চাঁদপুর লক্ষèীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সেলিম খানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল সোমবার সংস্থার সহকারী পরিচালক মো. আতাউর রহমান বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলায় বিরুদ্ধে প্রায় ৩৭ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। দুদক সচিব মামলার বিষয়ে বলেন, সেলিম খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তার সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ দেয়া হয়েছিল। দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী যাচাই শেষে ৬৬ লাখ ৯৯ হাজার ৪৭৭ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের প্রমাণ মিলেছে। এছাড়া দুদকের অনুসন্ধানে ৩৪ কোটি ৫৩ লাখ ৮১ হাজার ১১৯ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ পাওয়া গেছে। এ কারণে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারায় মামলা করা হয়েছে। এর আগে গত ২৬ এপ্রির দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে মহানগর দায়রা জজ আদালতের তৎকালিন বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ সেলিম খানকে ৬০ দিনের জন্য বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন। পরে পুনরায় আবেদনের প্রেক্ষিতে সময় বাড়ানো হয়েছে।
অনুসন্ধানে অবৈধ সম্পদের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়ায় ২০২০ সালের ২০ সেপ্টেম্বর সেলিম খান ও তার স্ত্রী শাহানারা বেগমের সম্পদের হিসেব চেয়ে নোটিশ দিয়েছিল দুদক। প্রাথমিক অনুসন্ধানে সেলিম খানের আয়কর বিবরণীসহ বিভিন্ন নথিপত্র যাচাই শেষে তার পারিবারিক ব্যয়ের হিসাব পাওয়া যায় ৩৪ লাখ ৮৮ হাজার ৮০০ টাকা। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে প্রাপ্ত বেতন-ভাতা ও ঋণসহ তার আয় পাওয়া যায় ৬১ লাখ ৭২ হাজার টাকা।
চলতি বছরের ৬ এটিওণ দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল সম্পত্তি অর্জন বিষয়ে চাঁদপুরের লক্ষ্মীপুরের ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ যাচাইয়ে দুদকের সহকারী পরিচালক রাফী মো. নাজমুস সা’দাৎ এর নেতৃত্বে এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান চালায়। অভিযানকালে দুদক টিম চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মৌজায় চাঁদপুর-হাইমচর সড়কের পাশে মেঘনা নদী থেকে ৮০০ মিটার দূরত্বের মধ্যে চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রস্তাবিত জমি সরেজমিন পরিদর্শন করে। পরিদর্শনকালে দেখা যায়, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যারয়ের জমি অধিগ্রহণে সরকার নির্ধারিত মৌজা মূল্যের চেয়ে অন্তত ২০ গুণ বেশি মূল্য দেখিয়ে ১৩৯টি উচ্চমূল্যের দলিল কারসাজির মাধ্যমে সরকারের প্রায় ৩শ’ থেকে ৪শ’ কোটি টাকা আত্মসাতের পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু বিষয়টি প্রকাশ পাওয়ায় সেটা আর হয়নি। যদি তিনি সফল হতেন তাহলে সরকারের অতিরিক্ত ৩-৪ শত কোটি টাকা লোকসান হতো। এছাড়া মেঘনা-পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করেন তিনি। এনফোর্সমেন্ট টিম এ বিষয়ে তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেন।
সম্প্রতি চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চাবিপ্রবি) জমি অধিগ্রহণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে শিক্ষামন্ত্রীর পরিবারের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মৌজায় জমি কেনা-বেচা করেন শিক্ষামন্ত্রীর পরিবারের সদস্য, আত্মীয় ও তার ঘনিষ্ঠরা। তার বড় ভাই ডা. জাওয়াদুর রহিম ওয়াদুদ ৬ দলিলে ৯৯ শতাংশ জমি কেনেন। তার মামাতো ভাই জাহিদুল ইসলাম এক একর ৬১ শতাংশ ও লক্ষ্মীপুর ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম খানও সেখানে কয়েক একর জমি কেনেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন