রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

তাপদাহে পুড়ছে পৃথিবী দায় কার-১

মাওলানা আবু আহমাদ মুসান্না | প্রকাশের সময় : ২২ আগস্ট, ২০২২, ১২:০৩ এএম

‘তীব্র তাপদাহের কারণে খাদ্য উৎপাদন কমেছে’। ‘সভ্যতার অবসান ঘটাতে পারে আবহাওয়া পরিবর্তন’। ‘তাপদাহে পুড়ছে ব্রিটেন, ৪০ ছাড়িয়েছে তাপমাত্রা’। ‘প্রচণ্ড তাপদাহে যুক্তরাজ্যে মৃত্যুঝুঁকি’। ‘তাপদাহ-দাবদাহে ফ্রিশফ্রাই পৃথিবী’। উপরের শিরোনামগুলো বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রিক মিডিয়া থেকে নেয়া। গত কিছুদিন ধরেই এমন শিরোনামে খবর প্রচার করছে মিডিয়াগুলো। গত কয়েক বছর ধরেই একটি কথা জোরেশোরে শোনা যাচ্ছে যে, জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে। জলবায়ু কি? কোনো একটি অঞ্চল বা এলাকায় দিনের পর দিন যে আবহাওয়া সাধারণত বিরাজ করে তাকেই বলা হয়, সে এলাকার জলবায়ু। পরিচিত সেই আবহাওয়ার ধরন পরিবর্তন হয়ে আবহাওয়া অস্বাভাবিকভাবে বদলে যাওয়াকেই জলবায়ু পরিবর্তন বলে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীর অনেক কিছুই বদলে যাবে।

বিজ্ঞানীদের ভাষায়, মানুষের জীবনযাপন ধারা বদলে যাবে। খাদ্য উৎপাদন কঠিন হয়ে পড়বে। পৃথিবী পানির সঙ্কটে নিপতিত হবে। কোনো কোনো এলাকা বিপজ্জনকভাবে গরম হয়ে পড়বে। সমুদ্রের পানি বেড়ে গিয়ে অনেক এলাকা প্লাবিত হবে। অতিরিক্ত গরমের সাথে ভারী বৃষ্টির মাত্রা বৃদ্ধি পাবে এবং ঝড়ের প্রকোপ অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাবে। এছাড়াও আবহাওয়ার আে রা ভয়ঙ্কর কিছু পরিবর্তন সাধিত হবে।

জলবায়ুর এমন আশ্চর্যজনক পরিবর্তনের কারণ ও প্রতিকার নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে অনেক আগে থেকেই। বিজ্ঞানীদের মতে, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা না করার কারণেই জলবায়ুর এই পরিবর্তন, যা আগামীর পৃথিবীকে হুমকির মুখে ফেলেছে।

প্রশ্ন হলো, হাজার লক্ষ বছর যাবত যে পরিবেশ মানুষের বসবাসের উপযোগী ছিল, তা হঠাৎ করেই কীভাবে এমন বদলে গেল? হযরত আদম (আ.)-কে পৃথিবীতে প্রেরণের অনেক আগে থেকে আল্লাহ তায়ালা তার ভরপুর নেয়ামত দিয়ে প্রকৃতি ও পরিবেশকে সাজিয়ে রেখেছিলেন। সবুজ-শ্যামল, তরুলতা, আলো-বাতাস ও পানি দিয়ে মানুষের বাসযোগ্য করে তৈরি করেছিলেন। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন : ‘তিনি পৃথিবীকে তোমাদের জন্য বিছানা ও আকাশকে ছাদ করেছেন এবং আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করে তা দিয়ে তোমাদের জীবিকার ফলমূল উৎপাদন করেন। সুতরাং জেনেশুনে কাউকেও আল্লাহর সমকক্ষ দাঁড় করো না।’ (সূরা বাকারা : ২২)।

মানুষের যিনি সৃষ্টিকর্তা তিনি জানেন, মানুষ কিভাবে সুস্থ, সুন্দর ও সাবলীলভাবে পৃথিবীতে বিচরণ করতে পারবে। তাই এখানে বসবাস করতে যা যা প্রয়োজন, তার সবকিছুই তিনি তার জমিনে দিয়ে দিয়েছেন। পানি, আল্লাহ তায়ালার এক বিশাল নেয়ামত, যা ছাড়া মানুষের জীবন এক মুহূর্তও কল্পনা করা যায় না। মানুষ ও জীবজন্তুর তৃষ্ণা মেটাতে, ফসল ফলাতে, জমির উর্বরতা বাড়াতে পানির কোনো বিকল্প নেই। পরিবেশ যেন মানুষের বসবাসের অনুপযোগী না হয়, সে কারণেই পানির সৃষ্টি। পানি সৃষ্টি না হলে মানুষের খাদ্য উৎপাদন করে জীবন ধারণের আর কোনো উপায় ছিল না।

এ ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘তিনি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন যাতে আছে তোমাদের জন্য পানীয় আর তাতে জন্মে বৃক্ষলতা যা তোমাদের পশুগুলোকে খাওয়াও। তার মাধ্যমে তিনি তোমাদের জন্য উৎপন্ন করেন ফসল, যাইতুন, খেজুর গাছ, আঙ্গুর এবং সকল ফল-ফলাদি। নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন রয়েছে এমন কওমের জন্য, যারা চিন্তা করে।’ (সূরা নাহল : ১০-১১)।

পৃথিবীর সব প্রাণীকে আল্লাহ তায়ালা পানি দিয়ে সৃষ্টি করছেন। ইরশাদ হয়েছে : ‘অবিশ্বাসীরা কি দেখে না যে, আকাশ আর জমিন এক সঙ্গে সংযুক্ত ছিল, অতঃপর আমি উভয়কে আলাদা করে দিলাম, আর প্রাণসম্পন্ন সব কিছু পানি থেকে সৃষ্টি করলাম। তবুও কি তারা ঈমান আনবে না?’ (সূরা আম্বিয়া : ৩০)। পানি দিয়ে সৃষ্টি হওয়া আমরা যতভাবে পাড়ছি পানি দূষিত করছি। পানি দূষিত হওয়ার কারণে আবহাওয়া রুক্ষ হয়ে যাচ্ছে। ভালো পানির অভাবে গাছপালা, তরুলতা আগের মতো সজীবতা ধরে রাখতে পারছে না। পানি দূষিতকারীকে আল্লাহর রাসূল (সা.) অভিশপ্ত বলে আখ্যায়িত করেছেন। হাদিস শরীফে বলা হয়েছে : ‘তোমরা তিন অভিশপ্ত ব্যক্তি থেকে বেঁচে থাক যে পানির ঘাটে, রাস্তার ওপর ও গাছের ছায়ায় মলমূত্র ত্যাগ করে।’ (সুনানে আবু দাউদ : ২৬)।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (2)
Khan Swords ২২ আগস্ট, ২০২২, ৭:১০ এএম says : 0
Highest temperature of Bangladesh in Rajshai 36.6 and in UK today we had 38
Total Reply(0)
Md Nesar Uddin ২২ আগস্ট, ২০২২, ৭:১০ এএম says : 0
দেশের অবস্থা খারাপ
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন