, ২০২২, ১২:০০ এএম

মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নৈকট্য লাভের সহজ ও সুন্দরতম মাধ্যম হলো কোরআন মাজীদ। অধিক পরিমাণে কোরআন তিলাওয়াত করা, অন্যের তিলাওয়াত শোনা, আয়াতের অর্থ, ভাব ও মর্ম নিয়ে চিন্তা ফিকির করা- এসবই বান্দাকে আল্লাহর নৈকট্য লাভে সহায়তা করে। আল্লাহর পরিচয় লাভ ও তাঁর প্রতি আপনত্ব অনুভবে সাহায্য করে। কারণ, কোরআন আল্লাহর কালাম। তাঁর পক্ষ থেকে বান্দার প্রতি প্রেরিত বার্তা।

যেখানে তিনি পরম মমতায় বান্দাকে সম্বোধন করেছেন। উপদেশ দিয়েছেন। কল্যাণের পথ নির্দেশ করেছেন। মন্দ ও ক্ষতিকর বিষয়ে সতর্ক করেছেন। নবী ও রাসূলদের গল্প বলেছেন। সাহাবায়ে কেরামের ঘটনা উল্লেখ করেছেন। পূর্বের বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর কর্ম-পরিণতি ও উত্থান-পতনের ইতিবৃত্ত জানিয়েছেন। সর্বোপরি ইহ-পরকালীন জীবনে সফলতা লাভের পথ ও পন্থা বলে দিয়েছেন। এসব এত সহজ ও সাবলীলভাবে পেশ করেছেন যে, সবাই বুঝতে পারে। এত চমৎকার শব্দ, বাক্যশৈলী ব্যবহার করেছেন যে, সবাই তার মাধুর্য অনুভব করতে পারে।

কোরআনের বহু জায়গায় আল্লাহ তাআলা নিজের পরিচয় দিয়েছেন। এরপর বলেছেন, হে বান্দা, ইনি ‘তোমার’ রব। অর্থাৎ এই মহামহিম অত্যুচ্চ গুণাবলির অধিকারী সত্তার সঙ্গে তোমার সম্পর্ক বড় গভীর ও মজবুত। তিনি তোমার স্রষ্টা। তোমার প্রতিপালক। তোমার অতি আপন।

এভাবে বান্দাকে তার আসল পরিচয়ের সূত্র ধরিয়ে দিয়েছেন। জানিয়ে দিয়েছেন তার মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্বের রহস্য। এরপর নানাভাবে তাকে উৎসাহিত করেছেন কোরআন পড়তে। উদ্বুদ্ধ করেছেন কোরআনের বিভিন্ন আয়াত নিয়ে ভাবতে। কোরআনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতে। কোরআনকে বুকে ধারণ করে লাভবান হতে।
যেমন সূরা শূরার এক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন : এভাবেই আমি ওহীর মাধ্যমে আপনার প্রতি নাযিল করেছি এক ‘রূহ’ আমার নির্দেশে। এর আগে আপনি জানতেন না- কিতাব কী, ঈমান কী। কিন্তু আমি একে বানিয়েছি এক নূর, যার মাধ্যমে আমি আমার বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে চাই হেদায়েত দান করি। (সূরা শূরা : ৫২)।

এখানে আল্লাহ তাআলা কোরআনকে মানব জাতির ‘রূহ’ বা প্রাণ বলেছেন। বুঝিয়েছেন, কোরআনহীন মানব জীবন প্রাণহীন মানুষের মতো, মৃত। এ প্রসঙ্গে নবী (সা.) বলেছেন : যে ব্যক্তির বুকে কুরআনের কোনো অংশ নেই, সে যেন বিরান ঘর। (জামে তিরমিযী : ২৯১৬)।

অর্থাৎ অপরিচ্ছন্ন, আবর্জনাময়, ভীতিকর মানব সে। আলো বাতাসহীন, বসতিহীন, কীট পতঙ্গের আবাস তার বুক। কিন্তু এই বুকে যখন কোরআন প্রবেশ করে, বুক আলোকিত হয়। জীবন উজ্জ্বল ও ঝলমলে হয়। সজীব সতেজ হয়। জীবন্ত ও প্রাণবন্ত হয়। আর বিরাণ মৃত জীবনের সঙ্গে তো প্রাণবন্ত জীবনের কোনো তুলনা হতে পারে না।

একথাও আল্লাহ তাআলা কোরআন মাজীদে উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়েছেন : যে ব্যক্তি ছিল মৃত এরপর আমি তাকে জীবন দিয়েছি, তার জন্য আলোর ব্যবস্থা করেছি, যার সাহায্যে সে মানুষের মধ্যে চলাফেরা করে, সে কি ওই ব্যক্তির মতো হতে পারে, যে অন্ধকারে পরিবেষ্টিত, যা থেকে সে বের হতে পারে না? (সূরা আনআম : ১২২)।
এছাড়াও সূরা ইবরাহীমের শুরুতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন : এটি এমন কিতাব, যা আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি, যাতে আপনি মানুষকে অন্ধকার থেকে বের করে আলোতে আনতে পারেন, তাদের রবের নির্দেশে। সেই সত্তার পথে, যিনি পরাক্রমশালী প্রশংসার্হ। (সূরা ইবরাহীম : ১)।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
Muhammad Abdul Waresh ২২ মার্চ, ২০২২, ৭:৪৯ এএম says : 0
তথ্য-প্রযুক্তির চাকচিক্যময় চোখ ধাঁধানো এ যুগেও যে গ্রন্থটি সম্পর্কে বিশ্ববাসীর বিস্ময়ের অন্ত নেই তার নাম কোরআনে কারিম।
Total Reply(0)
Mir Irfan Hossain ২২ মার্চ, ২০২২, ৭:৪৯ এএম says : 0
কোরআন একাধারে বিশ্ব পরিচালনার সংবিধান, বিজ্ঞান গ্রন্থ, সমাজ বিজ্ঞান এবং একটি আধ্যাত্মিক গ্রন্থ। জ্ঞানের এমন কোনো শাখা আজও উদ্ভব হয়নি, যে সম্পর্কে কোরআনে উল্লেখ নেই। কিয়ামত পর্যন্ত মানব জাতির সব চাহিদা ও জিজ্ঞাসার জবাব এই কোরআন।
Total Reply(0)
Mamunur Rashid ২২ মার্চ, ২০২২, ৭:৫০ এএম says : 0
আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘আজকের এই দিনে আমি দ্বীনকে তোমাদের জন্য পরিপূর্ণ করে দিলাম।’ বস্তুত কোরআন নাজিল শেষ করার পরই আল্লাহ এই ঘোষণা প্রদান করেন। কিয়ামত পর্যন্ত মানব জাতির জীবন সমস্যার সকল সমাধান কোরআনে রয়েছে।
Total Reply(0)
Kamrul Sharif ২২ মার্চ, ২০২২, ৭:৫০ এএম says : 0
কোরআন নাজিলের মাধ্যমে আল্লাহতায়ালা দ্বীনকে মানব জাতির জন্য পূর্ণাঙ্গ রূপদান করেছেন। বন্ধ করে দিয়েছেন নবুওয়ত ও আসমানি কিতাবের দরজা সুতরাং এটা সর্বশেষ খোদায়ী বিধান গ্রন্থ।
Total Reply(0)
salman ২২ মার্চ, ২০২২, ৬:৫৫ এএম says : 0
Allah hu Akbar. Alhamdulillah
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন