গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ফের সেই শিক্ষক বিপ্লব কুমার কর্মকারের বিরুদ্ধে নিজ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার ৫৬ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সহকারী শিক্ষক বিপ্লব কুমার কর্মকারের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন। সকালে বিদ্যালয়ে গেলে পঞ্চম এবং তৃতীয় শ্রেণির তিন শিক্ষার্থী অভিযোগ করে সাংবাদিকদের বলেন, বিপ্লব স্যার আমাদেরকে স্কুলে বসে তার কাছে ডেকে নিয়ে বিভিন্ন সময় শরীরের স্পর্শকাতর স্হানে হাত দিয়ে এটা সেটা জিজ্ঞেস করতো এবং এ বিষয়ে কারো কাছে কিছু বলতে বারণ করতো। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীর মা এবং অন্যান্য শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা এ প্রতিনিধিকে বলেন আমাদের মেয়েরা স্কুলে আসলে বিপ্লব স্যার তাদেরকে কাছে ডেকে নিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্হানে স্পর্শ করতো পরে গতকাল রাতে আমাকে ঘটনাটি খুলে বলার পর আজ হেড স্যারকে জানাতে স্কুলে এসেছি।
আমরা এলাকাবাসী এই শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই, যাতে করে ভবিষ্যতে আর কোন শিক্ষার্থীর সাথে এমন নোংরা কাজ না করে। এভাবে একে একে সবাই এই শিক্ষকের কঠিন শাস্তির দাবি জানান। এ বিষয়ে ৫৬ নং বটবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুকুন্দ লাল বাড়ৈ বলেন ঘটনাটি আমি এলাকাবাসীর কাছ থেকে শুনেছি, এখন পর্যন্ত অভিভাবকদের কাছ থেকে কোন অভিযোগ পাইনি,যার কারণে একাডেমিক ভাবে কোন ব্যবস্হা গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছেনা। তবে বিষয়টি শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সাথে শিক্ষকের কথা বলে সমাধান করা উচিত। এদিকে মুহূর্তের মধ্যে ঘটনাটি অভিভাবকদের কাছ থেকে এলাকাবাসীর ভিতর জানাজানি হয়ে গেলে তারা ক্ষোভে ফুঁসে উঠতে শুরু করে প্রতিবাদ জানাতে বিদ্যালয়ে অবস্হান করতে থাকেন। এসময় শিক্ষক বিপ্লব কুমার কর্মকার অবস্হা বেগতিক দেখে কিছু সময়ের জন্য বিদ্যালয় ত্যাগ করেন। এ ব্যাপারে শিক্ষক বিপ্লব কুমার কর্মকারের কাছে জানতে চাইলে তিনি তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন শিক্ষার্থীদের সাথে আমার এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। কেবল আমার মান সম্মান ক্ষুন্ন করার লক্ষে পরিকল্পিতভাবে এসব মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে। এর আগে শিক্ষক বিপ্লব কুমার কর্মকার ৪৯ নং উত্তরপাড়া মাদ্রাসা সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত থাকা অবস্থায় ওই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর যৌন নিপীড়ন করেন। তখন বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস তাকে উত্তরপাড়া মাদ্রাসা সংলগ্ন স্কুল থেকে সরিয়ে ৫৬ নং বটবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি করে। বর্তমানে তিনি সেখানেই কর্মরত রয়েছেন এবং পুনরায় একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠলো তার বিরুদ্ধে । উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আমজাদ হোসেন বলেন বিপ্লব কর্মর্কারএকজন সরকারি শিক্ষক সে এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয়ভাবে ব্যবস্হা গ্রহণ করা হবে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন শিক্ষার্থী বা তাদের অভিভাবক কেউ অভিযোগ করেনি, তাছাড়া সে যদি ফৌজদারি অপরাধ করে থাকে, তাহলে দণ্ডবিধি অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ সরাসরি মামলাও করতে পারেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন