শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

আল কিতাব ও আল হিকমাত : এতদপ্রসঙ্গে কিছু কথা-১

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুনশী | প্রকাশের সময় : ৯ মে, ২০২২, ১২:০৫ এএম

আল্লাহু জাল্লা শানুহু পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রতি আল কিতাব এবং আল হিকমাত নাযিল করেছেন। এতদপ্রসঙ্গে আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে। ‘আল্লাহ পাক আপনার প্রতি আসমানী গ্রন্থ আল কিতাব (কুরআন) ও ঐশী প্রজ্ঞা আল হিকমাত (সুন্নাহ) নাযিল করেছেন এবং আপনাকে এমন বিষয় শিক্ষা দিয়েছেন, যা আপনি জানতেন না। আপনার প্রতি আল্লাহ পাকের অসীম করুণা রয়েছে।’ (সূরা আন্নিসা: আয়াত ১১৩)।

গভীর মনোযোগের সাথে আল কুরআন তিলাওয়াত করলে দেখা যায় যে, আল কিতাব শব্দটি ১৫টি আঙ্গিকে আল কুরআনে ব্যবহৃত হয়েছে, যথা : (১, ২, ৩) আল কিতাবা, আল কিতাবি আল কিতাবু রূপে আল কুরআনে ব্যবহৃত হয়েছে ২৩০ বার।

(৪) কিতাবান আকারে এসেছে ১২ বার। (৫) কিতাবাকা আকারে এসেছে ১ বার। (৬) কিতাবিকুম আকারে এসেছে ১ বার। (৭) কিতাবুনা আকারে এসেছে ১ বার। (৮) কিতাবাহু আকারে এসেছে ৫ বার। (৯) কিতাবিহা আকারে এসেছে ১ বার। (১০) কিতাবাহুম আকারে এসেছে ১ বার। (১১) কিতাবী আকারে এসেছে ১ বার। (১২) কিতাবিয়াহ আকারে এসেছে ২ বার। (১৩, ১৪) কুতুবুন ও কুতুবিন আকারে এসেছে ৩ বার। (১৫) কুতবিহি আকারে এসেছে ৩ বার। মোট ২৬১ বার।

আরো লক্ষ করা যায় যে, প্রাপ্ত সংখ্যা ২৬১-এর একক (২+৬+১)=৯। এই ৯ সংখ্যাটি ইঙ্গিত করছে যে, যার ওপর এই আল কিতাব নাযিল হয়েছে তিনি মোহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। আরবী মোহাম্মাদ নাম মোবারকে ৫টি অক্ষর রয়েছে। পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবসমূহে তাঁর নাম আহমাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলে উল্লেখ আছে। আরবী আহমাদ নাম মোবারকের অক্ষর সংখ্যা ৪। এখন উভয় নাম মোবারকের অক্ষর সংখ্যার একক (৫+৪)=৯। শুধু তা-ই নয়।

এই ৯ সংখ্যাটি পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জাগতিক হায়াত মোবারকের এককের প্রতিও ইঙ্গিত প্রদান করে। কেননা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর জাগতিক হায়াত ৬৩ বছর। উহার একক (৬+৩)=৯। সুবহানাল্লাহ! ৯ সংখ্যাটি প্রকৃতই রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সত্যতার সাক্ষী হয়ে আছে।

আরো লক্ষ করা যায় যে, এই আল কিতাব (আল কুরআন) দু’টি স্থানকে কেন্দ্র করে নাযিল হয়েছে। যেমন- (ক) মক্কাহ ও এর আশপাশের এলাকা। আরবী মাক্কাতুন শব্দের অক্ষর সংখ্যা ৪। (খ) মদিনাহ ও এর আশপাশের এলাকা। আরবী মাদীনাতুন শব্দের অক্ষর সংখ্যা ৫। এখন এই উভয় স্থানের নামের অক্ষর সংখ্যার এককও (৪+৫)=৯ই হয়। মোটকথা, আল কিতাব (আল কুরআন) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সর্বশ্রেষ্ঠ মু’জ্জিযা। আরো দেখা যায় যে, আল হিকমাতা অর্থাৎ (সুন্নাহ) শব্দটি আল কুরআনে ৬টি আঙ্গিকে ব্যবহৃত হয়েছে।

যথা : (১, ২, ৩) হিকমাতুন্ হিকমাতা, হিকমাতিন আঙ্গিকে আল কুরআনে ব্যবহৃত হয়েছে ২০ বার। (৪) মুহকামাতুন আঙ্গিকে ব্যবহৃত হয়েছে ১ বার। (৫) মুহকামা-তুন বহুবচন আঙ্গিকে ব্যবহৃত হয়েছে ১ বার। (৬) যিনি আল কিতাব ও আল হিকমাত নাযিল করেছেন তিনিই আল্লাহ, আহকামুল হাকিমীন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
Ariyan Khan Sohel ৮ মে, ২০২২, ৪:৪২ এএম says : 0
আল্লাহ কুরআনের পাশাপাশি হিকমত নাজিল করেছেন আর হিকমত যে রাসূল সাঃএর হাদিস তাতে কারও কোন সন্দেহ নেই। কুরআনের বর্ণিত আয়াতগুল সরাসরি জিব্রাঈল আঃএর মাধ্যমে এসেছে,কিন্তু হিকমাত হল রাসূল সাঃএর প্রতি মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা ইলহাম। যা আল্লাহ কোন ফেরেশতার মাধ্যম ছাড়া নাযিল করেছেন।
Total Reply(0)
M H Miru Bd ৮ মে, ২০২২, ৪:৪৩ এএম says : 0
আল্লাহ তো শুধুমাত্র কোরআন নাজিল করেন নাই সাথে হিকমাহও নাজিল করেছেন। মূলত আল্লাহ দুটো জিনিস নাজিল করেছেন। ১. কিতাব ও ২. হিকমাহ। যার প্রমাণ আপনি পাবেন সূরা নিসার-৪/১১৩ নং আয়াতে। সূরা নিসা-৪/ ১১৩> وَ اَنۡزَلَ اللّٰہُ عَلَیۡکَ الۡکِتٰبَ وَ الۡحِکۡمَۃَ আমি তোমার প্রতি নাজিল করেছি কিতাব এবং হিকমাহ।
Total Reply(0)
Km Faruk ৮ মে, ২০২২, ৪:৪৪ এএম says : 0
মহান রাব্বুল আলামীন কোরআনুল কারীমে ‘হিকমাত শব্দটি বারটি সূরায় সর্বমোট ২০ বার উল্লেখ করেছেন। এই শব্দটির অর্থ ও মর্ম এত বিশাল ও বিস্তৃত যে, সে মহাসাগরে ডুব দিয়ে তা হতে মণি-মুক্তা ও হীরা জহরত আহরণ করা সাধারণ মানুষের পক্ষে মোটেই সম্ভব নয়। তারপরও আমরা আল্লাহর ওপর ভরসা করে সে পথে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করব। কেননা তিনি আর রাহমানুর রাহিমিন।
Total Reply(0)
Ismail Sagar ৮ মে, ২০২২, ৪:৪৪ এএম says : 0
যাবতীয় বিষয় বস্তুকে সঠিক জ্ঞান দ্বারা জানাকে হিকমাত বলে। সংক্ষেপে প্রজ্ঞা, মনীষা, বুদ্ধিমত্তা, প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব, অন্বেষা, বহু দর্শিতা, সু²দৃষ্টি ইত্যাদিকেও হিকমাতের অন্তর্ভুক্ত বলে ধরে নেয়া যায়। মহান রাব্বুল আলামীন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ সা. কে হিকমাতের ষোলআনা গুণে বিভ‚ষিত করেছিলেন। যার সঠিক চিত্র তিনি আল কোরআনে এভাবে তুলে ধরেছেন।
Total Reply(0)
রফিক নেওয়াজ খান ৮ মে, ২০২২, ৮:০৭ এএম says : 0
হিকমাত শব্দটি যদি সুন্নাহ বুঝায়, তবে তা নবিজী মারা যাওয়ার ২৫০ থেকে ৩০০ বছর পর কেন লিখা হইলো? কেন তাঁর জীবিত অবস্তায় লিখা হয়নি?২৫০ - ৩০০ বছর পর সংগ্রহ কতটুকু মূল সত্য ধারণ করবে?
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন