স্টাফ রিপোর্টার : প্রায় এক যুগ পর দখলমুক্ত হলো রাজধানীর শ্যামলীর শিশু বিনোদন কেন্দ্র শিশুমেলা। দখলমুক্ত শিশুমেলাটি শিগগিরই জানসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। একের পর এক মামলা আর রিটের কারণে আমরা পার্কটির দখলে যেতে পারিনি। কিন্তু এখন আমাদের পক্ষে রায় আসায় পার্কটি দখলে নিয়েছি। রাজধানীর শ্যামলী শিশুমেলা পার্কটি ডিএনসিসি দখলে নেওয়ার পর গতকাল শনিবার দুপুরে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুল হক সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
গতকাল শিশুমেলার বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন করা এবং দুটি প্রবেশপথ সিলগালা করার মাধ্যমে দখলমুক্ত করে ডিএনসিসি পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত। এতে নেতৃত্ব দেন ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সাজিদ আনোয়ার।
উচ্ছেদকালে ডিএনসিসির মেয়র আনিসুল হক বলেন, যারা এভাবে এতকাল শিশুমেলা অবৈধ দখলে রেখেছিল, তাদেরকে দুর্বৃত্ত বলা যায়। তিনি আশ্বাস দেন, ডিএনসিসির তত্ত¡াবধানে শিশুমেলা পুনরায় খুলে দেওয়া হবে। এছাড়া রাজধানীতে আরো তিনটি পার্ক চালু করা হবে। আগামী দু’বছরের মধ্যে অর্ধশত পার্ক ও বিনোদনকেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে বলেও তিনি জানান। সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর শ্যামলীতে মিরপুর রোড এবং আগারগাঁওমুখী সড়কের সংযোগস্থলে শিশুপার্ক নির্মাণ করে পরিচালনার জন্য পূর্ত মন্ত্রণালয় তৎকালীন ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের কাছে ১৯৮৫ সালের ১৫ অক্টোবর ১.৪০ একর জমি হস্তান্তর করে। ২০০২ সালের ১৯ ফেব্রæয়ারি ঢাকা সিটি কর্পোরেশন ভায়া মিডিয়া বিজনেস সার্ভিসেস’র কাছে নিজ খরচে আধুনিক খেলার যন্ত্রাংশ স্থাপনের শর্তে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৭৫৬ টাকা মূল্যে তিন বছরের জন্য ইজারা দেয়।
মেয়াদ শেষে ২০০৫ সালে ইজারা নবায়নের জন্য পত্র প্রেরণ সত্তে¡ও ইজারাদার প্রতিষ্ঠান ইজারা নবায়নের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ফলে ইজারা বাতিল করে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু উচ্চতর আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি। সেই থেকে ইজারাদার ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনকে কোনো প্রকার অর্থ প্রদান ব্যতিরেকে এতকাল শিশুমেলা পরিচালনা করে আসছিল।
উল্লিখিত রিট নিষ্পত্তি শেষে ২০০৯ সালে আবারও উচ্চতর আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করা হয়। বিদ্যমান মামলাটি শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত আছে, তবে উচ্চতর আদালতের পক্ষ থেকে কোনো নিষেধাজ্ঞা বা স্থগিতাদেশ নেই। এ প্রেক্ষাপটে গতকাল শনিবার এ উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
উচ্ছেদকালে অন্যান্যের মধ্যে ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আনোয়ারুল ইসলাম, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ কুদরতুল্লাহ, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম, আইন কর্মকর্তা এসএম মাসুদুল হক, মহাব্যবস্থাপক (পরিবহন) লে. কর্নেল এম এম সাবের সুলতান, অঞ্চল-৫ এর নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম অজিয়র রহমান, ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ ফোরকান হোসেনসহ ডিএনসিসির কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন