শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

তাওবাহ করার এখনই সময়

মুহাম্মদ সানাউল্লাহ | প্রকাশের সময় : ২১ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০২ এএম

মহান আল্লাহ রহমানুর রহীমের মায়াদয়ার কোনো সীমা নেই। বান্দার প্রতি তার করুণা অসীম। আল্লাহ তা‘আলা নিজেই ঘোষণা করেছেন, নিশ্চয় তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল, অতিশয় দয়াময়। আল্লাহর করুণা, দয়া লাভের অনত্যম মাধ্যম হচ্ছে তাওবাহ। বিশেষ করে তাকওয়ার রমজান মাসে সবার বেশি বেশি তাওবাহ করা উচিৎ। তাওবার প্রয়োজনীতা ও গুরুত্ব জানার পূর্বে তার পরিচয় জানা আবশ্যক। তাওবার সংক্ষিপ্ত পরিচয়, প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব তুলে ধরা হলো- তাওবার শাব্দিক অর্থ হলো- ফিরে আসা। যখন তাওবাহ শব্দটির সম্পর্ক মানুষের সঙ্গে হয় তখন তার তাৎপর্য দাঁড়ায়, বান্দার কৃত অন্যায়ের জন্য অনুতপ্ত ও লজ্জিত হওয়া, সে অন্যায় সম্পূর্ণরূপে বর্জন করা, ভবিষ্যতে এমন অন্যায় না করার দৃঢ়-সংকল্প করা। এমন দৃঢ়-সংকল্প করে আল্লাহর দিকে ফিরে আসার নামই হচ্ছে তাওবা।

যে ব্যক্তি কৃত অন্যায়ের জন্য তওবাহ করবে, সে অবশ্যই আল্লাহর বিরাগভাজন কাজ থেকে সর্বদা বিরত থাকতে সচেষ্ট হবে। আল্লাহ তা‘আলার তরফ থেকে আরোপিত ফরজসমূহকে যত্নসহকারে আদায় করবে। বান্দার অধিকার খর্ব হলে যেমন- কাউকে গাল-মন্দ, গীবত-শেকায়াত, অত্যাচার-নির্যাতন করলে তার নিকট ক্ষমা চেয়ে নেয়া।
তাই ইমাম রাজি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, বান্দার উচিত সর্বদা আল্লাহর দরবারে তাওবাহ করা। তিনি কয়েকটি হাদীসের উদ্ধৃতি দিয়েছেন-

আমীরুল মোমিনীন আলী রাদিয়াল্লাহু আনহুকে এক ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করেছিল, এমন একজন ব্যক্তি সম্পর্কে, যে গোনাহ করে তাওবাহ করে; পুনরায় গোনাহ করে। আবার তাওবাহ করে, আবার গোনাহ করে। আবার গোনাহের কাজে মশগুল হয় এবং আবার তাওবা-ইস্তিগফার করে। এরূপ করতে থাকা ব্যক্তির কী অবস্থা হবে? আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেছেন, তার কর্তব্য হলো সর্বদা তাওবাহ-ইস্তিগফার করতে থাকা। কেননা তাওবাহ-ইস্তিগফার অব্যাহত থাকলে শয়তান ব্যর্থ হয়ে যাবে। শয়তান বলবে, এ ব্যক্তিকে গোনাহর কাজে সর্বদা মশগুল রাখতে আমি অক্ষম।

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের নিকট তাওবা করতে থাক। কেননা আমি নিজে দৈনিক ১০০ বার তাওবা করি।
আবু আইউব রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, আমি প্রিয়নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট একথা শ্রবণ করেছি, যা তোমাদের নিকট থেকে গোপন রেখেছিলাম তা এই, তিনি বলেছেন, যদি তোমরা গোনাহ করে আল্লাহ তা‘আলার মহান দরবারে তাওবাহ-ইস্তিগফার না করতে, তবে আল্লাহ তাআলা এমন এক মাখলুক সৃষ্টি করতেন, যারা গোনাহ করে আল্লাহ তা‘আলার দরবারে তাওবা করতো, তখন আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে ক্ষমা করতেন। (মুসলিম)

সুতরাং বুঝা যায় যে, বান্দার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে তাওবা-ইস্তিগফারের সুযোগদান এক মহা নিয়ামাতস্বরূপ। তার এ নিয়ামাতের শুকরিয়া আদায় করা বিশ্ব মুসলিমের জন্য একান্ত অপরিহার্য বিষয়। তাই মুসলিম উম্মাহর উচিত মহান আল্লাহর দরবারে প্রতিদিন তাওবা-ইস্তিগফার তথা ক্ষমা প্রাথনা করা, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীসের ওপর আমল করা। আল্লাহ তা‘আলা সবাইকে তার মহান দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন