রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

আল কিতাব ও আল হিকমাত : এতদ প্রসঙ্গে কিছু কথা-২

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুনশী | প্রকাশের সময় : ৯ মে, ২০২২, ১২:০০ এএম

আহকামুল হাকিমীন শব্দদ্বয় আল কোরআনে ২ বার এসেছে। আরো লক্ষ্য করা যায় যে, হিকমাতুন্ হিকমাতা, হিকমাতিন আঙ্গিকে আল কোরআনে ব্যবহৃত হয়েছে ২০ বার। মুহকামাতুন ১ বার। মুহকামা-তুন (বহুবচন) ১ বার। উদ্ধৃত সংখ্যাগুলোর একক (২+২০+১+১) = ২৪। যার একক (২+৪) = ৬। মহান আহকামুন হাকিমীন আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডল এবং এতদুভয়ের মধ্যবর্তী যাবতীয় বস্তুরাজি ৬ দিনে সৃষ্টি করেছেন। এতে করে স্পষ্টতঃই অনুধাবন করা যায় যে, পিয়ারা নবী মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুজিযার ব্যাপ্তি কেবলমাত্র দুনিয়াতেই সীমাবব্ধ ছিল না। বরং তাঁর মুজিযা পৃথিবী আকাশ ও তদূর্ধ্ব নিঃসীম জগতে বিস্তৃত ছিল। যার ফলশ্রুতি স্বরূপ তিনি ‘কাবা কাউসাইন’ মাকাম পর্যন্ত পরিভ্রমণ করার গৌরব অর্জন করে ছিলেন।

বস্তুত : উল্লেখিত আয়াতে কারীমায় আল কিতাব ও আল হিকমাত শব্দদ্বয় উল্লেখ করে এই ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুন্নাহ বা শিক্ষার নামই হলো হিকমাত। আর তাও আল্লাহপাকের পক্ষ হতেই নাযিলকৃত। পার্থক্য এই যে আল কিতাব বা কোরআনুল কারীমের ভাব, ভাষা, শব্দ, বাক্য আল্লাহ পাকের নিজস্ব ব্যাপার। আর সুন্নাহর শব্দাবলি (আল হিকমাত) আল্লাহর পক্ষ থেকে নয়।

বরং তা উচ্চারিত হয়েছে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর যবান মোবারক হতে, আল্লাহপাকের নির্দেশক্রমে। এ জন্য আল কিতাব ও আল হিকমাত উভয়টিই আল্লাহপাকের পক্ষ থেকে আগত। তাই উভয়টির বাস্তবায়নই ওয়াজেব বা অপরিহার্য।

উম্মতে মোহাম্মাদীর আয়েম্মায়ে মুজতাহেদীন যথার্থই দিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন যে, ওহী বা প্রত্যাদেশ দু প্রকার (এক) ‘ওহীয়ে মাতলু’ যা তিলাওয়াত করা হয় এবং (দুই) ওহীয়ে গায়রে মাতলু যা তিলাওয়াত করা হয় না। প্রথম প্রকার ওহী হলো আল কিতাব বা আল কোরআন। যার শব্দ, মর্ম সবই আল্লাহ জাল্লাশানুহু-এর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত। আর দ্বিতীয় প্রকার ওহী হলো আল হিকমাত বা হাদীস তথা সুন্নাহ। এর শব্দাবলি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পক্ষ থেকে। কিন্তু মর্ম ও দিকনির্দেশনা আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকেই প্রদত্ত।
এই বিশেষত্বটির কথা রাসূলুল্লাহু (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজেই বলে গেছেন। তিনি বলেছেন : ‘জেনে রেখো! আমাকে আল কোরআন দেয়া হয়েছে আর সেই সাথে দেয়া হয়েছে অনুরূপ আরেকটি জিনিস।’ (সুনানে আবু দাউদ, সুনানে ইবনে মাজাহ)।

এই হাদীসে আল কোরআনের অনুরূপ যে জিনিসটি প্রদানের কথা বলা হয়েছে তা-ই হলো হিকমাত বা সুন্নাতে রাসূল বা হাদীসে রাসূল। এই সুন্নাত বা হাদীস রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁর কথা, কাজ, সমর্থন ও অনুমোদনের মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহকে জানিয়ে বুঝিয়ে এবং হাতে কলমে শিখিয়ে দিয়ে গেছেন যা আমাদের কাছে সংরক্ষিত আছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে। এর ব্যতিক্রম হওয়ার জো নেই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (3)
Md Abu Tahar ৯ মে, ২০২২, ৯:২৯ এএম says : 0
আল্লাহ কুরআনের পাশাপাশি হিকমত নাজিল করেছেন আর হিকমত যে রাসূল সাঃএর হাদিস তাতে কারও কোন সন্দেহ নেই। কুরআনের বর্ণিত আয়াতগুল সরাসরি জিব্রাঈল আঃএর মাধ্যমে এসেছে,কিন্তু হিকমাত হল রাসূল সাঃএর প্রতি মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা ইলহাম। যা আল্লাহ কোন ফেরেশতার মাধ্যম ছাড়া নাযিল করেছেন।
Total Reply(0)
Ismail Sagar ৯ মে, ২০২২, ৯:২৯ এএম says : 0
আল্লাহ তো শুধুমাত্র কোরআন নাজিল করেন নাই সাথে হিকমাহও নাজিল করেছেন। মূলত আল্লাহ দুটো জিনিস নাজিল করেছেন। ১. কিতাব ও ২. হিকমাহ। যার প্রমাণ আপনি পাবেন সূরা নিসার-৪/১১৩ নং আয়াতে। সূরা নিসা-৪/ ১১৩> وَ اَنۡزَلَ اللّٰہُ عَلَیۡکَ الۡکِتٰبَ وَ الۡحِکۡمَۃَ আমি তোমার প্রতি নাজিল করেছি কিতাব এবং হিকমাহ।
Total Reply(0)
Shahjahan Miazi ৯ মে, ২০২২, ৯:২৯ এএম says : 0
যাবতীয় বিষয় বস্তুকে সঠিক জ্ঞান দ্বারা জানাকে হিকমাত বলে। সংক্ষেপে প্রজ্ঞা, মনীষা, বুদ্ধিমত্তা, প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব, অন্বেষা, বহু দর্শিতা, সু²দৃষ্টি ইত্যাদিকেও হিকমাতের অন্তর্ভুক্ত বলে ধরে নেয়া যায়। মহান রাব্বুল আলামীন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ সা. কে হিকমাতের ষোলআনা গুণে বিভ‚ষিত করেছিলেন। যার সঠিক চিত্র তিনি আল কোরআনে এভাবে তুলে ধরেছেন।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন