শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

নেছারাবাদে সাবেক চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে রাতের আধারে পুরাতন লোহার ব্রীজের মালামাল সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

নেছারাবাদ(পিরোজপুর)সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৬ মে, ২০২২, ৬:৩২ পিএম

নেছারাবাদ উপজেলার সমেদয়কাঠি ইউনিয়নে লুকিয়ে রাখা পুরাতন ২১টি লোহার ব্রিজের মালামাল গোপন গোডাউন থেকে রাতের আধারে সরিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কে,এম সবুর তালুকদার তার গোডাউন থেকে নিজের লোকদের মাধ্যমে মালামাল সরিয়ে নিচ্ছেন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। তাদের অভিযোগ জাইকার কাজের সময় জব্দ করা লোহার পুলের মালামাল সবুর তালুকদার ব্যাক্তিগত গোডাউনে লুকিয়ে রেখেছিল। সেই মালামাল সে ধীরে ধীরে বিক্রি করে আসছিল। সর্বশেষ গত রোববার রাতে পুনরায় মালমালগুলো ট্রলার ভারে সরিয়ে নেওয়ার সময় স্থানীয়দের চোখে পড়ে। এসময় তারা ধাওয়া দিয়ে গোডাউনে আসলে ট্রলারটি দ্রুতবেগে পালিয়ে যায়। পরে তারা ওই ঘরে লোহার ভিম,এঙ্গেল দেখে সাংবাদিকদের খবর দেন। খবর পেয়ে স্থানীয় সাংবাদিকরা ইউনিয়নের সাগরকান্দা বাজারে গিয়ে মাহাবুব তালুকদারের ঘরে অবশিষ্ট ভিম, এ্যাঙ্গেল দেখতে পায়। ঘর মালিক মাহাবুব তালুকদার বলেন ওই ঘর সাবেক চেয়ারম্যান সবুর তালুকদারের কাছে ভাড়া দেওয়া।মালামালও সাবেক চেয়ারম্যানের। এব্যপারে তিনি কিছু জানেননা।

ইউনিয়নের ফারুক ফরাজি, ফিরোজ হাওলাদার, ফোরকান হাওলাদার, দুলাল ফরাজিসহ বেশ কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, সবুর তালুকদার চেয়ারম্যান থাকাকালীন এলাকায় জাইকার কাজ চলাকালীন পুরাতন বেশকিছু লোহার ব্রীজের মালামাল এনে তিনি পরিষদে জমা না দিয়ে সাগরকান্দা বাজারে নিজের ব্যক্তিগত গোডাউনে রাখেন। গোডাউন থেকে মাঝেমধ্য সেই মালামাল তিনি ট্রলার ভরে সরিয়েছেন। তিনি চেয়ারম্যান থাকায় সেসময়ে গ্রামের মানুষ তার ভয়ে কথা বলেনি।

ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা মো: সাব্বির তালুকদার বলেন, চুরি করা মাল জাইকার কাজের সময়কার রাস্তার পুরাতন লোহার ব্রীজের। সবকিছু সবুর তালুকদার চুরি করে এতদিন নিজের ব্যক্তিগত গোডাউনে রেখে ছিলেন। গত দু'দিন ধরে তার লোকেরা ট্রলার ভরে চুরি মাল সরাচ্ছিল। সর্বশেষ গত রোববার রাতে তা এলাকাবাসীর চোখে পড়ে। এ সময় কবির তালুকদার তা দেখতে পেয়ে ট্রলার নিয়ে দ্রুত সরে পড়ে। বিষয়টি আমরা চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি।

ইউপি চেয়ারম্যান মো.হুমায়ুন কবির বেপারী অভিযোগ করেন, ২০১১-১২ অর্থ বছরে জাইকার অর্থায়নে সমুদয়কাঠি ইউনিয়নের সেহাংগল বুদ্ধির বাজার থেকে সাগরকান্দা হয়ে জিনুহার পর্যন্ত সড়কের ২১টি ব্রিজ কালভার্ট নির্মানের কাজ করে এলজিইডি। সে সময়ে, ব্রিজগুলোর মালামাল জব্দ তালিকা করা হয়। এলজিইডি এর পক্ষ থেকে যাহা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সবুর তালুকদার কে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। চেয়ারম্যান ওই মালামাল ইউনিয়ন পরিষদের গোডাউনে সামান্য রেখে বাকী মালামাল তার নিজের হেফাজতে নিয়ে যায়। এর পর থেকে ওইসব মালামালের কোন খোজ মিলেনি। পাওয়া যায়নি।

অভিযুক্ত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কেএম সবুর তালুকদার অভিযোগ অনেকটা অস্বীকার করে বলেন, সাগরকান্দা থেকে কোন মালামাল ট্রলারে করে তিনি বা তার লোকজন নেননি। তিনি বলেন জাইকার কাজের সময় যে মালামাল তিনি বুঝে পেয়েছেন তা দিয়ে এলাকার ব্রিজ করা হয়েছে। বাকী মালামাল পরিষদে রয়েছে। যাহা তালিকা করে চার্জ দেওয়ার সময় বর্তমান চেয়ারম্যান হুমাউন বেপারীকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। মাহাবুব তালুকদারের ঘরে রাখা মালামাল আমার নিজের কেনা। এছাড়া ঘরে মাত্র দু'একটি নষ্ট ভীম আছে। যাহা চেয়ারম্যানকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া আমার বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্র।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. তৌফিক আজিজের সাথে কথা বললে তিনি জানান ইউএনও সাহেব তাকে বিষয়টি দেখার জন্য বলেছেন। ২০১১-১২ জাইকার কাজে সব নথিপত্র গোডাউনে চলে গেছে। যাহা বের না করে সঠিক করে কিছু বলা যাবেনা। নথিপত্র ঘেটে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে ইউএনও মো. মোশারেফ হোসেন বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত নথি দেথে রিপোর্ট করার জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে বলা হয়েছে। তিনি রিপোর্ট দিলে অইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সে পর্যন্ত মালামাল বর্তমান চেয়ারম্যান তার নিজের জিম্মায় নিয়ে নিবেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন