পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি অপরিবর্তিত রয়েছে। এটি ঘনীভূত হতে পারে। এদিকে ভাদ্র মাসের শেষ সপ্তাহে এসেও তথা শরৎ ঋতুতেও দেশের অনেক জেলায় তাপদাহে স্বাভাবিক জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
বৃষ্টিপাত হচ্ছে বিক্ষিপ্তভাবে এবং স্বাভাবিকের তুলনায় কম। প্রায় সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পারদ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। আবহাওয়া বিভাগ জানায়, বৃষ্টিবাহী মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।

আবহাওয়া বিভাগ আরো জানায়, ফরিদপুর, সিরাজগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, চাঁদপুর, ফেনী, সাতক্ষীরা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ভোলা জেলাসমূহের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, রংপুর, রাজশাহী ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরণের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে।
দেশের কোথাও কোথাও বিচ্ছিন্নভাবে মাঝারি ধরণের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। দেশের উত্তরাঞ্চলে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে। এছাড়া সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে।

অবহাওয়া সতর্কবার্তায় গতকাল আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক জানান, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি বর্তমানে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থান করছে। এটি ঘনীভূত হতে পারে।

লঘুচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন এলাকায় গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালার সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। সমুদ্র বন্দরসমূহ, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সিলেটে ৩৭.২, ঢাকায়ও ৩৬.৬ ডিগ্রি : গতকাল শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদ উঠে সিলেটে ৩৭.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায়ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.৬ ও সর্বনিম্ন ২৬.৫ ডিগ্রি সে.। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগে তেমন বৃষ্টিপাত হয়নি। খুলনা বিভাগের বিভিন্ন স্থানে হালকা বৃষ্টিপাত হয়েছে। চট্টগ্রাম বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধররে বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ সময়ে দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয় ফেনীতে ৬৭ মিলিমিটার।

আজ শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ মো. কাহীনুল ইসলাম জানান, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।

ঢাকা, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জ, রাজশাহী, বগুড়া, নেত্রকোনা, শ্রীমঙ্গল ও সিলেট জেলাসমূহের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা কিছু জায়গায় প্রশমিত হতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে। এরপরের ৫ দিনে আবহাওয়ার কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে।