রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

যিলহজ্ব ও যিলহজ্বের প্রথম দশক-২

মুহাম্মাদ আশিক বিল্লাহ তানভীর | প্রকাশের সময় : ৪ জুলাই, ২০২২, ১২:০০ এএম

যিলহজে¦র প্রথম দশকে রয়েছে ‘ইয়াওমে আরাফা’। যিলহজ্বের নয় তারিখের এই দিনে হাজী ছাহেবান আরাফার ময়দানে উকূফ (অবস্থান) করেন। পবিত্র হজ পালনের একটি ফরজ বিধান হচ্ছে ‘উকূফে আরাফা’ তথা আরাফায় অবস্থান করা এবং হজের মূল দিন হচ্ছে যিলহজে¦র নয় তারিখ ‘ইয়াওমে আরাফা’। এ দিনে বান্দার দিকে রবের রহমতের জোয়ার প্রবলবেগে ধাবিত হয়। অসংখ্য বান্দাকে তিনি এ দিনে ক্ষমা করে দেন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে জান্নাতের ফয়সালা করে দেন। উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন : আরাফার দিনের মতো আর কোনো দিন এত অধিক পরিমাণে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেয়া হয় না। আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার নিকটবর্তী হন এবং বান্দাদের নিয়ে ফিরিশতাদের নিকট গর্ব করেন। আল্লাহ বলেন, কী চায় তারা? (সহীহ মুসলিম : ১৩৪৮)। অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা তাঁর বান্দাদের ক্ষমা করার জন্য এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেয়ার জন্য ফিরিশতাদের এভাবে বলতে থাকেন।

এ দিনে আল্লাহ তাআলা নাযিল করেছেন কুরআনে কারীমের সর্বশেষ আয়াত : আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করলাম এবং তোমাদের প্রতি আমার নিআমত পরিপূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন মনোনীত করলাম। (সূরা মায়েদা : ৩)।

হাদিসের কিতাবে হযরত উমর রা.-এর সুন্দর একটি ঘটনা বিবৃত হয়েছেÑ একবার এক ইহুদি হযরত উমর রা.-এর নিকট এসে বলল, আমীরুল মুমিনীন! আপনারা আপনাদের কিতাব থেকে একটি আয়াত তিলাওয়াত করে থাকেন। এমন কোনো আয়াত যদি আমাদের ইহুদিদের প্রতি নাজিল হতো তাহলে আমরা আয়াত নাজিলের সেই দিনটিকে ঈদ হিসেবে গ্রহণ করতাম।

হযরত উমর রা. জিজ্ঞাসা করলেন, কোন্ সে আয়াত? বলল, আয়াতটি হচ্ছে : আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করলাম এবং তোমাদের প্রতি আমার নিআমত পরিপূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন মনোনীত করলাম। (সূরা মায়েদা : ৩)।

হযরত উমর রা. একথা শুনে বললেনÑ আল্লাহর কসম, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ওপর কোন্ দিন কোন্ সময় কোন্ স্থানে এ আয়াত নাজিল হয়েছেÑ তা আমি জানি। জুমার দিন সন্ধ্যায় এ আয়াত নাজিল হয়েছে। নবীজী তখন আরাফায় অবস্থান করছিলেন। (দ্রষ্টব্য : সহীহ বুখারী, হাদিস ৪৫, ৪৪০৭, ৪৬০৬, ৭২৬৮)। তো আল্লাহ তাআলা এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি আয়াত এ দিনে নাজিল করেছেন।

এ দিনের ব্যাপারে যেভাবে মাগফিরাতের ঘোষণা এসেছে তেমনি হাদিসে এ দিনের রোযার ব্যাপারেও এসেছে বিশেষ ফজিলতের কথা। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন : আরাফার দিনের (নয় যিলহজ্বের) রোযার বিষয়ে আমি আল্লাহর কাছে প্রত্যাশা রাখি যে, তিনি পূর্বের এক বছরের এবং পরের এক বছরের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। Ñসহীহ মুসলিম, হাদিস ১১৬২

হাদিসে এ দিনের দুআকেও শ্রেষ্ঠ দুআ আখ্যা দেয়া হয়েছে। নবীজী বলেন : শ্রেষ্ঠ দুআ (ও যিকির) হচ্ছে আরাফার দুআ। এ দিনের দুআ-যিকির হিসেবে সর্বোত্তম হলো ঐ দুআ, যা আমি এবং আমার পূর্ববর্তী নবীগণ করেছেন। তা হলো : ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু আ শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর’। (জামে তিরমিযী : ৩৫৮৫)।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন