কুমিল্লায় ডেমোক্রেটিক পার্টি এলডিপির মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী ড. রেদেয়ান আহমেদকে আটক করেছে পুলিশ।
গতকাল সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে চান্দিনা উপজেলা সদরে ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের ওপর গুলি চালানোর অভিযোগে পুলিশ তাকে আটক করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এম তানভীর আহমেদ জানান, প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি ড. রেদোয়ান আহমেদ কয়েক রাউন্ড গুলি চালিয়েছেন, তাই আমরা তাকে পুলিশ হেফাজতে এনে এ বিষয়ে জানতে চাচ্ছি। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। গুলিবিদ্ধ আহতরা হলেন- চান্দিনা পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ নেতা রূপনগর এলাকার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম সরকারের ছেলে মাহমুদুল হাসান জনি সরকার। জনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। অপরজন হলেন, চান্দিয়ারা গ্রামের নূরুল ইসলাম এর ছেলে নাজমূল হোসেন নাঈম। তিনি উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে চান্দিনা উপজেলা সদরে অবস্থিত চান্দিনা রেদোয়ান আহমেদ ডিগ্রি কলেজ মিলনায়তনে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এলডিপি। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের মহাসচিব ও সাবেক মন্ত্রী ড. রেদেয়ান আহমেদ। অনুষ্ঠান শুরুর আগেই দুপুরের দিকে ড. রেদোয়ান কলেজ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। তিনি ওই কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা এবং চান্দিনা আসনের সাবেক এমপি। একই সময়ে স্থানীয় ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ একই স্থানে কর্মী সভার করার ঘোষণা দিলে উভয় গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ বিষয়ে এলডিপির নেতা শাখওয়াত হোসেন বলেন, ছাত্রলীগ নেতারা ইচ্ছা করেই ঝামেলা পাকিয়েছে, তারা রেদোয়ান আহমেদ ও তার গাড়ি লক্ষ্য করে তরমুজ ও ঢিল মারার পাশাপাশি তার ওপর হামলা চালায়।
অন্যদিকে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সামিরুল খন্দকার রবি জানান, হঠাৎ রেদোয়ান আহমেদ তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালালে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কর্মী জনি ও ছাত্রলীগ কর্মী নাজমুল গুলিবিব্ধ হন। তাদের কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কাজী আখলাকুর রহমান জুয়েল বলেন, রেদোয়ান আহমেদ রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার করতে আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর অমানবিক ভাবে গুলি চালিয়েছে।
তবে এবিষয়ে সাবেক প্রতিমন্ত্রী ড. রেদোয়ান আহমেদ বলেন, আমাদের পূর্ব নির্ধারিত প্রোগ্রাম ছিল। আমাকে প্রধান অতিথি করে চিঠির মাধ্যমে পৌর এলডিপি কার্যক্রম পরিচালনা করে। এরই মধ্যে আমাদের প্রধান ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগকে প্রোগ্রাম করার জন্য অনুমতি দেওয়া হয়। আমরা ক্যাম্পাস-২ মমতাজ আহমেদ ভবনে পুর্ব নির্ধারিত প্রোগ্রাম করার কথা। দুপুরে আমি ক্যাম্পাস-২ এর সামনে গেলে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের লোকজন আমার গাড়িতে হামলা করে। আমি আত্মরক্ষার্থে আমার লাইসেন্স করা শর্টগানে গুলি চালাই। কার গায়ে গুলি লেগেছে আমি বলতে পারব না। পরে আমি থানায় এসে আশ্রয় নেই।
এ প্রসঙ্গে সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (দাউদকান্দি সার্কেল) মো. ফয়েজ ইকবাল জানান, পাবলিক রোষাণলে রেদোয়ান আহমেদ থানায় আশ্রয় নিতে আসলে আমরা তাকে আটক করি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি চলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন