ডলারের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। সরকার দীর্ঘদিন থেকে নানা প্রক্রিয়ায় টাকার মূল্যমান ধরে রাখার চেষ্টা করলেও শেষ বিকেলে সেটা সম্ভব হচ্ছে না। গত মঙ্গলবার ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ণ হয়েছে ১০ টাকা ১৫ পয়সা। যা এ যাবতকালের ইতিহাসে রেকর্ড। ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়ায় রেমিট্যান্স ঊর্ধ্বমুখী হলেও আমদানির প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়ে যাবে; বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। যদিও বৈশ্বিক সঙ্কটের জেরে ডলারের বিপরীতে বিভিন্ন দেশের মুদ্রার দরপতন হচ্ছে। বাংলাদেশেও প্রায় প্রতিদিনই হচ্ছে। গতকালও ডলারের বিপরীতে টাকার আরো ৭৫ পয়সা দরপতন হয়েছে। এই দর পতনে আমদানি করা প্রতিটি পণ্যের দাম বাজারে বেড়ে যাবে। মানুষের ভোগান্তি বাড়বে। এদিকে অভিন্ন দরে বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় করতে বাফেদা ও এবিবি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তৃতীয় দিন গতকাল বুধবারও অধিকাংশ ব্যাংকই তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি। আবার যে কয়টি ব্যাংক বাস্তবায়য়ন করেছে, তাদের আমদানি-রফতানি পর্যায়ে ডলারের ব্যবধান বেড়ে গেছে ১০ টাকার বেশি। সবমিলিয়ে স্থিতিশীলতা আনার জন্য ডলারের দর বেঁধে দেয়া হলেও উল্টোচিত্র বাজারে। গতকাল ব্যাংকগুলো নিজেদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১০৬ টাকা ৯০ পয়সায় ডলার কেনাবেচা করেছে। যা মঙ্গলবারও ছিল ১০৬ টাকা ১৫ পয়সা। অর্থাৎ ডলারের দর বেড়েই যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা সিদ্ধান্তের ফলে বাজারে এতদিন যে স্থিতিশীলতা এসেছিল, তা অনেকটাই এলোমেলো হয়ে গেছে নতুন এক সিদ্ধান্তে। এই অবস্থায় ডলারের বাজারে তিন ধরনের চাপ তৈরির আশঙ্কা করছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলছেন, একদিকে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাবে। এতে আমদানি পণ্যের পাশাপাশি আমদানিনির্ভর শিল্পপণ্যের দাম বাড়বে। ফলে মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ বাড়বে। অবশ্য গতকাল অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকের পর বলেছেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার চিন্তাভাবনা চলছে। চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে মুদ্রার বিনিময় হার নির্ধারণ হয়। বিশ্বের সব দেশে এ নিয়ম মানা হয়। বাজারই নির্ধারণ করবে মুদ্রার দাম। বিশ্বের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের চলতে হবে এবং আস্তে আস্তে সে দিকেই যেতে হবে। মুদ্রার ভাসমান বিনিময় হার পদ্ধতি চালুর বিষয়টি আমরা চিন্তাভাবনা করছি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আন্তঃব্যাংকে বর্তমানে প্রতি ডলার বিক্রি হচ্ছে ১০৬ টাকা ৯০ পয়সায়। ব্যবসায়ী-শিল্পপতি এমনকি ব্যাংকিং সেক্টরের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টাকার এত বড় দরপতনে ক্ষতিগ্রস্ত হবে উৎপাদন খাত। আমদানি করা কাঁচামালের দাম বেড়ে যাবে অন্তত ১০ শতাংশ। কিন্তু মূল্যস্ফীতির চাপে থাকা দেশে পণ্যমূল্য আরও বাড়ালে চাহিদা কমে গিয়ে বিক্রিতে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। এছাড়া আকাশছোঁয়া বাজারদরের বর্তমান প্রেক্ষাপটে ডলারের বড় লাফে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের কপালে চিন্তার ভাঁজ আরও জোরালো হওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। আমদানির খরচ বেড়ে গেলে স্বাভাবিকভাবেই ঊর্ধ্বমুখী হবে উৎপাদন ব্যয়। সেই প্রেক্ষাপটে দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্যমূল্য, ভ্রমন, শেয়ারবাজারসহ সব খাতেই এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান মনসুর বলেন, এই মুহূর্তে বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত না নিয়ে অদ্ভুদ-উদ্ভট একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাফেদা-এবিবি। এই সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই ভালো ফল দেবে না। বাজারের চাহিদা-জোগান বিবেচনায় নিয়ে একটা বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তা না হলে বাজারে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসবে না। টাকার বিপরীতে ডলারের অস্বাভাবিক উল্লম্ফন আমাদের অর্থনীতিকে প্রতি মুহূর্তে তছনছ করে দিচ্ছে। সঙ্কটের মধ্যে ফেলে দিয়েছে আমাদের। এই মুহূর্তে রেমিট্যান্স, রফতানি, আমদানির ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা দাম বেঁধে দেয়ার কোনো মানে হয় না। এই তিন ক্ষেত্রে ডলারের একক দর নির্ধারণ করে দেয়া উচিত। ব্যবধান খুব বেশি হলে ২ শতাংশ থাকতে পারে। ডলারের একক দর এখন ১০৫ টাকা বেঁধে (ফিক্সড) দেয়া উচিত। রেমিট্যান্স, রফতানি ও আমদানির ক্ষেত্রে দরের ব্যবধান বা পার্থক্য এক থেকে দেড় টাকা (খুব বেশি হলে ২ শতাংশ) হওয়া উচিত। তাহলেই বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে গতকাল ব্যাংকগুলোর ডলার কেনাবেচার গড় দাম দেখা গেছে ১০২ টাকা ৩৭ পয়সা, যা মঙ্গলবার ছিল ১০১ টাকা ৬৭ পয়সা। আর বিক্রয়মূল্য বেড়ে হয়েছে ১০৬ টাকা ৯০ পয়সা, যা মঙ্গলবার ছিল ১০৬ টাকা ১৫ পয়সা। এর আগে মঙ্গলবার ডলারের আন্তঃব্যাংক লেনদেনের মূল্য বদলে ফেলে বাংলাদেশ ব্যাংক। ১০৬ টাকা ৯০ পয়সা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দর নয়, ব্যাংকগুলোর নিজেদের মধ্যে লেনদেন করা ডলারের দাম এটি। ব্যাংকগুলো যে দামে ডলার কেনাবেচা করে, সেটিকে আন্তঃব্যাংক দাম বলা হচ্ছে। এতদিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে দামে ডলার কেনাবেচা করত, সেটি আন্তঃব্যাংক দর হিসেবে উল্লেখ করা হত। এতদিন সেই দামই ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে আসছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। অথচ প্রায় দেড় বছর ডলারের দর ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থিতিশীল থাকলেও গত বছরের আগস্ট থেকে বাড়তে বাড়তে আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে তা উঠে গেছে ৯৬ টাকায়, কিন্তু খোলাবাজারে একপর্যায়ে কেনাবেচা হতে থাকে ১২০ টাকায়। সেখান থেকে কিছুটা কমলেও ডলারের দর নিয়ে উদ্বেগ এখনও যায়নি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) নির্ধারিত দরে ব্যাংকগুলো নিজেরা লেনদেন করবে। এটি আন্তঃব্যাংক লেনদেন হিসেবে বিবেচিত হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগের মতো প্রতিদিন ডলার বিক্রি করবে না। তবে প্রয়োজন হলে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করা হবে।
সূত্র মতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নানামুখী পদক্ষেপে আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলা কমেছে, রফতানি আয় বেড়েছে, প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সও ঊর্ধ্বমুখী। এতে দেশের বাজারে ডলারের চাহিদা কিছুটা কমেছে। তারপরও বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারণ করা রেটে ডলার মিলছে না। আর তাই চাহিদা ও জোগানে এখনো বড় ধরনের অসামঞ্জস্য রয়ে গেছে। এমনা হয়েছে, ব্যাংকে ডলার বিক্রি করলে যে রেট পাওয়া খোলাবাজারে তার চেয়ে ১০-১৫ টাকা বেশি পাওয়া যায়। তাহলে কেন ব্যাংকের কাছে ডলার বিক্রি করবে।
প্রতিদিন ডলার কেনা-বেচার অন্যতম নাম প্রতিটি ব্যাংকের বিমানবন্ধর শাখা। এই শাখার বিমানবন্ধর বুথে কাজ করা কর্মকর্তারা জানান, বাইরে বিক্রি করলে অধিক টাকায় ডলার বিক্রি করতে পারে বলে ব্যাংকের কাছে ডলার বিক্রি হয় না বললেই চলে। কিন্তু কম দামে ডলার ক্রয়ে সবার ভীর তাদের কাছে। তবে কাউকেই আমরা ডলার দিতে পারিনা। রাষ্ট্রায়ত্ত্ব একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা বলেন, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী বিশাল বহর নিয়ে ভারত সফরে গিয়েছেন। সে জন্য ডলার ম্যানেজ করাই ছিল কষ্টসাধ্য। দীর্ঘদিন থেকে ধরে রাখতে হয়েছে। আবার যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাবেন। এখানেও বিশাল বহর। তাই তাদের জন্য ডলার ম্যানেজ করা খুব কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ছে। সাধারণ মানুষ বা যাত্রীদের কিভাবে ডলার প্রদান করবো।
সূত্র মতে, বাংলাদেশ ব্যাংক দীর্ঘদিন টাকার মান ধরে রাখায় ডলারের আন্তব্যাংক লেনদেন পুরোপুরি বন্ধ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে যে ডলার বিক্রি করছে, তার ৯৫ শতাংশই ব্যয় হচ্ছে সরকারি কেনাকাটায়। ফলে বেসরকারি খাতের আমদানির জন্য ব্যাংকগুলোকে বেশি দামে ডলার কিনেই পরিশোধ করতে হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়েই দীর্ঘদিন পর হলেও টাকার দরপতনে বাধ্য হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
সূত্র মতে, মার্কিন ডলার সারাবিশ্বের লেনদেনের প্রধানতম বৈশ্বিক মুদ্রা। আন্তর্জাতিক ব্যাংকগুলোয় বৈদেশিক মুদ্রার ক্ষেত্রে মার্কিন ডলারের অংশ ৬৪ শতাংশের বেশি। অপরিশোধিত তেলসহ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ৮৫ শতাংশ ক্ষেত্রে মার্কিন ডলার ব্যবহার করা হয়। বিশ্বব্যাপী প্রায় ৪০ শতাংশ ঋণ ডলারে অনুমোদিত হয়। বিশ্বের ১৮০ বা এর বেশি অন্যান্য মুদ্রার বেশিরভাগই নিজ নিজ দেশের মধ্যে ব্যবহৃত হয়।
গত রোববার ব্যাংকারদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাফেদা বৈঠক করে আন্তঃব্যাংকে ডলারের বিনিময় হার হবে ১০৬ টাকা ১৫ পয়সা নির্ধারণ করে। এর আগে সোনালী, জনতা, অগ্রণীসহ সরকারি ব্যাংকগুলো বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজ থেকে ১১০ টাকা থেকে ১১১ টাকা করে ডলার কিনছিল। হঠাৎ করে এর দর ২ থেকে ৩ টাকা কমিয়ে ১০৮ টাকা বেঁধে দেয়ায় এখন এক্সচেঞ্জ হাউজগুলোতে প্রবাসীরা ডলার দিচ্ছেন না। তারা ১১০ থেকে ১১১ টাকার কমে ডলার বিক্রিতে রাজি হচ্ছেন না। ফলে বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো প্রবাসীদের কাছ থেকে ডলার পাচ্ছে না।
এদিকে সরকারি কয়েকটি ব্যাংক আমদানির দায় মেটাতে এখনও চড়া দামে ডলার কিনছে। তারা আগে থেকে ১১০ টাকা করে ডলার কেনার ঘোষণা দিয়েছে। সেই দরে আগাম যেসব ডলার কেনা হয়েছে সেগুলো এখন সরবরাহ করা হচ্ছে। ব্যাংকগুলো প্রচলিত নিয়মে ৫ কার্য দিবসের আগাম ডলার কিনতে পারে। আগামী রোববার ৫ কার্য দিবস শেষ হবে। ব্যাংকাররা জানান, রেমিট্যান্সের ডলারের দাম হঠাৎ করে ২ থেকে ৩ টাকা কমানো যুক্তিযুক্ত হয়নি। কেননা প্রবাসীরা ব্যাংকে কম দামে ডলার বিক্রি করবেন না। তারা তখন হুন্ডিতে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত হবেন।
ডলারের দাম সাধারণ মানুষের ওপর প্রভাব ফেলে। ডলারের দাম বাড়ার আগে বা টাকার অবমূল্যায়নের আগে যে পরিমাণ উপার্জন করতেন এখনো তাই করছেন। তারা চাইলেই আগের মতো একই পরিমাণ পণ্য বা পরিষেবা কিনতে পারবেন না। আর তাই ডলারের দাম বৃদ্ধি মানেই নিজস্ব মুদ্রার দাম কমে যাওয়া। এটি সাধারণ মানুষকে প্রভাবিত করে। ডলারের দাম বেড়ে গেলে বেশি খরচে অপরিশোধিত তেল আমদানি করতে হয়। তেলের দাম বাড়লে শাকসবজি, ভোজ্য তেল ও খাদ্যশস্যসহ প্রয়োজনীয় পণ্যের পরিবহন খরচও বেড়ে যায়। ফলে, সেসব পণ্যের দামও বাড়ে। এটি সাধারণ মানুষের ওপর প্রভাব ফেলে। এটি একটি দেশকে মূল্যস্ফীতির দিকে ঠেলে দেয়। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যায়।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ডলারের দাম বাড়ায় সব আমদানি ও শিল্পপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে। একসঙ্গে ডলারের দাম এত না বাড়িয়ে পর্যায়ক্রমে বাড়ানো উচিত। এতে সবার কাছে তা সহনীয় হবে। রফতানিকারকরা পড়বেন বেশি বিপাকে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ডলার বাজারে এতদিন একধরনের নিয়ন্ত্রিত স্থিরতা ছিল। কিন্তু নতুন দর নির্ধারণের ফলে বাজার আবার অস্থির হয়ে উঠল। ডলারের দাম একটির সঙ্গে অন্যটি সম্পর্কিত। এখানে দর সমন্বিতভাবে নির্ধারণ করতে হবে। নতুন দর কার্যকর হওয়ার ফলে আমদানি পর্যায়ে ডলারের দাম যেভাবে বাড়ল, এর দায় সাধারণ মানুষকেই বহন করতে হবে।#
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন