মঙ্গলবার, ২৮ মে ২০২৪, ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

সিমে ঘুরছে ভাগ্যের চাকা

| প্রকাশের সময় : ২ ডিসেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

শফিকুল ইসলাম বেবু, কুড়িগ্রাম থেকে : ভূমিহীন দিনমজুর আব্দুল জলিল সিম চাষ করে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন। ইতোমধ্যে প্রাথমিক ধাক্কা সামলিয়ে তিনি বর্গা জমিতে সিম চাষ করে সাফল্য অর্জন করেছেন। তার এ সাফল্যে গ্রামের মানুষও খুশি। চলতি মৌসুমে প্রায় ২ লাখ টাকার সিম বিক্রি হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সরেজমিন কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার চাকিরপশার পাঠক গ্রামে কথা হয় চাষি আব্দুল জলিলের সাথে। স্ত্রী, ছেলে ও নাতি-নাতনি নিয়ে তার ৭ সদস্যের সংসার। জীবনের বেশিরভাগ সময় দিনমজুরি করে কাটাতে হয়েছে তাকে। বাড়িভিটাসহ ৭ শতক জমিতে সবাই মিলে বসবাস করেন। চাষ করার মতো নিজস্ব কোনো জমি নেই। বিভিন্ন অঞ্চলে দিনমজুরি করেই জীবনটা পার হচ্ছিল। এরমধ্যে বগুড়ায় কাজ করতে গিয়ে কথা হয় কয়েকজন সিম চাষির সাথে। তাদের সাফল্যের কথা শুনে আব্দুল জলিল মনে মনে স্থির করেন সিম চাষ করার। অল্প জমিতে সিম চাষ করে অনেকেই ভাগ্য বদলিয়েছেন। গ্রামে গিয়ে তিনিও পেশা বদলিয়ে সিম চাষ করার সিদ্ধান্ত নেন। যেই ভাবা, সেই কাজ। প্রতিবেশি একজন গৃহস্থের কাছে অনুরোধ করে ১৫ শতক জমি বর্গা নিয়ে শুরু করেন সিম চাষ। এতে সব মিলিয়ে খরচ হয় ৫ হাজার টাকা। আয় করেন প্রায় ৩৫ হাজার টাকা। প্রথম বছরেই লাভের মুখ দেখে তার উৎসাহ বেড়ে যায়। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দিনমজুরি ছেড়ে দিয়ে পরিচিতি পান সিম চাষি হিসেবে। এতে গর্ব অনুভব করেন আব্দুল জলিল। তার ভাষায়, যে কোনো সৃষ্টির মধ্যে আলাদা আনন্দ রয়েছে। মা যেমন তার সন্তানকে ভূমিষ্ট করে আনন্দ লাভ করেন। তেমনি সিমের কুঁড়ি ফোটার পর আব্দুল জলিলের মন ভরে যায়। এমন অপার আনন্দ! যা ভাষায় ব্যক্ত করার মতো নয়। চলতি মৌসুমে ৩৫ শতক বর্গা জমিতে সিম চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছেন তিনি। এজন্য তাকে জমির মালিককে ৫ মণ ধান দিতে হবে। এতেও পিছিয়ে যাননি তিনি। অনেক যতœ করছেন জমির পেছনে। বাড়িতে গোবর সার তৈরি করেছেন। ট্রিলার দিয়ে জমি চাষ করেছেন। বারি জাতের বীজক্রয়সহ খরচ পড়েছে প্রায় ৩ হাজার টাকা। এছাড়াও বীজ বপন, পরিচর্চা ও স্প্রে’র কাজ ও জাংলা দিতে খরচ হয়েছে প্রায় ৭ হাজার টাকা। তার আশা এই মৌসুমে প্রায় ২ লাখ টাকার সিম বিক্রি করতে পারবেন। আব্দুল জলিল অভিযোগ করেন, এ পর্যন্ত উপজেলা কৃষি অফিস তার সাথে কোনো প্রকার যোগাযোগ করেনি। যা করেছেন চাষিদের কাছে শুনে এবং নিজের ছোট ছোট অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে। সরকারি কোনো সহযোগিতা পেলে তিনি আরো ভালো কিছু করতে পারবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এব্যাপারে রাজারহাট উপজেলা কৃষি অফিসার ষষ্টি চন্দ্র রায় জানান, আব্দুল জলিলের সিমচাষ সম্পর্কে জানতে পেরেছি। তিনি কৃষি অফিসের সাথে কোনো প্রকার যোগাযোগ করেননি। তিনি যোগাযোগ করলে আমরা তার প্রদর্শনী ক্ষেতের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন