শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

রমজানে অর্জিত পাথেয় নিয়ে এগিয়ে চলি

খুৎবা-পূর্ব বয়ান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ মে, ২০২২, ১২:০০ এএম

গোনাহ বর্জন, ইবাদতের শক্তি সঞ্চয় ও আত্মিক পাথেয় সংগ্রহের এক মহা সুযোগ হচ্ছে রমজান। এই রমজান হতে অর্জিত পাথেয় নিয়ে এগিয়ে চলি। ঈমান আমল ও আখলাক চরিত্রে আরো উন্নত হই। গতকাল জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে পেশ ইমাম এসব কথা বলেন। নগরীর মহাখালীস্থ মসজিদে গাউছুল আজমে জুমার নামাজে প্রচুর মুসল্লির সমাগম ঘটে।

গুলিস্তান ফুলবাড়িয়া রেলওয়ে জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মুহিউদ্দীন রাব্বানী গতকাল জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, রমজান হলো ঈমান আমলের উন্নতি ও তাকওয়া হাসিলের এক মোক্ষম সময়। এটি পুরো বছর গোনাহ বর্জন, ইবাদতের শক্তি সঞ্চয় ও আত্মিক পাথেয় সংগ্রহের এক মহাসুযোগ। ওই ব্যক্তিই রমজান হতে কাক্সিক্ষত সুফল ও উপকার গ্রহণ করতে পারল, যে নিজের জীবনকে পরিবর্তন করতে পারল।

খতিব বলেন, রমজান হতে অর্জিত পাথেয় নিজের জীবনে ধারণ করতে পারল। হতে পারল মুত্তাকি যে কিনা আল্লাহর আনুগত্য ও তাকওয়ার সর্বোচ্চ স্তরে উন্নীত হয়েছে। বাস্তবেই রোজাদার তাকওয়ার সর্বোচ্চ স্তরে উন্নীত হয়। নইলে রোজার ব্যাপারে সে এত সতর্ক কেন? এই সতর্কতা লোক দেখানোর জন্য নয়; শুধুই আল্লাহর ভয়ে, আল্লাহর আনুগত্যে। তাই তো আল্লাহ এরশাদ করেছেন, নিশ্চয় রোজা আমার জন্য, আর এর প্রতিদান স্বয়ং আমিই দিব। সহিহ মুসলিম, হাদিস-১১৫১। অতএব আসুন, আমরা এই রমজান হতে অর্জিত পাথেয় নিয়ে এগিয়ে চলি। ঈমান-আমল ও আখলাক চরিত্রে আরো উন্নত হই। আল্লাহ আল্লাহর রাসুলের পূর্ণ অনুগত হয়ে আখেরাতের চির সফলতার দিকে এগিয়ে যাই।

খতিব বলেন, যারা রমজানের হক্ব আদায় করে যথাযথভাবে রোজা পালন করেছেন এবং তাকওয়া পরহেজগারির গুণে গুণান্বিত হয়েছেন, ইবাদত বন্দেগীতে অগ্রগামী হয়েছেন, তারা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করি, তার প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। এর উপর আমৃত্যু অবিচল থাকার চেষ্টা ও দোয়া করি। আর যারা রমজানকে যথাযথ কাজে লাগাতে পারেননি তারা আগামীর জন্য দৃঢ় সংকল্প করি এবং আল্লাহর মাগফিরাত ও রহমতের প্রত্যাশী হই। খতিব বলেন, এর মধ্যে অন্যতম একটি আমল হচ্ছে শাওয়াল মাসের ছয়টি রোজা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি রমজান মাসের রোজা রাখল। অতপর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখল, সে যেন সারা বছর রোজা রাখল। সহিহ মুসলিম, হাদিস-১১৬৪। আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে আমল করার তৌফিক দান করুনÑআমিন।

মিরপুরের ঐতিহ্যবাহী বাইতুল মামুর জামে মসজিদের খতিব মুফতি আব্দুর রহিম কাসেমী গতকাল জুমার বয়ানে বলেন, শাওয়াল মাস একটি সম্মানিত মাস । শাওয়ালের ছয় রোজা বড় ফজিলতের। মুসলিম উম্মাহ এ রোজা রাখার মাধ্যমে আল্লাহর সান্নিধ্য লাভে ধন্য হতে পারেন। হজরত রাসুল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি রমজানের সিয়াম পালনের পর শাওয়ালের ছয় রোজা রাখল, সে যেন সারা বছর রোজা রাখল। মুসলিম শরিফ, হাদিস-১১৬৪৷ অর্থাৎ সে এক বছর রোজা রাখার সওয়াব লাভ করবে। শাওয়ালের ছয় রোজার এই আমলটা অতিব সহজ হলেও এর সওয়াব ও ফজিলত অনেক বেশি । কারও পক্ষে সহজেই সম্ভব নয় এক বছর লাগাতার রোজা রাখা। অথচ এই আমলটা সাধারণ মানুষের পক্ষেও সম্ভব। দ্বিতীয়ত : এ মাসের বিবাহশাদী বড় বরকতময় ও সুন্নত।

খতিব বলেন, হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বলেন, শাওয়াল মাসে বিয়ে-শাদী সুন্নত, যেরূপ শুক্রবারে জামে মসজিদে ও বড় মজলিশে আক্দ-নিকাহ সম্পন্ন করা সুন্নত। হজরত আয়েশা (রা.)-এর বিবাহও শাওয়াল মাসের শুক্রবারে মসজিদে নববিতেই হয়েছিল। কাজেই এ মাসে বিবাহশাদীর ফজিলত আলাদা। তৃতীয়ত : এ মাস হজের প্রস্তুতির মাস। যারা পবিত্র হজের নিয়ত করেছেন, তারা বিশেষভাবে হজের নিয়মকানুন, মাসয়ালা-মাসায়েল শিক্ষাসহ সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকবেন। এ কারণেই এ মাসকে হজের মাসের মধ্যে পরিগণিত করা হয়েছে। খতিব বলেন, রমজানের পর শাওয়ালের ফজিলত অনেক। তাই রমজানের থেকে শিক্ষা নিয়ে এ মাসেও আল্লাহ প্রেমিক মোমিনরা গোনাহের কার্যসমূহ বর্জন করত : শাওয়ালের ছয় রোজা পালনসহ অন্যান্য নেক আমলের মাঝে নিজেকে নিয়োজিত রাখবেন। আল্লাহ সবাইকে তৌফিক দান করেন- আমিন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন