রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

রাসূল-অবমাননার পরিণাম

আল্লামা ইহসান ইলাহী জহির | প্রকাশের সময় : ১২ জুন, ২০২২, ১২:০০ এএম

একজন মুমিনের কাছে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সম্মান ও মর্যাদা দুনিয়ার যাবতীয় সম্পদ ও সম্পর্ক থেকে অধিক মূল্যবান হতে হবে।
রাসূলের অবমাননা ও বিরুদ্ধাচরণের বিষয়ে কোনো ঈমানদার আপস করতে পারেন না। কারণ রাসূলের বিরুদ্ধাচরণকারীদের সম্পর্কে কোরআন মাজীদ কঠিন ভাষা ব্যবহার করেছে। সূরা মুজাদালায় (আয়াত : ২২) আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে তারা চরম লাঞ্ছিতদের অন্তর্ভুক্ত হবে। আল্লাহ সিদ্ধান্ত করেছেন, অবশ্যই আমি বিজয়ী হব এবং আমার রাসূলগণও। নিশ্চয়ই আল্লাহ শক্তিমান, পরাক্রমশালী।

‘তুমি পাবে না আল্লাহ ও আখিরাতে বিশ্বাসী কোনো সম্প্রদায়কে, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধাচরণকারীদের ভালোবাসে, যদিও এই বিরুদ্ধাচরণকারীরা হয় তাদের পিতা, পুত্র, ভাই কিংবা জ্ঞাতি-গোত্র। ওদের অন্তরে আল্লাহ ঈমানকে সুদৃঢ় করেছেন এবং তাদেরকে শক্তিশালী করেছেন তাঁর পক্ষ হতে ‘রূহ’ দ্বারা।’
সূরাতুল কাউসারের শেষ আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘নিঃসন্দেহে তোমার শত্রুই হবে নির্বংশ।’ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সাথে শত্রুতা ও বিদ্বেষ পোষণকারীদের অবস্থা এবং এদের বিষয়ে মুমিন-মুসলমানের অবস্থান বোঝার জন্য এ দুটি আয়াতই যথেষ্ট।

রিসালাত-অবমাননার শাস্তি সম্পর্কে সবার আগে যে কথাটি স্পষ্টভাবে বলতে চাই তা এই যে, এটি কোনো ইজতিহাদী মাসআলা নয়; বরং কোরআন-সুন্নাহর দ্বারা সুপ্রমাণিত ও সুস্পষ্ট একটি বিষয়। কোরআন মজীদের একাধিক আয়াত থেকে পরিষ্কার বোঝা যায় যে, রাসূলে কারীম (সা.)-এর শানে বেয়াদবির শাস্তি দুনিয়াতে মৃত্যুদণ্ড। আর আখেরাতে জাহান্নামের আযাব।

এ প্রসঙ্গে সূরা ফুরকানের কয়েকটি আয়াত তুলে ধরছি। আল্লাহ তাআলা বলেন, এবং যালিম সেদিন নিজের দুই হাতে দংশন করবে এবং বলবে, হায়! আমি যদি রাসূলের সাথে একই পথ অবলম্বন করতাম! হায় দুর্ভোগ আমার! আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম। সে তো আমাকে বিভ্রান্ত করেছিল আমার নিকট উপদেশ পৌঁছার পর। আর শয়তান তো মানুষের জন্য মহাপ্রতারক। (সূরা ফুরকান : ২৭-২৯)

হাদীসের কিতাবে আছে যে, উবাই ইবনে খালাফের প্ররোচনায় উকবা ইবনে আবী মুয়াইত রাসূলে কারীম (সা.)-এর শানে গোসতাখি করেছিল। তখন রাসূলে কারীম (সা.) তাকে সতর্ক করেছিলেন যে, মক্কার বাইরে তোমাকে পেলে তোমাকে হত্যা করব। বদরের যুদ্ধে রাসূলে কারীম (সা.) তাকে বন্দি অবস্থায় হত্যা করেছিলেন।

অন্য আয়াতে যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে এবং পৃথিবীতে অশান্তি ও অরাজকতা সৃষ্টি করে তাদের শাস্তি ঘোষণা করে বলা হয়েছে, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে বেড়ায় তাদের শাস্তি এটাই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শূলে চড়ানো হবে। অথবা বিপরীত দিক হতে তাদের হাত-পা কেটে ফেলা হবে। অথবা দেশ হতে নির্বাসন দেওয়া হবে। এটা তাদের পার্থিব লাঞ্ছনা আর পরকালে তো তাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি। (সূরা মায়েদা : ৩৩)

ওই ব্যক্তির চেয়ে অধিক অশান্তি সৃষ্টিকারী আর কে হতে পারে, যে রাসূলে কারীম (সা.)-এর শানে গোসতাখি করে? আল্লাহ তাআলা আরো বলেন, তারা যদি চুক্তি সম্পন্ন করার পর নিজেদের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করে এবং তোমাদের দ্বীনের নিন্দা করে তাহলে তোমরা কাফির-সর্দারদের সাথে যুদ্ধ কর। এরা এমন লোক, যাদের প্রতিশ্রুতির কোনো মূল্য নেই। যেন তারা নিবৃত্ত হয়। (সূরা তাওবা : ১২)।

এই আয়াত স্পষ্ট ঘোষণা করে যে, দ্বীনের নিন্দা হত্যাযোগ্য অপরাধ। সুতরাং যে রাসূলের নিন্দা-সমালোচনা করে তার শাস্তি মৃত্যুণ্ড। তার সাথে মুসলমানদের কোনো চুক্তি বা অঙ্গিকার থাকলে রাসূল-অবমাননার কারণে তা বাতিল হয়ে যায়।
হাদীসের কিতাবে এমন অনেক ঘটনা আছে যে, স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (সা.) রিসালত-অবমাননাকারীকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন। এ থেকেও প্রমাণ হয় যে, রিসালাত-অবমাননার দুনিয়াবী সাজা মৃত্যুদণ্ড।

তাওবার দ্বারা কি রিসালাত-অবমাননার সাজা মওকুফ হতে পারে? এর উত্তর এই যে, খাঁটি তাওবা মানুষকে আখিরাতের আযাব থেকে মুক্তি দিবে। কিন্তু অন্যান্য অপরাধের মতো রাসূল-অবমাননার অপরাধ যখন আদালত পর্যন্ত গড়ায় কিংবা জনসাধারণের মাঝে প্রচারিত হয়ে যায় তখন তার শাস্তি মওকুফের অবকাশ নেই। সত্য বা মিথ্যা তাওবার দ্বারা যদি ব্যভিচার, মিথ্যা অপবাদ, চুরি, মদ্যপান ও হত্যার শাস্তি মওকুফ না হয় তাহলে এসবের চেয়েও গর্হিত ও মারাত্মক অপরাধ রিসালাত-অবমাননার শাস্তি শুধু তাওবা দ্বারা কীভাবে মওকুফ হতে পারে?

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (12)
Ahmed Syed J ১২ জুন, ২০২২, ৬:৫৪ এএম says : 0
নেতা হিসাবে একজনকেই মানি! তিনি হচ্ছেন ১৮০ কোটি মুসলমানের কলিজার টুকরা বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ???? রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর নামে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছে যারা ধ্বং-স হোক তারা.!
Total Reply(0)
Moktur Hq ১২ জুন, ২০২২, ৬:৫৪ এএম says : 0
#আমাদের নবী আমাদের সম্মান। #আমাদের নবী আমাদের পরিচয়। #আমাদের নবী আমাদের মর্যাদা। #আমাদের নবী আমাদের নেতা। #আমাদের নবী আমাদের ঈমান। #আমাদের নবী আমাদের জীবন। #আমাদের নবী আমাদের ভালবাসা। #আমরা মুসলিমরা কখনোই আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর অপমান সহ্য করব না
Total Reply(0)
Rubel Ahamed ১২ জুন, ২০২২, ৬:৫৪ এএম says : 0
বাংলাদেশের প্রতিটি জনপদ আজ নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবার শ্লোগানে প্রকম্পিত
Total Reply(0)
Nahel Tuhin ১২ জুন, ২০২২, ৬:৫৬ এএম says : 0
নবীর অসম্মান কোন মুসলমান মেনে নিতে পারেনা।
Total Reply(0)
Abdul Ali ১২ জুন, ২০২২, ৬:৫৭ এএম says : 0
কোন ধর্ম কে নিয়ে বা ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে কটুক্তি করা কিংবা রাসুল ( সাঃ) নিয়ে কুটুক্তি করা কোন সভ্য মানুষের কাজ নয়। যারা সমাজে হিংসা,ঘৃনা বিদ্বেষ ছড়াতে চায় এটা তাদের কাজ। সব ধর্মের সব মানুষের এসব নিন্দিত কাজকে ঘৃনা করা, প্রতিবাদ জানানো উচিত।হীনমন্য, ছোট মনের মানুষ ছাড়া সবাই এসব ঘৃনা করছে সে যে ধর্মেরীই হোক না কেন।এ ধরনের কাজকে আপনি ঘৃনা না করলে নিরুৎসাহিত না করলে সমাজে অশান্তি সৃষ্টি হবে। তাই আসুন সব ধর্মের সম্মান রক্ষা করি, কে কারো ধর্মিয় বিশ্বাসে আঘাত না করি। এ জগন্য নোংরা কাজের ঘৃনা জানিয়ে নিজেকে মানুষ পরিচয় দি।
Total Reply(0)
Dr. Mohammad Ziaul Hoque ১২ জুন, ২০২২, ৮:২৪ এএম says : 0
বাংলাদেশের সংসদ সদস্যরা বসে বসে কি আঙ্গুল চুষছে ? অনির্বাচিত সরকার যে সংখ্যাগরিষ্ঠের প্রতিনিধিত্ব করে না তার প্রমান হল মহানবীজির (সা:) কটূক্তি হিন্দুস্তানের হজম বটিকার মত হজম করা। সারাদেশের মুসলিম জনতা এই কটূক্তির প্রতিবাদ করলেও ইসলাম ধর্ম-বিদ্বেষী তথাকথিত প্রগতিশীল এবং ভারতমুখী মহল মুখে কুলুপ দিয়ে বসে আছে। এর কারণ : ভারতের ইসলাম-উৎখাতকামী উগ্র মৌলবাদী হিন্দু শক্তির পূজারীরা ও ভারতের দাসত্ব-পিয়াসী বাংলাদেশের মির্জাফররা ও নাস্তিক্যবাদী শক্তি একই লক্ষে কাজ করছে।
Total Reply(0)
masrur sikder ১২ জুন, ২০২২, ৯:৩২ এএম says : 0
পৃথিবীর প্রতিটি মুসলমানের জন্য উচিত নবী করীম সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা, এবং মহব্বত করা।
Total Reply(0)
masrur sikder ১২ জুন, ২০২২, ৯:৩৪ এএম says : 0
পৃথিবীর প্রতিটি মুসলমানের জন্য উচিত নবী করীম সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা, এবং মহব্বত করা।
Total Reply(0)
masrur sikder ১২ জুন, ২০২২, ৯:৩৪ এএম says : 0
পৃথিবীর প্রতিটি মুসলমানের জন্য উচিত নবী করীম সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা, এবং মহব্বত করা।
Total Reply(0)
Rawnak Jahan ১২ জুন, ২০২২, ১০:২১ এএম says : 0
যে জীবনের মধ্যে নবী (সাঃ) ভালবাসা নেই, প্রেম নেই সে জীবনের আল্লাহর কাছে কোন মুল্য নেই, হোক সে মুসলিম। তাই আসুন আমরা নবী (সাঃ) এর দলভুক্ত হই।
Total Reply(0)
Abdul Wahab ১২ জুন, ২০২২, ১১:৪৬ এএম says : 0
Sabiluna Sabiluna AL QITAL AL QITAL. Badorer Hatiar Gorje uthuk bar bar. LILLAHE TAQBIR ALLAHU AKBAR.
Total Reply(0)
شفيع اقبال ১২ জুন, ২০২২, ৬:২৮ পিএম says : 0
لأنهم الله الذين يسببون الله ورسوله صل الله عليه وسلم
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন