সম্প্রতি ইউক্রেনের দক্ষিণে কিয়েভের সেনাদের আক্রমণ ছিল সবচেয়ে প্রত্যাশিত সামরিক পদক্ষেপ। কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউক্রেনের কর্মকর্তারা এর পূর্বাভাস দিয়ে আসছিলেন। তাদের লক্ষ্য ছিল উপকূল বরাবর একটি কৌশলগত অঞ্চল থেকে রাশিয়ানদের পিছনে ঠেলে দেয়া, বিধ্বস্ত নাগরিকদের আস্থা বৃদ্ধি করা এবং মিত্রদের কাছে প্রমাণ করা যে, ইউক্রেন পশ্চিমাদের সরবরাহকৃত অস্ত্র কাজে লাগাতে পারছে।
কিন্তু সামগ্রিকভাবে, উত্তর-পূর্ব থেকে দক্ষিণে একটি ভিন্ন চিত্র দেখা যায়। শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রভাশালী ও জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের এক সরেজমিন প্রতিবেদনে উঠে এনেছে সেখানকার বাস্তব অবস্থা। তারা কয়েক ডজন কমান্ডার, সাধারণ সৈন্য, চিকিৎসক, গ্রামের নেতা এবং বেসামরিক ব্যক্তিদের সাক্ষাতকার নিয়েছেন যারা সম্প্রতি সংঘর্ষের অঞ্চল থেকে পালিয়ে গেছেন। তারা যে বর্ণনা দিয়েছেন, তা কিয়েভ সরকারের চালানো প্রচারণার বিপরীত। তারা বলছে, লড়াইটি ইউক্রেনীয় সেনাদের গ্রাস করছে, তাদের মধ্যে হতাহতের সংখ্যা মারাত্মকভাবে বাড়ছে এবং সম্ভবত এ মুহূর্তে এটি ইউক্রেনের সবচেয়ে হৃদয়বিদারক যুদ্ধ।
দখলকৃত এলাকাগুলোতে রাশিয়ান বাহিনী সুবিধাজনক অবস্থান নিয়ে ঘাঁটি গেড়ে বসেছে। এ সপ্তাহান্তে, ক্রেমলিন সেসব এলাকা পাকাপোক্তভাবে নিজেদের সাথে সংযুক্ত করার জন্য গণভোট আয়োজন করেছে। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, হামলা ছাড়া তাদের আর কোনো বিকল্প নেই। অক্টোবরের বৃষ্টিপাতে সেখানকার রাস্তাগুলো তলিয়ে যাওয়ার আগে তারা এলাকাগুলো পুনরুদ্ধার করার জন্য দৌড়াচ্ছে। শীত আসার আগেই মিত্রদের কাছে তাদের প্রমাণ করতে হবে যে, তারা রাশিয়ানদের বাইরে ঠেলে দিতে পারে।
ইউক্রেনীয় সরকার সাধারণত হতাহতের পরিসংখ্যান প্রকাশ করে না, তবে গত সপ্তাহে সাক্ষাতকার দেয়া সৈন্য এবং কমান্ডাররা যুদ্ধক্ষেত্রের ক্ষয়ক্ষতিকে ‘উচ্চ’ এবং ‘বিশাল’ হিসাবে চিত্রিত করেছেন। তারা বড় ধরনের একটি আক্রমণের বর্ণনা দিয়েছেন, যেখানে ইউক্রেনীয় ট্যাঙ্ক এবং সাঁজোয়া যানের বিশার এক বহর খোলা মাঠ অতিক্রম করার চেষ্টা করেছিল। শুধুমাত্র মাইন ও আর্টিলারি দিয়ে নির্দয়ভাবে আঘাত করে পুরো বহর উড়িয়ে দিয়েছিল রুশ সেনা।
প্রকাশ্যে হতাহতের বিষয়ে আলোচনা করা নিষেধ থাকায় নাম গোপণ করে একজন ইউক্রেনীয় সৈন্য বলেছেন যে, সাম্প্রতিক হামলার সময়, ‘আমরা দুই ঘন্টার মধ্যে ৫০ জন লোককে হারিয়েছি।’ বিভিন্ন ফ্রন্টলাইন ইউনিটের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা অপর এক সৈনিক বলেছেন, ছোট একটি গ্রাম দখল করার চেষ্টা করার সময় ‘শতশত’ ইউক্রেনীয় সৈন্য নিহত বা আহত হয়েছিল, অথচ গ্রামটি এখনও রুশ সেনাদের হাতে রয়েছে।
ইউক্রেনের ১৮টি হিমারস রকেট ও একটি লঞ্চার ধ্বংস করেছে রুশ সেনা : রাশিয়ান সশস্ত্র বাহিনী ইউক্রেনের হিমারস মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেমের (এমএলআরএস) একটি লঞ্চারকে নিকোলাভ অঞ্চলের ইয়াভকিনো গ্রামের কাছে ধ্বংস করেছে, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সরকারী প্রতিনিধি, লেফটেন্যান্ট-জেনারেল ইগর কোনাশেনকভ গতকাল ঘোষণা করেছেন।
‘হিমারস এমএলআরএস লঞ্চারটি নিকোলায়েভ অঞ্চলের ইয়াভকিনো বসতি এলাকায় ধ্বংস করেছে রুম সেনা,’ কোনাশেনকভ বলেছেন। তার মতে, ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর ইউনিটগুলি আমেরিকান হিমারস মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেম ব্যবহার করে লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিকের স্বাতভস্কি জেলার ট্রাভনেভো গ্রামে আক্রমণ করেছিল, তারা চারটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছিল। তিনি যোগ করেছেন যে, রাশিয়ান বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা একদিনে ১২টি ইউক্রেনীয় ড্রোন গুলি করে, এবং ১৮টি হিমারস মিসাইল আটকে দেয়া। ‘খেরসন অঞ্চলের নোভায়া কাখোভকা এবং ডোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকের ভ্যালেরিয়ানোভকার বসতি এলাকায় রাশিয়ান বাহিনী মোট ২১টি রকেট আটকে দিয়েছে, যার মধ্যে ১৮টি হিমারস রকেট রয়েছে,’ তিনি বলেছিলেন। খেরসন অঞ্চলে রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিক (এলপিআর) তিনটি আমেরিকান হার্ম অ্যান্টি-রাডার মিসাইল গুলি করে নামিয়েছে, সরকারী প্রতিনিধি বলেছেন, ‘খেরসন অঞ্চলের নোভায়া কাখোভকা অঞ্চলে এবং লুহানস্ক পিপলস রিপাবলিকের স্যাতোভোতে, তিনটি আমেরিকান হার্ম রাডার বিরোধী ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে নামানো হয়েছিল।’
ইউক্রেনের দুইটি বিশেষ মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত : রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট-জেনারেল ইগর কোনাশেনকভ গতকাল বলেছেন, ইউক্রেনের দুইটি বিশেষ মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে রুশ সেনা। তিনি জানান, ওই বিমানগুলো যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি হার্ম ক্ষেপণাস্ত্র বহনের জন্য পুনরায় ডিজাইন করা হয়েছিল। ‘যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি বিকিরণ-বিরোধী হার্ম ক্ষেপণাস্ত্র বহন করার জন্য একটি ইউক্রেনীয় মিগ-২৯ ফাইটার নতুনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যেগুলো রাশিয়ান এরোস্পেস ফোর্সের ফাইটার এভিয়েশন নিকোলায়েভ অঞ্চলের নভোক্রাইঙ্কা এবং বাশটাঙ্কার বসতিগুলির কাছে গুলি করে ভূপাতিত করে,’ তিনি বলেছিলেন।
রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর তিনটি ব্রিগেডের ফায়ারিং পজিশনে সাতটি আর্টিলারি প্লাটুন এবং ডনেপ্রপেট্রোভস্ক অঞ্চল, ডোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক, নিকোলায়েভ এবং জাপোরোজিয়া অঞ্চলে আঞ্চলিক প্রতিরক্ষার একটি ব্রিগেড ধ্বংস করেছে। ‘সাতটি আর্টিলারি প্লাটুন ৫৭ তম মোটর চালিত পদাতিক, ১০ তম পর্বত আক্রমণ, ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর ২৪ তম যান্ত্রিক ব্রিগেড, সেইসাথে ১০২ তম আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা ব্রিগেডের লুবিমোভকা অঞ্চলের লিউবিমোভকার বসতিগুলির এলাকায় গুলি চালানোর অবস্থানে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।’
রাশিয়ান বিমান, ক্ষেপণাস্ত্র সৈন্য, এবং আর্টিলারি এক দিনে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর ৩৩টি আর্টিলারি ইউনিটে আঘাত করেছে, সেইসাথে ১৭৮টি জেলায় বাহিনী এবং সামরিক সরঞ্জাম ধ্বংস করেছে, মুখপাত্র জানান, নিকোলাইভ শহরের কাছে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর ৮০ তম এয়ারবর্ন অ্যাসল্ট ব্রিগেডের ব্যাটালিয়নের কমান্ড পোস্ট, বিদেশী ভাড়াটে সৈন্যদের অস্থায়ী স্থাপনার পয়েন্ট এবং ১০ তম পশ্চিমের উপকণ্ঠে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর মাউন্টেন অ্যাসল্ট ব্রিগেড জাপোরোজিয়া শহর এবং ডোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকের দ্রুজকোভকা অঞ্চলের পাশাপাশি ১৭৮টি জেলায় ৩৩টি আর্টিলারি ইউনিট, বাহিনী এবং সামরিক সরঞ্জাম ধ্বংস করা হয়েছে।
জাপোরোজিয়া প্ল্যান্টে ৮টি ইউক্রেনীয় কামিকাজে ড্রোন আটক : জাপোরোজিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে (এনপিপি) হামলা চেষ্টাকালে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর আটটি কামিকাজে ড্রোন আটক করেছে রাশিয়ার সশস্ত্র বাহিনী। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সরকারী প্রতিনিধি লেফটেন্যান্ট-জেনারেল ইগর কোনাশেনকভ গতকাল ঘোষণা করেছেন।
‘ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর দ্বারা আটটি কামিকাজে ড্রোন দিয়ে (জাপোরোজিয়া) এনপিপি-এর অঞ্চলে হামলার প্রচেষ্টা প্রতিরোধ করা হয়েছিল। সমস্ত ইউক্রেনীয় মনুষ্যবিহীন আকাশযান পারমাণবিক কেন্দ্রের অঞ্চলের বাইরে গুলি করে নামিয়ে দেয়া হয়েছিল,’ তিনি বলেছিলেন। কোনাশেনকভ আরও স্পষ্ট করেছেন যে, জাপোরোজিয়া এনপিপি এ বিকিরণ পরিস্থিতি স্বাভাবিক। একই সময়ে, রাশিয়ান আর্টিলারি ডোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিক (ডিপিআর) এর মেরিঙ্কার দিকে ইউক্রেনীয় সশস্ত্র বাহিনীর আক্রমণাত্মক প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়েছে। কোনাশেনকভ বলেছেন, ‘রাশিয়ান আর্টিলারির সুনির্দিষ্ট গুলি হামলার ফলে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর ৭৯তম এয়ার অ্যাসল্ট ব্রিগেড ডোনেৎস্ক পিপলস রিপাবলিকের মারিঙ্কার বসতি স্থাপনের দিকে আক্রমণের প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়েছে। শত্রুর ক্ষতি ৫০জনেরও বেশি সেনা নিহত হয়েছে।’
ন্যাটোর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খেরসনের হোটেলে হামলা হয়েছে : ইউক্রেনীয় সামরিক বাহিনী গোয়েন্দা তথ্য ব্যবহার করে এবং ন্যাটো প্রতিনিধিদের তথ্যের ভিত্তিতে খেরসনের কেন্দ্রে একটি হোটেলে হামলা চালিয়েছে। খেরসনের আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের একটি সূত্র রোববার এ তথ্য জানিয়েছে। ‘ন্যাটো প্রতিনিধিদের সহায়তায়, তাদের প্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং তাদের গোপন তথ্যের ভিত্তিতে হোটেলটিতে স্পষ্টভাবে আক্রমণ করা হয়েছিল,’ সূত্র জানিয়েছে। খেরসন অঞ্চলের প্রশাসন হোটেলে হামলাকে ইউক্রেনের পরিকল্পিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বলে অভিহিত করেছে। প্রশাসন এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘হোটেলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা একটি পরিকল্পিত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড।’
গতকাল এক বিবৃতিতে খেরসন অঞ্চলের প্রশাসন জানিয়েছে, সকালে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী দ্বারা আক্রমণের শিকার খেরসনের কেন্দ্রের হোটেলে মিডিয়া প্রতিনিধিরা ছিলেন। প্রশাসনের তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘খেরসন অঞ্চলের প্রশাসন জানিয়েছে যে, আজ ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী রিবাসের প্লে হোটেলের বিল্ডিংয়ে একটি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যেখানে মিডিয়া প্রতিনিধিরা ছিলেন।’ প্রাথমিক তথ্য অনুসারে, এ হামলায় অন্তত দুইজন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন হচ্ছেন খেরসনের পার্লামেন্ট সদস্য। হতাহতদের সবাইকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’
রুশ পুলিশদের অর্ধেক ইউক্রেনে নিয়োগের প্রস্তাব কাদিরভের : ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযানের জন্য রাশিয়ার আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অর্ধেক কর্মীকে নিয়োগের প্রস্তাব করেছেন চেচনিয়ার প্রধান রমজান কাদিরভ। ‘এমনকি যদি সংরক্ষিত সেনাদের বাদও দেই, তবুও আমাদের কাছে কর্মচারীদের একটি দল রয়েছে, যাদের ভাল প্রশিক্ষণ এবং অস্ত্র দক্ষতা রয়েছে,’ তিনি টেলিগ্রামে বলেছিলেন।
এই কর্মচারীরা জরুরী পরিস্থিতি মন্ত্রণালয়, ফেডারেল মার্শাল সার্ভিস, ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস, ফেডারেল গার্ড সার্ভিস, ফরেন ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস, ফেডারেল প্রিজন সার্ভিস, ফেডারেল কাস্টমস সার্ভিস, প্রসিকিউটর এবং ইনভেস্টিগেটিভ কমিটির কর্মী, কাদিরভ বলেছেন। ‘নিরাপত্তা এবং সামরিক পরিষেবাগুলির সাথে মিলিত, এরা প্রায় ৫০ লাখ মানুষ, যারা নিয়মিত শারীরিক ফিটনেস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। যদি আমরা তাদের মধ্যে ৫০ শতাংশ কর্মীকে তাদের কাজের জায়গায় রেখে দেই, তাহলেও ২৫ লাখ লোক থাকবে যারা যে কোনও সেনাবাহিনীকে ছাপিয়ে যাবে এবং কোন রিজার্ভরও প্রয়োজন হবে না,’ তিনি বলেন।
কাদিরভ বলেছেন যে, এই সংস্থাগুলোর প্রধানরা এখনই অর্ধেক কর্মী নিয়ে কাজ চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা শুরু করতে পারে। ‘রাশিয়া একটি বিশাল দেশ, এবং এতে এত সম্পদ রয়েছে যে ন্যাটো এবং পশ্চিমারা গণনা করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়বে এবং সামরিক সংস্থান যে কেউ কল্পনা করতে পারে তার চেয়ে অনেক বেশি,’ বলেছেন চেচনিয়া প্রধান।
ইউক্রেনে শান্তিপূর্ণ সমাধানের সকল প্রচেষ্টাকে সমর্থন করবে চীন : চীন সরকার ইউক্রেন সঙ্কটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে অবদান রাখবে এমন সমস্ত আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাকে সমর্থন করবে। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই শনিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশন এ কেথা বলেছেন।
‘আমরা ইউক্রেনের সঙ্কটের শান্তিপূর্ণ সমাধান প্রচারের লক্ষ্যে সকল প্রচেষ্টাকে সমর্থন করব,’ ওয়াং ই বলেছেন, ‘এটি একটি চ্যালেঞ্জ-পূর্ণ যুগ। বিশ্ব নতুন দাঙ্গা ও বিপ্লবী সময়কালে প্রবেশ করেছে। শত বছরে অদেখা পরিবর্তন দ্রুত ঘটছে। আবার এটি একটি আশাপূর্ণ যুগ। শান্তি ও উন্নয়ন যুগের প্রতিপাদ্যের অবস্থান পরিবর্তন হয়নি। বিভিন্ন দেশের জনগণের অগ্রগতি অর্জন ও সহযোগিতা জোরদারের সদিচ্ছা আরও দৃঢ় হয়ে উঠেছে। এ যুগের চাহিদা মেটাতে, ঐতিহাসিক প্রবণতার সঙ্গে তাল মিলাতে এবং চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং’র উত্থাপিত মানব জাতির অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট কমিউনিটি গঠন করতে চীন দৃঢ়তার সঙ্গে স্পষ্টভাবে নিজের উদ্যোগ উত্থাপন করেছে। আর সেগুলো হলো: শান্তি চায়, যুদ্ধ নয়। উন্নয়ন চায়, দারিদ্র্য নয়। উন্মুক্তকরণ চায়, রুদ্ধদ্বার নয়। সহযোগিতা চায়, বৈরিতা নয়। সংহতি চায়, বিচ্ছিন্নতা নয়। এবং সমতা চায়, আধিপত্য নয়।’ সূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস, তাস, বিবিসি নিউজ, সিনহুয়া।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন