বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

রমজান তাকওয়া অর্জনের মাস -১

মুহাম্মাদ আশিক বিল্লাহ তানভীর | প্রকাশের সময় : ৬ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০১ এএম

মাহে রমজানুল মুবারক। শ্রেষ্ঠত্ব মহিমা ও অফুরন্ত ফজিলতে উদ্ভাসিত একটি মাস। মুমিনের বহুল প্রতীক্ষিত এই পবিত্র রমজানুল মুবারক আগমন করে রহমত বরকত ও মাগফিরাতের সওগাত নিয়ে। বার্তা দিয়ে যায় সৌহার্দ্য সম্প্রীতি ও ভালোবাসার। গোটা রমজানজুড়ে বয়ে যায় মুমিন জীবনে ঈমানী বসন্তের অবারিত সমীরণ। এ মাসকে ঘিরে সে সঞ্চয় করে গোটা বছরের ঈমানী আমলী ও রূহানী পাথেয়। অর্জন করে তাকওয়া ও খোদাভীরুতার বৈশিষ্ট্য। ধন্য হয় মহান রবের নৈকট্য ও ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে।

রমজান মাস কোরআন নাজিলের মাস। খায়ের ও বরকতের মাস। তাকওয়া অর্জন ও আমলে অগ্রগামী হওয়ার মাস। নেকী হাসিলের মাস। গুনাহ বর্জন এবং ক্ষমা লাভের মাস। প্রবৃত্তির লাগাম টেনে ধরার এবং সংযম সাধনার মাস। ভ্রাতৃত্ব চর্চার মাস। দয়া ও সহানুভূতির মাস। দেহমন শুদ্ধ ও পবিত্র করার মাস। এ মাসে জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেওয়া হয়। আল্লাহ পাকের রহমত ও করুণা বান্দার প্রতি অধিক নিবিষ্ট হয়, নেক ও কল্যাণের দিকে ধাবিত হওয়া সহজ হয়। জাহান্নামের কপাটগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় এ মাসে। গুনাহের তাড়না দমিত হয়। শয়তান এ মাসে শৃঙ্খলাবদ্ধ থাকে। এ মাসে আল্লাহ তাআলা অসংখ্য জাহান্নামীকে মুক্ত করে থাকেন জাহান্নামের আগুন থেকে।

অতএব এ মাস আল্লাহমুখী হওয়া, তাঁর প্রিয়পাত্র হওয়া, তাকওয়া হাসিল করা এবং গুনাহ থেকে পাক-ছাফ হয়ে তাঁর নৈকট্য অর্জনের মোক্ষম সময়। কীভাবে বেশি থেকে বেশি আমলের মাধ্যমে নিজের ঈমানী জিন্দেগি দ্যুতিময় করে তোলা যায় এ মাস হলো সেই চর্চা ও প্রচেষ্টার উপযুক্ত মুহূর্ত। আর তাই তো রমজানের চাঁদ উঠতেই ঘোষণা হতে থাকে : ওহে কল্যাণ অন্বেষী, তুমি সুসংবাদ গ্রহণ কর, নেকীর পথে তুমি আরো বেগবান হও। ওহে অকল্যাণের যাত্রী, তুমি নিবৃত্ত হও, নিয়ন্ত্রিত হও। (জামে তিরমিযী : ৬৮২)।

ইসলামের মৌলিক পাঁচ স্তম্ভের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হচ্ছে রমজান মাসে রোজা রাখা। রোজা রাখা এ মাসের মূল আমল। আল্লাহ তাআলা বান্দার ওপর রমজানে মাসব্যাপী রোজা রাখা ফরজ করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন : হে ঈমানদারগণ, তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর ফরজ করা হয়েছিল, যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করতে পার। (সূরা বাকারা : ১৮৩)। তো দেখা যাচ্ছে, রোজার মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে তাকওয়া হাসিল করা। তাই আমার রোজা যেন আমার তাকওয়া হাছিলের উপলক্ষ হয়- এজন্য খুব গুরুত্বের সাথে রোজা রাখতে হবে।

রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন : যে ব্যক্তি ঈমান এবং ইহতিসাব তথা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস এবং সওয়াবের প্রত্যাশা রেখে রমজান মাসে রোজা রাখবে, তার পূর্বের গুনাহগুলো মাফ করে দেওয়া হবে। (সহীহ বুখারী : ৩৮)। তো ঈমান ও ইহতিসাবের উপলব্ধি জাগ্রত রেখে রোজা রাখা অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল এবং বান্দার গুনাহ মাফের একটা বড় মাধ্যম।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
আরিফুল ইসলাম ৬ এপ্রিল, ২০২২, ৩:০৭ এএম says : 0
বছরের এক মাসব্যাপী সিয়াম পালনের উদ্দেশ্য নিছক উপবাস থাকা নয়, এর মূল উদ্দেশ্য হলো তাকওয়া অর্জন করা। ফলে সমাজজীবনে মানুষ যাবতীয় অন্যায় ও অসৎ কাজ থেকে বিরত থাকতে পারে এবং সৎ কাজ করার জন্য অগ্রসর হতে পারে। তাই মুসলমানদের তাকওয়া বা খোদাভীতি অর্জনের লক্ষ্যে মাহে রমজানের পূর্ণাঙ্গ একটি মাস রোজা পালন ফরজ করা হয়েছে।
Total Reply(0)
দুলাল ৬ এপ্রিল, ২০২২, ৩:০৩ এএম says : 0
মাহে রমজান ও তাকওয়া ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কেননা, রমজান মাসে প্রত্যেক রোজাদার ব্যক্তিকে অবশ্যই তাকওয়ার গুণাবলি অর্জন করতে হয়।
Total Reply(0)
তফসির আলম ৬ এপ্রিল, ২০২২, ৩:০৪ এএম says : 0
মানুষ যাতে তাকওয়া অর্জন করতে পারে, আল্লাহভীতির গুণাবলি লাভ করতে পারে, দুনিয়ার সব কাজে আল্লাহকে উপস্থিতি পাওয়ার মতো বোধশক্তি অর্জন করতে পারে, এর জন্যই সিয়ম সাধনা করা অত্যাবশ্যক।
Total Reply(0)
বুলবুল আহমেদ ৬ এপ্রিল, ২০২২, ৩:০৭ এএম says : 0
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কোনো বিধানই লক্ষ্যহীন নয়। তাঁর প্রতিটি সৃষ্টি ও বিধানের পেছনে রয়েছে সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য। মাহে রমজানের রোজা ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ ও বিধান। এটিকে আল্লাহ ঈমানদারদের জন্য ফরজ করেছেন। এই বিধানের অন্যতম লক্ষ্য হলো তাকওয়া বা আল্লাহভীতির গুণ অর্জন করা। কোরআনে সুরা বাকারার ১৮৩ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমাদের জন্য সিয়ামের বিধান দেওয়া হলো, যেমন বিধান দেওয়া হয়েছিল পূর্ববর্তীদের, যাতে তোমরা মুত্তাকি (তাকওয়াসম্পন্ন) হতে পারো। ’
Total Reply(0)
খাজা নিজাম উদ্দিন ৬ এপ্রিল, ২০২২, ৩:০৮ এএম says : 0
আল্লাহ তাআলার সান্নিধ্য লাভ এবং আখিরাতের জীবনে তাঁর ঘনিষ্ঠতা পাওয়ার অন্যতম উপায় হলো তাকওয়া। আর এই তাকওয়া অর্জনের জন্যই রোজার বিধান ঘোষণা করেছেন আল্লাহ তাআলা। আমরা মাহে রমজানের রোজাসমূহ আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের অবলম্বন হিসেবে যথাযথভাবে পালন করব। এর মাধ্যমে আমরা যে তাকওয়ার গুণ অর্জন করব, তা আমাদের জীবন চলার পথকে সহজ করবে এবং আমাদের সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেবে, ইনশাআল্লাহ।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন