পদ্মার পানিবৃদ্ধির কারণে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি চলাচলে ধীরগতি থাকায় দৌলতদিয়া ঘাটে প্রায় ৫ কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রী ও চালকরা। আটকে থাকা এসব যানবাহনের মধ্যে রয়েছে অর্ধশতাধিক যাত্রীবাহী বাস ও পাঁচ শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক।
শুক্রবার (২৪ জুন) সকাল সাড়ে ৭টায় দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে সরেজমিনে দেখা যায়, পদ্মায় তীব্র স্রোত বইছে। স্রোতের তোড়ে ঘাটে ফেরি ভিড়তে পারছে না। ফেরিতে লোড-আনলোড সময় বেশি লাগছে। এ কারণে ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে তীব্র যানজট তৈরি হয়েছে।
সরেজমিনে জানা যায়, ঘাট এলাকায় যানজট কমাতে ঘাট থেকে সাড়ে ১৩ কিলোমিটার পেছনে গোয়ালন্দ মোড় থেকে রাজবাড়ীর দিকে কল্যাণপুর বাজার পর্যন্ত আরও দুই কিলোমিটার এলাকায় অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাকগুলোকে আটকে রেখেছে পুলিশ। এসব ট্রাক গতকাল বিকেলের পর থেকে সেখানে আটকে রয়েছে। দীর্ঘ সময় মহাসড়কে আটকে থেকে তাদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছেছে। খাবার, পানি ও শৌচাগারের প্রয়োজনে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পরিবহনশ্রমিক ও চালকরা।
যশোর থেকে ছেড়ে আসা পণ্যবাহী ট্রাকচালক শহিদুল ইসলাম বলেন, গতকাল সন্ধ্যা থেকে গোয়ালন্দ মোড়ে এসে আটকে রয়েছি। সকাল হলেও এখন পর্যন্ত ঘাট এলাকায় যেতে পারলাম না। যেখানে আটকে ছিলাম, আশপাশে খাবার হোটেল ও শৌচাগার না থাকায় রাতে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। আর কতক্ষণ এভাবে আটকে থাকতে হয় কে জানে।
দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের কাছে আটকে থাকা ট্রাকের শ্রমিক আকবর শেখ বলেন, শুনলাম পদ্মার পানি বাড়াতে তীব্র স্রোতে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ঘাটে যেসব ফেরি রয়েছে, তার একটারও ফিটনেস নেই। ইঞ্জিনের ক্ষমতাও কমে গেছে। ৩০ থেকে ৪০ বছর আগেকার ফেরি জোড়াতালি দিয়ে চালাচ্ছে। ফলে তীব্র স্রোতের কারণে এসব ফেরি ঠিকমতো চলতে পারছে না। ঘাটে ভিড়তে সময় বেশি লাগছে। আর ভোগান্তি পড়ছি আমরা।
ইসমাঈল কাজী নামের এক ট্রাকচালক জানান, ১৪ ঘণ্টা হয়ে গেল ফেরির জন্য মহাসড়কে অপেক্ষা করছি। মাল নিয়ে যাব গাজীপুরে। আজ ১২টায় মাল ডেলিভারি দেওয়ার কথা। সঠিক সময়ে দিতে পারব বলে মনে হয় না।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক প্রফুল্ল চৌহান বলেন, পদ্মায় পানিবৃদ্ধির কারণে তীব্র স্রোত সৃষ্টি হওয়ায় ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। ফেরির ধীরগতির কারণে ফেরির সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। এতে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় যানবাহনের সিরিয়াল তৈরি হচ্ছে।
তবে দুর্ভোগ কমাতে যাত্রীবাহী যানবাহন ও কাঁচামালের ট্রাকগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করা হচ্ছে। বর্তমানে এ নৌপথে ছোট-বড় ১৮টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন