শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

জয়-লেখকের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে ধানমন্ডি কার্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতারা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

ছাত্রলীগ সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের অপকর্মের লিখিত অভিযোগ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরে জমা দিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডি রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবস্থান নেয় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির একটি অংশ।
গতকাল ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়ার কাছে সিলগালা করা অভিযোগপত্রটি হস্তান্তর করার কথা থাকলেও তিনি তা গ্রহণ করেননি। ছাত্রলীগ নেতারা জানান, অভিযোগপত্রটি ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের চার নেতার কাছে হস্তান্তর করা হবে।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি কামাল খান বলেন, আমরা অভিযোগপত্রটি ছাত্রলীগের অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তুলে ধরতে চাই, এ জন্য দলীয় প্রধানের কার্যালয়ে এসেছিলাম। কিন্তু আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানালে তা ছাত্রলীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত চার নেতার কাছে হস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত হয়।
অভিযোগ সম্পর্কে কামাল খান বলেন, ‘ছাত্রলীগের দুই কাণ্ডারির স্বেচ্ছাচারিতা, কেন্দ্রীয় নেতাদের অবমূল্যায়ন, সংগঠনবিরোধী কার্যকলাপের বিষয় উল্লেখ করেছি। এ ছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছি।
কামাল খান জানান, অভিযোগপত্রে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নানা অপকর্মের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। অভিযোগপত্রে প্রায় ১০০ কেন্দ্রীয় নেতার সই নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে সংক্ষুব্ধ নেতারা বলেন, আগস্টে জাতীয় শোক দিবসের মাসে কেন্দ্রীয় কমিটি বর্ধিতকরণ, ছাত্রলীগের দুই কাণ্ডারির স্বেচ্ছাচারিতা, কেন্দ্রীয় নেতাদের অবমূল্যায়ন, পদ-বাণিজ্য, প্রেস রিলিজের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই ছাড়া রাতের আঁধারে কমিটি গঠন এসব বিষয় আছে অভিযোগপত্রে।
এ ছাড়াও বিবাহিত, চাঁদাবাজ, মাদকসেবী, ছাত্রদল ও শিবিরকর্মীদের কমিটিতে পদায়ন, সাধারণ সভা না করা এবং সংগঠনের নিয়মভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়াসহ অসংখ্য অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে। আগস্টে জাতীয় শোকের মাসে কেন্দ্রীয় কমিটি বর্ধিতকরণের নামে কোনো প্রকার যাচাই-বাছাই ছাড়াই ৫০০ জনের অধিক কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদায়ন করা হয়েছে। যেখানে বিএনপি-জামায়াত পরিবারের সন্তানদের অন্তর্ভুক্তি ঘটেছে। পদায়িত নেতারা শোকের মাস আগস্টকে ভুলে গিয়ে আনন্দ উল্লাস ও অভিনন্দনে ফেটে পড়েন। যার প্রভাবে তৃণমূল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের এমন কর্মকাণ্ডে নিদারুণভাবে আহতবোধ করেন; যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নেতিবাচক সমালোচনা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ আছে, আগস্টের শুরুতে পাঁচটি জেলা ইউনিটের নতুন কমিটি ও দুটি জেলা ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। যেখানে মন্দির ভাঙার অপরাধে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি এবং ছাত্রলীগ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কৃত একজনকে কুষ্টিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কমিটিতে পদায়ন করা হয়। বরগুনা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইডেন মহিলা কলেজের ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। যোগ্যদের মূল্যায়ন না করে নিজেদের লোক দিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, সম্মেলন আসন্ন বিধায় গঠনতন্ত্রের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে আর্থিক লেনদেন ও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার মাধ্যমে রাতের অন্ধকারে একের পর এক প্রেস রিলিজের মাধ্যমে কমিটি দেওয়া হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সম্মেলন থেকে ফেরার পথে মাদকসহ বিজয়নগর থানা পুলিশ ছাত্রলীগের এক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দুজন সহসভাপতিকে গ্রেপ্তার করে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কোনো সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
এ ছাড়া অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল সংসদের এজিএস ও হল ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফাল্গুনী দাস তন্নীকে মারধর করে মারাত্মক জখম করার অপরাধে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বেনজীর হোসেন নিশি ও সহসভাপতি জেয়াসমিন শান্তার বিরুদ্ধে মামলা হয়। যা বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন। চার বছর চার মাস অতিক্রান্ত হওয়ার পরও কেন্দ্রীয় কমিটির কোনো সাধারণ সভা আহ্বান করা হয়নি এবং এ বিষয়ে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও তারা বিন্দুমাত্র কর্ণপাত করেননি।
এর আগে ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দরপত্র ঘিরে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে সংগঠনের ওই সময়ের সহসভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয়কে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক করা হয়। পরে ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে দুই শীর্ষ নেতাকে ‘ভারমুক্ত’ করে পূর্ণ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ভারপ্রাপ্ত থেকে ভারমুক্ত হওয়ার পর তারা বিলাসী জীবনযাপন শুরু করেন বলে জানিয়েছেন সংগঠনের বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
Kazi Mohammad Rezaul Karim ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:১৮ এএম says : 0
তাদের আসল মুখোশ জাতির সামনে উন্মোচন করা হোক
Total Reply(0)
Nazmul Islam Sowrov ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:১৮ এএম says : 0
নিজেরা নিজেরাই খেলা শুরু কইরা দিলো
Total Reply(0)
salman ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৪:৪৫ এএম says : 0
ai songhoton ta e Sontrashi, ade'r Nishiddo kora uchit, Jati'r Sarthe
Total Reply(0)
Jesan Khandaker ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:১৮ এএম says : 0
যেই নেতারা প্রিয় জয় আর লেখক ভাই এর বিরুদ্ধে যাবে ওরা সবাই বিএনপি-জামায়াত এর এজেন্ট। পুরো সংগঠনও যদি যায়,তাহলে পুরো সংগঠনের সবাই-ই ওদের এজেন্ট। এদের সবাইকেই দল থেকে বহিষ্কার করা উচিৎ। এমন একটা ব্রিফিং এর অপেক্ষায় আছি জয় ভাইর থেকে
Total Reply(0)
Md Kamrul Islam ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:১৮ এএম says : 0
এরাই কিশোর গ্যাং তৈরীর মুল নায়ক
Total Reply(0)
Antara Afrin ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:১৯ এএম says : 0
এটা হবেই কারন গোলাম রব্বানী অনেক ভালো কাজ করে ও ছাত্রলীগের সভাপতি থাকতে পারেনি অনেক দিন এরা ও পারবে না।
Total Reply(0)
Sayed Shoyaib Imtiaz ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:১৯ এএম says : 0
· অবশ্যই ষড়যন্ত্রের স্বীকার হয়েছেন তারা। তীব্র নিন্দা জানাই যারা এই বলিষ্ঠ ২ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন