শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

আল্লাহর ওয়াস্তে ফিরে আসুন-১

হযরত মাওলানা ইউসুফ লুধিয়ানভী | প্রকাশের সময় : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

আল্লাহতায়ালা কোনো সম্প্রদায়ের উপর হঠাৎ করে আজাব নাজিল করেন না। বিভিন্নভাবে প্রথমত বান্দাকে সতর্ক করেন। এরপরও যদি বান্দা গাফিলতের ঘুম থেকে জাগ্রত না হয়, তখন আসমান থেকে ভয়াবহরূপে নেমে আসে আল্লাহর আজাব। তখন আর কিছু করার থাকে না। জেগে উঠলেও কোনো লাভ হয় না। দুনিয়াতে যত মসিবত আছে তার সবকিছুই আমাদের বদ আমলীর ফল, আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে আসমানি সতর্কবার্তা। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে : যে বিপদ তোমাদের স্পর্শ করে তা তোমাদের কৃতকর্মের ফল এবং আল্লাহ (তোমাদের) অনেক অপরাধ ক্ষমা করে দেন। (সুরা শুআরা : ৩০)।

আল্লাহতায়ালার আযাব বিভিন্নভাবে এসে থাকে। কখনো অভাব-অনটনরূপে, কখনো ঝগড়া-বিবাদরূপে, কখনো বিপদ-আপদ, দুঃখ-কষ্ট, রোগ-শোক, মামলা-মুকাদ্দামারূপে। আবার কখনো জালেম শাসক, দুর্ভিক্ষ, মহামারি ইত্যাদিরূপে। বান্দার গোনাহ যেমন অসংখ্য, তেমনি আল্লাহতায়ালার শাস্তির রূপও বিভিন্ন।
আজাবে ইলাহীর সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ হলো যখন তা নেয়ামতের আকৃতিতে আসে। কারণ এক্ষেত্রে অধিকাংশ মানুষই ভুল করে। আল্লাহর শাস্তিতে গ্রেফতার হওয়ার উপলব্ধিই তার থাকে না। আল্লাহতায়ালার অবাধ্য হওয়ার পরও কেউ যদি সম্মান, সম্পদ, সুস্থতা এবং পার্থিব মান মর্যাদা ভোগ করে, তাহলে বুঝতে হবে সে মূলত নেয়ামতরূপে আগত আল্লাহর শাস্তিতে গ্রেফতার হয়ে আছে।

এক্ষেত্রে যেহেতু আল্লাহতায়ালার অসন্তুষ্টির উপলব্ধি হৃদয়ে জাগ্রত থাকে না, তাই তাওবা না করে, অনুতপ্ত না হয়ে বান্দা অবাধ্যতা ও পাপাচারে আরো ডুবে থাকে। আল্লাহতায়ালার নিয়ম হলো, ব্যক্তিগত কর্মের প্রতিদান ও শাস্তি ব্যক্তিগতভাবেই দিয়ে থাকেন। কিন্তু যখন গোটা সমাজ কিংবা সমাজের অধিকাংশ লোক নৈতিক অধঃপতন ও চারিত্রিক অবক্ষয়ের শিকার হয়, তখন গোটা সমাজের ওপর নেমে আসে খোদায়ী গজব। দু-চারজন লোক যদি তখন ভালো থাকে; কিন্তু পতনোম্মুখ সমাজের লাগাম টেনে ধরে ধ্বংসের গহ্বর থেকে তাদের উদ্ধার করে কল্যাণ ও আলোর পথ দেখানোর কোনো চেষ্টা না করে তাহলে তারাও সে গযব থেকে নিস্তার পায় না।

বিষয়গুলো সামনে রেখে আসুন আমরা আমাদের সমাজকে একটু পর্যবেক্ষণ করি। নিঃসন্দেহে আমরা দেশের ও দেশের উন্নয়নের জন্য অনেক শিল্প-কারখানা বানিয়েছি। আকাশচুম্বি বিলাসবহুল দালান গড়ে তুলেছি। সড়ক, জনপথ ও আভ্যন্তরীণ যোগাযোগ-ব্যবস্থার উন্নতির পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করেছি। আর এই সকল ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে আল্লাহর বিধান পরিপন্থি পথই আমরা অবলম্বন করেছি, যদিও তা আল্লাহর বিধানের অনুসরণ করেও সম্ভব ছিল।

আমরা সুদি ঋণ নিয়ে কাল্পনিক উন্নতির স্রোতে গা ভাসিয়েছি। ব্যাংক খুলেছি, ইন্সুরেন্সের জাল বিছিয়েছি, থিয়েটার বানিয়েছি, টিভি স্টেশন ও সিনেমা হলে নগ্নতার পসরা বসিয়েছি। মোটকথা আল্লাহবিমুখ পথভ্রষ্ট জাতির যা কিছু বৈশিষ্ট্য তার সবই আমরা নিজেদের মাঝে ধারণ করেছি। আমরা কখনো নবীজীর জীবন ও চরিত্র, নবীজীর আখলাক ও আচরণ এবং মাদানী সমাজ-সভ্যতা, মাদানী রাজ্যনীতির দিকে চোখ তুলেও তাকইনি। ধর্মবিদ্বেষী, পথভ্রষ্ট ও অভিশপ্ত পশ্চিমা জাতিবর্গের চিন্তানৈতিক দাসত্বই যেন আমাদের গর্বের বিষয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Abdun nur ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১১:৪১ পিএম says : 0
পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ প্রাণী হলো মানুষ। আর এ মানবজাতিকে আল্লাহ তাআলা কিছু দায়দায়িত্ব ও বিধিনিষেধ দিয়েছেন।যদি সে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয় তাহলে তার মাশূল দিতে হবে। আল্লাহ আমাদেরকে এ ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ায় পরীক্ষার জন্যে পাঠিয়েছেন। আর এ পরীক্ষা হবে আল্লাহর বিধিনিষেধ পালন ও ইবাদত আদায়ের মধ্য দিয়ে। আল্লাহ তাআলা কোরআনের আয়াতে বলেন -আমি জ্বীন এবং মানবজাতিকে আমার এবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি। তাই সময় ফুরানোর আগেই আল্লাহর এবাদত করুন। দুনিয়া -আখিরাতে কামিয়াব হবে।
Total Reply(0)
Md Parves Hossain ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:১৬ এএম says : 0
সময় থাকতে এখনি আল্লাহ ও তার রাসুলের নাফরমানি থেকে ফিরে আসা। আল্লাহ আমাদের যাবতীয় বিপদ থেকে হেফাজত করুন। আমিন।
Total Reply(0)
Sirajul Islam Shipon ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:১৪ এএম says : 0
আজ বিশে^র চারদিকে গুনাহের ছড়াছড়ি। অপরাধ, জুলুম-নির্যাতন, পাপ-পঙ্কিলতায় ভরে গেছে গোটা পৃথিবী। আর পাপের কারণেই নেমে আসে নানারকম আজাব-গজব ও বালা-মুসিবত। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘স্থলে ও জলে মানুষের কৃতকর্মের দরুন বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহ তাদেরকে কোনো কোনো কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যেন তারা ফিরে আসে।’ (সুরা রুম : ৪১)।
Total Reply(0)
Md Ali Azgor ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:১৫ এএম says : 0
আল্লাহ ও নবী-রাসুলের অবাধ্যতার কারণেই যুগে যুগে বিভিন্ন জাতি ও সম্প্রদায়কে গজব দিয়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয়েছিল।
Total Reply(0)
Md Parves Hossain ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:১৬ এএম says : 0
আল্লাহ তায়ালার দয়া ও মায়ার কোনো সীমা নেই। তিনি নিজেই ঘোষণা করেছেন, তিনি অত্যন্ত ক্ষমাশীল ও পরম দয়াময়। আল্লাহ তায়ালার করুণা ও দয়া লাভের অন্যতম মাধ্যম কৃত গুনাহের জন্য তাওবা করা।
Total Reply(0)
Abdun nur ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১১:৪২ পিএম says : 0
পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ প্রাণী হলো মানুষ। আর এ মানবজাতিকে আল্লাহ তাআলা কিছু দায়দায়িত্ব ও বিধিনিষেধ দিয়েছেন।যদি সে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয় তাহলে তার মাশূল দিতে হবে। আল্লাহ আমাদেরকে এ ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ায় পরীক্ষার জন্যে পাঠিয়েছেন। আর এ পরীক্ষা হবে আল্লাহর বিধিনিষেধ পালন ও ইবাদত আদায়ের মধ্য দিয়ে। আল্লাহ তাআলা কোরআনের আয়াতে বলেন -আমি জ্বীন এবং মানবজাতিকে আমার এবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি। তাই সময় ফুরানোর আগেই আল্লাহর এবাদত করুন। দুনিয়া -আখিরাতে কামিয়াব হবে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন