খুলনার কয়রায় কপোতাক্ষ নদে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের দুর্বল বেড়িবাঁধ ভেঙে পাঁচ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। রোববার ভোরে ভাটার সময় ভাঙন শুরু হয়। দুপুরের ভরা জোয়ারে তা প্রকট আকার ধারণ করে। বেড়িবাঁধের প্রায় ৩শ’ মিটার ভেঙে নদীতে তলিয়ে গেছে । এদিকে, ভাঙনের ফলে দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের পাঁটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে মাছের ঘের ও ফসলী জমি। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছেন পাঁচ গ্রামের ৩০ হাজার মানুষ। এদিকে, সকাল থেকেই পানি উন্নয়ন বোর্ড রিং বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে ভাঙন ঠেকাতে কাজ করছে বলে জানা গেছে। এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে এ কাজে যুক্ত রয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৪/১ নং পোল্ডারের চরামুখা নামক স্থানে কপোতাক্ষ নদের তীরবর্তী বেঁড়িবাঁধে ভাঙন শুরু হয়। অনেক দিন ধরে ওই স্থানে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। বেঁড়িবাঁধ মেরামতের জন্য এলাকাবাসী গত কয়েক দিন ধরে স্বেচ্ছায় কাজ করেছে। কিন্তু ভোরে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে যায় এবং দুপরের জোয়ারে শেষ পর্যন্ত আর পানি আটকানো সম্ভব হয়নি।
বেঁড়িবাঁধ মেরামতের বিষয়ে জানতে চাইলে পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পূর্ব) মশিউল আবেদীন বলেন, বাঁধটি অনেক দুর পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, চাইলেও দ্রুত মেরামত বা সংস্কার সম্ভব নয়। নদীতে জোয়ারের পানি না কমলে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। আমরা রিংবাঁধ দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করছি।
কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, প্লাবিত এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য সার্বিক সহযোগিতা করতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং সেই সঙ্গে দ্রুত বাঁধ মেরামতের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য খোকন সরদার বলেন, রাতে চরামুখা গ্রামের খালের গোড়ায় ২শ’ মিটার জায়গা জুড়ে ভাঙ্গন দেখা দিলে সকাল থেকে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে এলাকাবাসী মিলে মেরামতের কাজ করতে থাকি। তবে পুরো জায়গা মেরামত করতে না পারায় দুপুরের জোয়ারে বাঁধ আরো ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে। পানি প্রবেশ করার কারনে বাধেঁর ভাঙন বড় হয়ে গেছে। সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য রশিদা খানম বলেন, রাতের ভাটিতে বাঁধ ভেঙে যায় কিন্তু লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেনি। সকাল ধরে এলাকার সবাইকে নিয়ে বাঁধ নির্মাণ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। দুপুরের জোয়ারে চোরামুখা, ঘড়িলাল, সরদারপাড়া, মাটিয়াভাঙা ও পাতাখালি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। রাতের জোয়ারে দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের আরও অনেক গ্রাম প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আঃ ছালাম বলেন, জোয়ারে পানি অত্যধিক বৃদ্ধি পাওয়ায় পানি প্রবেশের ফলে ভাঙ্গনের পরিধি বেড়ে গেছে। তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহন করা না গেলে ব্যাপক ক্ষতি সম্মুখিন হতে হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন