বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

আমাদের প্রিয়নবী (সা.) উম্মতের নাজাতই ছিল যাঁর ধ্যানজ্ঞান-২

মুহাম্মাদ আশিক বিল্লাহ তানভীর | প্রকাশের সময় : ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ১২:০০ এএম

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজী বলেন, কিয়ামতের দিন যিনি সর্বশ্রেষ্ঠ ব্যক্তি হবেন তিনি হচ্ছি আমি। তা কী জন্য জানো? কিয়ামতের দিন পৃথিবীর শুরু থেকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত যত মানুষ হবে আল্লাহ তাআলা সবাইকে এক মাঠে একত্র করবেন। তাদের এক শব্দে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। সবাই থাকবে চোখে চোখে। সূর্য নিকটবর্তী করা হবে। মানুষ পেরেশানীতে অস্থির হয়ে পড়বে। সেই মহা বিপদ সইবার মতো নয়। লোকেরা একে অপরকে বলবে, দেখ না আমরা কী কঠিন অবস্থায় আছি? চলো দেখি আমাদের জন্য আল্লাহর কাছে কে সুপারিশ করতে পারেন? একে অপরকে বলবে, চল আমরা হযরত আদম আ.-এর কাছে যাই।

তারা সবাই হযরত আদম আ.-এর কাছে যাবে। গিয়ে বলবে, আপনি তো সবার বাবা। আল্লাহ আপনাকে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন। আপনার ভেতর তিনি রূহ ফুঁকে দিয়েছেন। ফিরিশতাদের তিনি হুকুম করেছেন আপনাকে সিজদা করতে। তারা আপনাকে সিজদা করেছে। আমাদের আজ কী কঠিন অবস্থা তা তো দেখতেই পাচ্ছেন। আপনি আল্লাহর কাছে আমাদের জন্য একটু সুপারিশ করুন!

আদম আ. বলবেন, আমার রব এত ভীষণ রেগে আছেন, এর আগে কোনোদিন তিনি এতটা রেগে থাকেননি এবং ভবিষ্যতেও এরকম আর রাগবেন না। তিনি আমাকে গাছের ফল খেতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু আমি আল্লাহর হুকুম রক্ষা করিনি। নফসী, নফসী! হায়, এখন আমার কী দশা হবে! আমার কী দশা হবে! তোমরা অন্য কারো কাছে যাও। তোমরা নূহের কাছে যাও।

হযরত আদম (আ.)-এর কথামতো তারা হযরত নূহ (আ.) এর কাছে যাবে। গিয়ে বলবে, আপনি এই জমিনে প্রথম রাসূল। আল্লাহ আপনার প্রশংসা করেছেন কৃতজ্ঞ বান্দা হিসেবে। আপনি একটু আমাদের জন্য সুপারিশ করুন! আমাদের অবস্থা তো আপনি দেখতেই পাচ্ছেন। এ আবদার শুনে তিনি বলবেন, আমার রব এতটা রেগে আছেন, এর আগে কোনোদিন তিনি এতটা রেগে থাকেননি এবং ভবিষ্যতেও এরকম আর রাগবেন না। আমি তো আমার কওমের বিরুদ্ধে বদদুআ করেছিলাম। নফসী, নফসী! হায়, এখন আমার কী হবে! তোমরা বরং ইবরাহীমের কাছে যাও।

সে মতে সবাই হযরত ইবরাহীম আ.-এর কাছে যাবে। গিয়ে বলবে, আপনি জমিনে আল্লাহর প্রিয়নবী এবং প্রিয় বন্ধু (খলীল) ছিলেন! আপনি আল্লাহর কাছে আমাদের জন্য একটু সুপারিশ করে দিন! আমাদের অবস্থা তো আপনি দেখতেই পাচ্ছেন। ইবরাহীম আ. বলবেন, আমার রব এতটা রেগে আছেন, এর আগে কোনোদিন তিনি এতটা রেগে থাকেননি এবং ভবিষ্যতেও এরকম আর রাগবেন না। তিনিও নিজের ওজর পেশ করে বলতে থাকবেন, নফসী, নফসী! হায়, আমার এখন কী হবে!! হায়, আমার এখন কী হবে!! তোমরা বরং অন্য কারো কাছে যাও। তোমরা মূসার কাছে যাও।

সবাই আসবে হযরত মূসা আ.-এর নিকট। বলবে, আল্লাহ তো আপনাকে রিসালাত দিয়ে সম্মানিত করেছেন এবং আপনি আল্লাহর সাথে সরাসরি কথা বলতেন। আমাদের জন্য আপনি আল্লাহর কাছে একটু সুপারিশ করুন! আমাদের বিপদ তো আপনি দেখতেই পাচ্ছেন।

এ কথা শুনে হযরত মূসা আ. বলবেন, আমার রব এতটা রেগে আছেন, এর আগে কোনোদিন তিনি এতটা রেগে থাকেননি এবং ভবিষ্যতেও এরকম আর রাগবেন না। আমার হাতে তো একজন মারা পড়েছিল। নফসী, নফসী! হায়, আমার এখন কী হবে! হায়, আমার কী দশা হবে! তোমরা ঈসার কাছে যাও।

সে মতে তারা হযরত ঈসা আ.-এর কাছে যাবে। গিয়ে বলবে, আপনি আল্লাহর রাসূল। আপনি কোলে থাকতেই কথা বলেছেন। আপনার আম্মাজানের মাঝে তো আল্লাহ আপনার রূহ ফুঁকে দিয়েছিলেন। আমাদের জন্য আপনি আল্লাহর কাছে একটু সুপারিশ করুন! আমাদের মসিবত তো আপনি দেখতেই পাচ্ছেন। এ কথা শুনে হযরত ঈসা আ. বলবেন, আমার রব এতটা রেগে আছেন, এর আগে কোনোদিন তিনি এতটা রেগে থাকেননি এবং ভবিষ্যতেও এরকম আর রাগবেন না। নফসী, নফসী! হায়, আমার কী হবে! আমার এখন কী হবে! বরং তোমরা মুহাম্মাদের কাছে যাও।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
Hasan Mahmud ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:২০ এএম says : 0
উম্মতের প্রতি নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর ছিল অতুলনীয় ভালোবাসা। উম্মতের প্রতি মহানবী (সা.)-এর ভালোবাসার কথা বর্ণনা করে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের কাছে তোমাদের মধ্য থেকে একজন রাসুল এসেছেন, যিনি তোমাদের বিপন্নতায় কষ্ট পান, তিনি তোমাদের কল্যাণকামী, মুমিনদের প্রতি দয়ার্দ্র ও পরম দয়ালু।’ (সুরা : তাওবা : ১২৮)
Total Reply(0)
Ismail Sagar ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:২০ এএম says : 0
নবী করিম (সা.) দোয়ার সময় সর্বদা উম্মতের কথা স্মরণ করতেন। সবার জন্য তার মন থাকত ব্যাকুল। তাই প্রতিদিন প্রত্যেক নামাজের পর উম্মতের গুনাহের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা করতেন তিনি।
Total Reply(0)
Md Parves Hossain ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:২১ এএম says : 0
রাসুল (সা.) উম্মতদের বিভিন্ন ধরনের ক্ষতি থেকে বাঁচানোর জন্য অবিরাম চেষ্টা করছেন। পাহাড়ের চূড়ায় উঠে রাসুল (সা.) সব সময় ভাবতেন যে, কীভাবে মানুষদের অন্যায়-অবিচার কাজ থেকে বিরত রাখা যায়। নিজেকে বিলীন করে দিয়েছিলেন তার উম্মতের সার্বিক কল্যাণের জন্য।
Total Reply(0)
Jahangir Kabir ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৭:২১ এএম says : 0
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুনিয়ায় উম্মতকে বাঁচানোর জন্য চেষ্টা-ফিকির করে শেষ করেছেন এমন নয়, বরং তিনি আখিরাতেও গুনাহগার উম্মতকে বাঁচানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করবেন।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন