বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

সৌরজগতের ছবি ও কোরআনের ভাষ্য-২

মুফতী মাসুম বিল্লাহ | প্রকাশের সময় : ১৮ জুলাই, ২০২২, ১২:০১ এএম | আপডেট : ১২:০৮ এএম, ১৮ জুলাই, ২০২২

বিজ্ঞানীদের মতে, ২৪ ঘণ্টার ছয় দিনে এই মহাবিশ্ব মোটেও সৃষ্টি হয়নি। বরং তা কোটি কোটি বছর যাবৎকালের জটিল ভৌত ও রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় সৃষ্ট হয়েছে। অর্থাৎ, আধুনিক বিজ্ঞানের মতে, এই মহাবিশ্ব, আমাদের সৌরজগৎ, গ্রহ-নক্ষত্র ইত্যাদি কোটি কোটি বছর সময়কাল পর সৃষ্টি হয়েছে। অথচ, কোরআনে বলা হয়েছে, মহাকাশ ও পৃথিবী মাত্র ছয় দিনে সৃষ্টি করা হয়েছে। আমি নভোমণ্ডল, ভূমণ্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু ছয় দিনে সৃষ্টি করেছি এবং আমাকে কোনোরূপ ক্লান্তি স্পর্শ করেনি। (সূরা ক্বাফ : ৩৮)।

প্রথমত, মহান আল্লাহ তাআলা যা বলেছেন, তা নিঃসন্দেহে সত্য ও সঠিক। ছয় দিন বলেছেন, ছয় দিনই সঠিক। তাতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। তদুপরি, দিন এর উদ্দেশ্য কি তা বিভিন্ন হতে পারে! বর্তমান দিন হতে পারে, জ্যোতির্বিজ্ঞান এর দিন হতে পারে। তা আল্লাহ তাআলা ভালো জানেন। ড. মরিস বুকাইলি তার বিখ্যাত ‘বাইবেল, কোরআন ও বিজ্ঞান’ বইতে উপযুক্ত বিষয়টি সবিস্তারে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আরবিতে ‘দিন’ বোঝাতে যে শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে- তা হচ্ছে, ‘আইয়্যাম’। ‘আইয়্যাম’ শব্দটি আরবি ‘ইয়াওম’ শব্দের বহুবচন।
‘ইয়াওম’ শব্দের অর্থ ‘দিন’। এটি হতে পারে ২৪ ঘণ্টার একেকটি দিন, আবার হতে পারে ২৪ ঘণ্টার চেয়ে বেশি দীর্ঘ বা সুদীর্ঘ সময়। ‘ইয়াওম’ এর বহুবচন হিসেবে ‘আইয়্যাম’ এর অর্থ দাঁড়ায়, ‘দিনসমূহ’, যা কমপক্ষে তিন দিন থেকে শুরু করে সুদীর্ঘকালের সমষ্টি হতে পারে। ‘আইয়্যাম’ শব্দের অর্থ: যুগ হিসেবেও ব্যাপক প্রচলিত। যেমন : বলা হয়, ‘আইয়্যামে জাহিলিয়্যাহ’ তথা অজ্ঞতার যুগ। এখান থেকে দেখা যাচ্ছে, ‘আইয়্যাম’ শব্দটি আরবিতে সুদীর্ঘ সময় নির্দেশ করে।

আর মহাবিশ্ব ও পৃথিবী ছয়টি সুদীর্ঘ সময়ের মেয়াদে সৃষ্টি হয়েছেÑ এমন মন্তব্য বিজ্ঞানের সাথে অসামঞ্জস্য সৃষ্টি করে না। কোরআনে দিন শব্দটি বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। ‘দিন’ শব্দটি সময়ের বিভিন্ন দৈর্ঘ্যকে নির্দেশ করে বিভিন্ন আয়াত উপস্থাপিত হয়েছে। (উইকিপিডিয়া)

আমরা দেখতে পাই, কোনো ঘটনার পেছন দিকে অসীম সময় পর্যন্ত যাওয়া যায় না। সুতরাং মহাবিশ্ব কখনই অসীম সময় পর্যন্ত ছিল না, মহাবিশ্ব সসীম। সুতরাং মহাবিশ্বের একটি সূচনা রয়েছে। কেউ একজন আছেন, যিনি মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন। যিনি সৃষ্টি করে তাকে সুসামঞ্জস্য করেছেন। যিনি পরিমাণ নির্ধারণ করে দিয়ে পথ দেখিয়েছেন। (সূরা আ’লা : ১-৩)

যাহোক, এগুলো সবই হচ্ছে স্রষ্টাকে অস্বীকার করার জন্য নানা অজুহাত। মহাবিশ্বের যে সৃষ্টি হয়েছে, সেটার কোনো সঠিক ব্যাখ্যা বিজ্ঞানীরা দিতে পারছেন না। আবার একই সাথে মানতে পারছেন না যে, স্রষ্টা বলে কেউ আছে। একজন বিজ্ঞানীর স্রষ্টায় বিশ্বাস করা মানে ভয়ঙ্কর ব্যাপার। সে বিজ্ঞানী মহলের দুই-তৃতীয়াংশের কাছে হাসির পাত্র হয়ে যাবে। তার প্রজেক্টগুলোর ফান্ডিং হুমকির মুখে পড়বে। তার ক্যারিয়ার অনিশ্চিত হয়ে যাবে। তাহলে কী করা যায়? ‘কোয়ান্টাম ভ্যাকুয়াম’ নামের এক মহাজটিল অস্তিত্ব জন্ম দেই। তাহলে বেশ কিছুদিন এটা নিয়ে মানুষকে ঘোল খাওয়ানো যাবে।

অতএব, ওদের এসব তথ্যের পেছনে না পড়ে, মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তাআলা এর দিকে ধাবিত হলে উপকার হবে, ইনশাআল্লাহ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (5)
N Islam ১৮ জুলাই, ২০২২, ১২:৫০ এএম says : 0
আপনার লেখা পড়লে মনে হয়, বৈজ্ঞানিক গবেষণার কোন প্রয়োজন নেই । আপনি অহেতুক কুরআন শরীফ ও বিজ্ঞানকে বিপরীতমুখী করে দাঁড় করাচ্ছেন । বিজ্ঞানীরা যে বিগ ব্যাং বা মহা বিস্ফোরনের কথা বলছেন, তা কি কুরআন শরীফের সাথে সাংঘর্ষিক ? বিজ্ঞানীরা বলছেন একটি বিন্দু থেকে মহা বিস্ফোরন তথা বিগব্যাং-এর মাধ্যমে মহাবিশ্ব সৃষ্টি হয়েছে । তারা কিন্তু মহাবিশ্বকে অসীম বলছেননা, বরং বলছেন যে, এটা ক্রমাগত সম্প্রসারিত হচ্ছে । একসময় এটি সংকুচিত হতে থাকবে এবং অবশেষে ধ্বংস হয়ে যাবে । আর কুরআন বলছে, আল্লাহ্ শূণ্য থেকে মহাবিশ্ব সৃষ্টি করেছেন । প্রথমে স্থল, জল সবকিছু জমাট-বাঁধা অবস্থায় ছিলো, আল্লাহ্ সেসব পৃথক করে দিয়েছেন । বিজ্ঞানীরা প্রথমে ধারনা করে গবেষণায় নিয়োজিত হন, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে তারা নিশ্চিত সিদ্ধান্তে উপনীত হন, তখন সেটাকে বিজ্ঞান বলে । তাঁদের অনেক ধারনাই কিন্তু গবেষণার পর পাল্টে যায় । আপনাকে মনে রাখতে হবে, ডারউইনের "বিবর্তনবাদ" কিন্তু বিজ্ঞান নয়, এটি তার কল্পনাপ্রসূত একটি মতবাদ মাত্র, যেটা পৃথিবীর প্রায় কোন বিজ্ঞানীই বিশ্বাস করেননা, আমাদের দেশের কিছু তথাকথিত বিজ্ঞানমনস্ক লেজেগোবড়ে চেতনাধারীদের লেকচারে এই মতবাদের কথা শুনতে পাবেন, যারা বিজ্ঞান বুঝারও চেষ্টা করেনা, ইসলামের পিছনে লাগাই তাদের একমাত্র কাজ ।
Total Reply(0)
Md Parves Hossain ১৮ জুলাই, ২০২২, ৬:২০ এএম says : 0
সবচেয়ে বড় কথা হলো বিজ্ঞান স্হির নয়, বিজ্ঞান দিন দিন নতুন নতুন তথ্য দিবে, সময়ের সাথে সাথে একেক কথা বলবে। বিজ্ঞানের কথার উপর ১০০% বিশ্বাস ধারণ করার যুক্তি নাই।
Total Reply(0)
Antara Afrin ১৮ জুলাই, ২০২২, ৬:২১ এএম says : 0
আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা এই মহা বিশ্বের সৃষ্টির শুরুতে যে তারকা গুলো সৃষ্টি করেছেন তার আলো এখনও পৃথিবীতে পৌঁছানি । আর আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা সব তারকা গুলো সৃষ্টি করেছেন প্রথম আসমানের নিচে এর উপরে আরও 7 আসমান তার উপরে আরশে আজীম । আল্লাহু আকবার
Total Reply(0)
Mohammad Faruk Mia ১৮ জুলাই, ২০২২, ৬:২১ এএম says : 0
আমি ওদের জন্য আমার নিদর্শনাবলী বিশ্বজগতে ব্যক্ত করব এবং ওদের নিজেদের মধ্যেও; ফলে ওদের নিকট স্পষ্ট হয়ে উঠবে যে, এ (কুরআন) সত্য।এ কি যথেষ্ট নয় যে, তোমার প্রতিপালক সর্ববিষয়ের প্রত্যক্ষদর্শী? সূরা হা-মীম সেজদাহ-৫৩
Total Reply(0)
Ismail Sagar ১৮ জুলাই, ২০২২, ৬:২১ এএম says : 0
সমস্ত প্রশংসা তো তার জন্যই যিনি এসব সৃষ্টি করেছেন আর আমরা তার সৃষ্টি দেখে আশ্চর্য হচ্ছি,,,,, আলহামদুলিল্লাহ আলহামদুলিল্লাহ,,,,, এত সুন্দর মহাবিশ্বের এত সব সৃষ্টির মধ্যে মানুষ কেই সেরা বানাইছে আল্লাহ,,,, তারপরেও আমরা তার নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করছি না,,,, আফসোস,,, সুবহানাল্লি ওয়াবিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন