শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ইমরান খানের পতনে বাংলাদেশ নেটিজেনদের মধ্যে শোকের ছায়া

সোশ্যাল মিডিয়া ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১১ এপ্রিল, ২০২২, ১২:৫৮ পিএম

দিনভর নাটকীয়তার পর শনিবার (৯ এপ্রিল) রাতে অনাস্থা ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারালেন ইমরান খান। অল্প সময়ের ব্যবধানে মুসলিম বিশ্বের অদম্য নেতা হয়ে ওঠা সাবেক এই ক্রিকেটারের পতন মেনে নিতে পারছেন নেটিজেনরা। এনিয়ে গভীর দুঃখ প্রকাশ করে ইমরানের জন্য শুভ কামনা করেছেন ভক্তরা।

২২ গজের ক্রিকেট পিচ দাঁপিয়ে বেড়ানো ইমরান খান ছিলেন পাকিস্তানের ২২তম প্রধানমন্ত্রী। তার ক্ষমতাচ্যুতির মধ্যদিয়ে দেশটির নির্বাচিত একজন প্রধানমন্ত্রীও মেয়াদ পূর্ণ করতে পারলেন না।

কয়েক দফা মুলতবির পর দেশটির স্থানীয় সময় শনিবার রাত ১১টা ৫০ মিনিটে পাকিস্তানের সংসদ অধিবেশন অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হয়। এতে ইমরানের বিরুদ্ধে ভোট পড়েছে ১৭৪টি। প্রস্তাব পাসের জন্য দরকার ছিল ১৭২ ভোট।

মাত্র দুই ভোটের ব্যবধান প্রমাণ করছে তিনি আসলে কতটা জনপ্রিয়। এমন একজন জনপ্রিয় সরকার প্রধানের পতনে বিদেশি হস্তক্ষেপ ও পাকিস্তানি মীরজাফরদের দোষারোপ করছেন সচেতন মানুষেরা। তার এই পতনকে মুসলিম বিশ্বের একজন নেতার পতন হিসেবেও দেখছেন অনেকে।

ফেসবুকে এক পোস্টে জৈষ্ঠ্য সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গবেষক মেহেদী হাসান পলাশ লিখেছেন, ‘ইউএসএ, ইসরাইল, ওয়েস্টার্ন, ইন্ডিয়ার চোখে ইমরান খানের প্রধান দোষ কি? তিনি মুসলিম ভাতৃত্বের কথা বলেছেন, মুসলিম জাতীয়তাবাদের কথা বলেছেন, পাশ্চাত্যের ইসলামবিরোধী নীতি ইসলামোফোবিয়ার মুখোশ উন্মোচন করেছেন বিশ্বসভায়। তিনি আমেরিকা ও ইসলামবিরোধী শক্তির ক্রীড়নক হতে চাননি। তার মত করে এভাবে যুক্তি দিয়ে বিশ্বসভায় পাশ্চাত্যের ইসলামবিরোধী নীতির মুখোশ আর কেউ উন্মোচন করতে সক্ষম হয়নি। আফগানিস্তানে তালেবানদের ফিরিয়ে আনা এবং আফগানিস্তান থেকে উক্ত দখলদার গোষ্ঠীর তিন দশকের জুলুমের লজ্জাকর পরাজয়ের প্রধান কারিগর ইমরান খান। ওআইসিতে যখন পাশ্চাত্যের সেবাদাস আরব শাসকরা কাশ্মীর ও ফিলিস্তিন নিয়ে নীরব থেকেছেন, ইমরান খান সেখানে সোচ্চার ভূমিকা রেখেছেন। ইমরান খান ইরানের সাথে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটিয়েছেন, চায়নাকে পাকিস্তানে ও আফগানিস্তানে বড় ভুমিকা রাখার সুযোগ করে দিয়েছেন। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষে অবস্থান নেয়া- এসবই ইমরান খানের দোষ!

এর আগে যারাই মুসলিম ভাতৃত্বের ও মুসলিম জাতীয়তাবোধের কথা বলেছেন তাদের সকলের পরিণতি এরকম হয়েছে। মিশরের মুরসিকে সেনা অভ্যুত্থানে উৎখাত হয়ে কারাগারে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে, টার্কিতে এরদোগান ভাগ্যক্রমে টিকে গেলেও বিপদ তার ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে, এবার ইমরান খান গেলেন। বাইডেন ক্ষমতায় এসে তার সরকারের মূলনীতি হিসেবে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের কথা সোচ্চার গলায় বলেছিলেন। এটাই মার্কিন সরকারের গণতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের নমুনা। একটি নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতা থেকে হঠিয়ে দেয়া। হয়তো তারা বলতে পারেন, গণতান্ত্রিক কায়দায়ই সেটা হয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানি ডিপ স্টেট এই রদবদলে যে বিরাট ভূমিকা রেখেছে, সে কথা কারো চোখে আঙুল দিয়ে দেখানোর প্রয়োজন নেই।....’

শোক প্রকাশ করে হাসিবুজ্জামান সমাদ্দার লিখেছেন, ‘‘আহহহহ অন্তরটা কেঁপে উঠলো। ইমরান খান জাতিসংঘে এবং ওআইসিতে ইসলামের জন্য যে জ্বালাময়ী বক্তব্য দিয়েছিলেন তা ইতিহাসে এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে ইনশাআল্লাহ। এই ভূমিকা আর কোন মুসলিম নেতা পারবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে।
তবে এটুকু পরিষ্কার যে, যারা ইসলামের পক্ষে, মুসলিমদের পক্ষে কাজ করবে, কথা বলবে তাদের বিরুদ্ধে ইহুদি খ্রিস্টান সম্প্রদায় ঐক্য বদ্ধ হয়ে মুসলিমদের দিয়েই মুসলিমদের ক্ষতি করবে।
আমরা মুসলমানরা ক্ষমতার জন্য কতটা নিচে নামতে পারি তা পাকিস্তানের দিকে তাকালে বুঝতে পারি।আল্লাহ পাক ইমরান খানের প্রতি রহম করুক।’

মো কামরুল হাসান চৌধুরীর আশা, ‘‘ইমরান খান আবার ফিরবেন আরো দুর্বার গতি নিয়ে ইনশাআল্লাহ,,এই কয়দিনে পাকিস্তানের মানুষ বুঝতে পেরেছে ইমরান খানের বিকল্প নেই পাকিস্থানে, তার মতো সৎ সাহসী সুশিক্ষিত নেতা কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নার পর পাকিস্তানে একজনও আসেনি, সব কথার শেষ কথা- আল্লাহ যেটা করেন তাঁর বান্দার মঙ্গলের জন্য করেন, নেক্সট ইলেকশনে হয়তো ইমরান খান বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে এবং আরো বিপুল সম্মান নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহণ করবেন... এই প্রত্যাশা আমাদের সকলের...!!’’

কেএম হক লিখেছেন, ‘‘ইমরান খান পাকিস্তানকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিল আজ পাকিস্তান হারালো এক মহান দেশপ্রেমিক নেতা কে তাকে মুসলিম বিশ্বের নেতা মনে করি আমরা। আপনি আবার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে মুসলিম বিশ্বের নেতা হয়ে ফিরে আসবেন আল্লাহ আপনার সহায় হোন।’’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন