বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

রাজাপুরে অর্ধশত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

পানি বৃদ্ধি অব্যাহত।

রাজাপুর (ঝালকাঠি)উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৯:০৯ পিএম | আপডেট : ৯:১২ পিএম, ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২২

ঝালকাঠির রাজাপুরের বিষখালী, ধানসিঁড়ি জাঙ্গালিয়া ও পোনা নদীর পানিস্বাভাবিক জোয়ারের তুলনায় ৯০ সেঃমিঃ থেকে ১০০সেঃমিঃ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার অর্ধশত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ১০ থেকে ১৫টি গ্রাম ও অনেকগুলো আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর প্লাবিত হয়েছে। ভেঙে গেছে বাদুরতলা, পুখরিজানা ও মানকী গ্রামের বিষখালী নদীর তীরবর্তী রাস্তা ও বিভিন্ন খালের বাঁধ। এছাড়া উপজেলার রাজাপুরের বিষখালি নদীতে হঠাৎ ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে ছয়টি দোকানঘর নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে। এদের মধ্যে একটি মুদীমনোহারি, একটি ঋষি ও বাকি গুলো চায়ের দোকান ছিল।

সোমবার দুপুরে উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়নের বিশখালী নদী-সংলগ্ন বাদুরতলা বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এতে ওই এলাকায় ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে। ঘটনার পর বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিকরা হলো নাসির হাওলাদার, জুয়েল শরীফ, শাহজাহান শরীফ, জামাল হাওলাদার, আবু খলিফা ও বাবুল ঋষি।

প্রত্যক্ষদর্শী মো: রুহুল আমিন, তরিকুল ইসলাম সুমন ও আব্দুল গফুর জানায়, দুপুরে হঠাৎ বিষখালী নদীতে ভাঙন দেখা দেয়। এতে পানিতে ভেসে যায় মালপত্রসহ দোকানগুলো। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় নদী থেকে দোকান মালিকরা দোকানঘরসহ মালামাল উদ্ধার করে। ততক্ষণে অনেক মালপত্র ভেসে যায়।
মঠবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান শাহ জালাল হাওলাদার জানান, দীর্ঘদিন ধরেই বাদুরতলা বাজারের বিষখালীনদীর তীরবর্তী দোকানগুলো নদী ভাঙ্গনে ভেঙে বিলীন হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় হঠাৎ দুপুরে ছয়টি দোকান বিলীন হয়ে গেছে। এখনো ওই বাজারের অনেক দোকান ঝুকিতে রয়েছে। কয়েক দফা জিও ব্যাগ ফেলেও ভাঙনরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মান করা প্রয়োজন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত জাহান খান বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে কথা বলেছি। তাদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। গ্রামীন কাঁচা-পাকা কয়েকটি রাস্তায় গর্ত হয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে বিভিন্ন গ্রামের সাথে। ফলে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগ ও আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। রবিবার থেকে মুষলধারে বৃষ্টি, বৈরী আবহাওয়ায়, বিষখালী ও ধানসিঁড়ি নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদরাসাসহ অর্ধশত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণি কক্ষে পানি ঢুকে পড়েছে। ফলে পাঠদান ব্যহত হচ্ছে।

জোয়ারের পানিতে উপজেলার মানকী, সুন্দর, পুখরিজানা, চর ইন্দ্রোপাশা, বাদুরতলা, চরপালট, নিজামিয়া, বড়ইয়া, রোলা, তারাবুনিয়া, বাদুরতলা বাজার লঞ্চঘাট, গালুয়া ইউনিয়নের পোনা নদী বেষ্টিত চাড়াখালী গ্রামসহ কম পক্ষে ১৫টি গ্রামের গুরুত্বপূর্নস্থান পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: রিয়জুল্লাহ বাহাদুর জানান, দুই-এক দিনের ভেতর পানি না কমলে রোপা আমন ধান পঁচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা মৎস্য বিভাগ জানায়, বন্যার পূর্বাভাস পাওয়াার সাথে সাথে খামারিদের সতর্ক করার ফলে ক্ষতির পরিমাণ কম হবে। তবে বিভিন্ন পুকুর ও ঘের তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রযেছে, যাহা পানি না কমলে নিরুপণ করা যাচ্ছে না।
উপজেলার জবিনদাসকাঠি গ্রামের দিন মজুর ওহাজ খান, মোশারেফ ও শহিদুল জানান, জোয়ারে পানি বৃদ্ধি ও বৃষ্টির পানিতে মাঠ-ঘাট তলিয়ে যাওয়ায় তাদের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। পিআইও মামুনুর রশিদ জানান- নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট প্রেরন করা হযেছে। রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি সহ ভারি বর্ষন অব্যাহত আছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন