বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বছরে ৭৫ হাজার কোটি টাকা পাচার করে তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশের সময় : ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ২:২৩ পিএম

মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ব্যবহার করে বিলিয়ন ডলারের ডিজিটাল হুণ্ডি চক্রের মূলহোতাসহ ১৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। চক্রটি মোবাইল ব্যাংকিং বা মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) বিকাশ, নগদ, রকেট ও উপায় ব্যবহার করে গত এক বছরে ৭৫ হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ ৭.৮ বিলিয়ন ডলার পাচার করেছে হুন্ডি ব্যবসায়ীরা।

চক্রটিকে গ্রেপ্তারের পর বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানায় সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া।

তিনি বলেন, আক্তার হোসেন (হুন্ডি এজেন্ট), দিদারুল আলম সুমন (হুন্ডি এজেন্ট), খোরশেদ আলম ইমন (হুন্ডি এজেন্টের সহযোগী), রুমন কান্তি দাস জয় (বিকাশ এজেন্ট), রাশেদ মাঞ্জুর ফিরোজ (বিকাশ এজেন্ট), মোঃ হোসাইনুল কবির (বিকাশ ডিএসএস), নবীন উল্লাহ (বিকাশ ডিএসএস), মো. জুনাইদুল হক (বিকাশ ডিএসএস), আদিবুর রহমান (বিকাশ ডিএসও), আসিফ নেওয়াজ (বিকাশ ডিএসও), ফরহাদ হোসাইন (বিকাশ ডিএসও), আবদুল বাছির (বিকাশ এজেন্ট), মাহাবুবুর রহমান সেলিম (বিকাশ এজেন্ট), আবদুল আউয়াল সোহাগ (বিকাশ এজেন্ট) ও ফজলে রাব্বিকে (বিকাশ এজেন্ট) গ্রেপ্তার করা হয়।

এসময় তাদের কাছ থেকে নগদ ১০ লাখ ৪৬ হাজার ৬৮০ টাকা, চারটি সিমে ৩ কোটি ৪৬ লাখ ৪৭ হাজার ২২৯ ইলেকট্রনিক মানি ও ৩৪টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মোট চারটি মামলা করেছে সিআইডি।

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডি জানায়, ডলারের দাম বাড়ায় তদন্তে নামে সিআইডি। তদন্তে নেমে হুন্ডি কারবারের সঙ্গে জড়িত ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে গত ৪ মাসে ২০ কোটি ৭০ লাখ টাকা পাচার হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া সিআইডির সাইবার ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে জানতে পারে এমএফসে হুন্ডি করে এমন ৫ হাজারের বেশি এজেন্টের সন্ধান পেয়েছে সিআইডি।

সিআইডি প্রধান বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা জানতে পারি তারা বিকাশ, নগদ, রকেট ও উপায়ের মাধ্যমে এমএফএস এজেন্ট জড়িত বলে পাওয়া গেছে। এ ৫ হাজার এজেন্ট গত ৪ মাসে ২৫ হাজার কোটি এবং বছরে ৭৫ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে।

অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী বলেন, রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণপ্রবাহ। সাম্প্রতিক বিশ্ব পরিস্থিতি এদেশের অর্থনীতির ওপর যে চাপ তৈরি করেছে তা মোকাবিলা করার জন্য সরকার অত্যন্ত তৎপর। হুন্ডি সবসময় রিজার্ভের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর এ ঝুঁকি মোকাবিলায় সিআইডি হুন্ডি কার্যক্রমের ওপর নজরদারি শুরু করে।

অনুসন্ধানের মাধ্যমে জানা যায়, একটি সংঘবদ্ধচক্র অবৈধভাবে হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে অর্থপাচার এবং বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থ বিদেশ থেকে বাংলাদেশে না এনে স্থানীয় মুদ্রায় মূল্য পরিশোধ করার মাধ্যমে মানিলন্ডারিং অপরাধ করে আসছে।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানায়, সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র প্রবাসে বাংলাদেশিদের উপার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে তা বাংলাদেশে না পাঠিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার সমপরিমাণ মূল্যে স্থানীয় মুদ্রায় পরিশোধ করে। এ কাজে অপরাধীরা তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কাজটি করে থাকে।

সিআইডি জানায়, প্রথম গ্রুপ বিদেশে অবস্থান করে প্রবাসীদের কাছ থেকে বৈদেশিক মূদ্রা সংগ্রহ করে, দেশ থেকে যারা টাকা পাচার করতে চান তাদের দেন। দ্বিতীয় গ্রুপ পাচারকারী ও তার সহযোগীরা দেশীয় মুদ্রায় এ অর্থ এমএফএস এজেন্টকে দেয়। তৃতীয় গ্রুপ তথা এমএফএস এজেন্টরা বিদেশে অবস্থানকারীর কাছ থেকে প্রাপ্ত মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস নম্বরে দেশীয় মূদ্রায় মূল্য পরিশোধ করে।

এসব চক্র প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে এমএফএস ব্যবহার করে ক্যাশ ইনের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হুন্ডি করছে। এমএফএস এজেন্টদের সহযোগিতায় পাচারকারীরা বিদেশে স্থায়ী সম্পদ অর্জনসহ অনলাইন জুয়া, মাদক কেনা-বেচা, স্বর্ণচোরাচালান, ইয়াবা ব্যবসাসহ প্রচুর অবৈধ ব্যবসাও পরিচালনা করছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
Abu Talib ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৪:৪৬ পিএম says : 0
সিআইডি ও সরকার খুব ভাল করেই জানে যে বর্তমান সমযের হুন্ডি ও অর্থ পাচারের পুরা নেটওয়ার্কটাই নিয়ন্ত্রন করে আওয়ামীলীগের লোকরাই এবং তারাই দেশকে ধ্বংশ করে দিচ্ছে হাজার-হাজার কোটি টাকা অর্থ পাচার করে।
Total Reply(0)
Abu Talib ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৪:৪৬ পিএম says : 0
সিআইডি ও সরকার খুব ভাল করেই জানে যে বর্তমান সমযের হুন্ডি ও অর্থ পাচারের পুরা নেটওয়ার্কটাই নিয়ন্ত্রন করে আওয়ামীলীগের লোকরাই এবং তারাই দেশকে ধ্বংশ করে দিচ্ছে হাজার-হাজার কোটি টাকা অর্থ পাচার করে।
Total Reply(0)
Jahangir ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৯:৩৬ এএম says : 0
হোক প্রবাসী হোক দেশের চাকরিজীবী ব্যবসায়ী সবাই কিভাবে ঘরবাড়ি দালান কোঠা গাড়ি কিভাবে করছে এর হিসাব যদি সরকার নিতে পারত তাহলেই কমে আসতো প্রবাসী যখন গাড়ি বাড়ি করবে যখন এর হিসাব দিতে হতো সরকারকে তখন তার এই টাকার ব্যাংকের ডকুমেন্ট দিতে হতো তাহলে সবাই ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা পাঠাতে আগ্রহী হত এখন তো আর এগুলির প্রয়োজন হয় না যার যেভাবে খুশি দালান কোঠা করতেছে
Total Reply(0)
MAJIDUR RAHMAN MAJID ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১১:২০ পিএম says : 0
পাচার তো হবেই। যেখানে সরকারি ব্যাংকগুলোতে গেলে কোনো রেসপন্স পাওয়া যায় না। কর্মকর্তারা দায়িত্বের সাথে গ্রাহকদের চেক পুষ্টিং দেয় না। সার্ভার সমস্যা একটু পরে আসেন। স্যার নাস্তা করাতাসে একটু বসেন। স্যার লান্সে আছে ১ঘন্টা পরে আসেন। টাকা আজকে আসে নাই। অথচ ২দিনে টাকা আসার কথা কিন্তু আজ চার দিন আসলোনা কেনো। না আপনার টাকা আসে নাই দুইদিন পরে আইসেন। ইত্যাদি ইত্যাদি অজুহাত ব্যাংকগুলোর। আর ব্যংকের % প্রনোদনা সহ যে রেট দেয় তার চেয়ে বেশি মোবাইল ব্যংকিংয়ে পাওয়া যায়। আর মোবাইল ব্যংকিং এ টাকার ভালো রেট পাওয়া যায়। ১০মিনিট লাগে না টাকা আসতে। ক্যাশ আউট করতে লাইনে দাড়ানো লাগে না। সার্ভার সমস্যা থাকে না। স্যার নাস্তা করলেও টাকা তুলা যায়। স্যার লান্সে থাকলেও টাকা তুলা যায়। টাকা আসছে ২,৪ দিন লাগে না। ইত্যাদি ইত্যাদি কোনো অজুহাত নেই। শুক্রবার শনিবারেও টাকা আসে টাকা তুলা যায়। এখন বলেন প্রবাসীরা সারাদিন পরিশ্রম করে এসে আরো ৫০কিলো জার্নি করে এক্সচেঞ্জে গিয়ে এই দেউলিয়া মার্কা ব্যংকগুলোতে টাকা পাঠাবে নাকি পাশের দোকানে গিয়ে টাকা মোবাইল ব্যংকিংয়ে পাঠাবে। বলেন আপনারা বলেন। তাহলে তো দেশে ডলারের ঘাটতি দেখা দিবেই। আগে নিজের পালা কুত্তা সামলাও। আর দুধে পোষা বিড়ালগুলোর ব্যবহার টিক করুন। এবং প্রবাসীদের সহযোগিতা ও সম্মান দিতে শিখুন। তাহলে দেখবেন দেশে ডলারের ঘাটতি আর হবে না।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন