নক্ষত্রেরও একদিন মরে যেতে হয়! জীবনানন্দ দাশের কবিতার এই পঙক্তির মতই সত্য, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর বর্তমান অবস্থা। অনেক-তো হলো, বয়সের হাওয়া যে এবার সত্যিই লেগেছে তার দেহে। পরশু রাতে ব্রাহার মিউনিসিপ্যাল স্টেডিয়ামে গোটা ম্যাচেই দাপট দেখালো পর্তুগাল। প্রতিপক্ষের গোলে কাঁপুনি ধরিয়ে দেওয়া শট গুলো নিলো রোনালদোরাই। কিন্তু সোনার হরিন গোলটা এলো না। গোটা দুই খাঁটি সুযোগ নষ্ট করলেন স্বয়ং রোনালদো। অন্যদিকে একঘেয়ে খেলা স্পেন ম্যাচের শেষ দিকে বদলি খেলোয়াড়দের জোরে কোনরকম পেয়ে গেল এক গোল। আর তাতেই টানা দ্বিতীয়বারের মত নেশন্স লিগের শেষ চারের টিকেট মিলল লুই এনরিকের দলের।
লিগ ‘এ’-২ গ্রæপ থেকে শেষ চারে যাওয়ার জন্য জয় ছাড়া ভিন্ন রাস্তা খোলা ছিল না স্পেনের। পঞ্চম রাউন্ডে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে হারের কারণে, স্পেনের সংগ্রহ ছিল ৮ পয়েন্ট। যেখানে ২ পয়েন্ট এগিয়ে থেকে ম্যাচে নামে ফার্নান্দো সান্তোসের পর্তুগাল। এনরিকে সুইজারল্যান্ড ম্যাচের একাদশ থেকে ৭ জনকে এদিন বেঞ্চে রেখে একাদশ সাজান। বুসকেটস, গাভি, পেদ্রি ও আলবাদের বসিয়ে রাখেন কেবল আক্রমণাত্মক খেলার লক্ষ্যে। যথারীতি ম্যাচে ৬৮ শতাংশ বলের দখল থাকার পরও ম্যাচের লাগাম ছিল স্বাগতিকদের হাতে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই স্পেনের চরম পরীক্ষা নেয় পর্তুগিজরা। ব্রæনো ফার্নান্দেস, দিয়াগো জোটাদের সামনে এই সময় চিনের প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন স্প্যানিশ গোলকিপার উনাই সিমোন। বিরতির পর রোনালদোর দুই শট থামান বিলবাওয়ের এই কিপার। এই সময় লেফট উইং থেকে জোটার বাড়ানো একটা বল ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা রোনালদোর কাছে গেলে, বাজে প্রথম টাচের কারণে নিয়ন্ত্রণ হারান ৩৮ ছুঁই ছুঁই এই ফুটবলার। এরপর মার্কার ছাড়া দাঁড়ানো লিয়াওকে বল ক্রস করতে ব্যর্থ হন রোনালদো। অন্যদিকে এনরিকে বিরতির পরপরই চারজন বদলি খেলোয়াড় নামিয়ে আক্রমণ শাণিত করেন। যার ফলেই ম্যাচের ৮৮ মিনিটে বদলি নিকো উইলিয়ামসের হেড থেকে গোল করে দলকে জয় এনে দেন আলভারো মোরাতা।
এদিকে টুইটারে পর্তুগালের সমর্থকরা রীতিমত ধুয়ে দিচ্ছে কোচ সান্তোসকে। বড় প্রতিপক্ষ ও ক্ষণ আসলেই ডিফেন্সিভ হয়ে যাওয়া এবং গোল হজমের পর শোধ দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোন কৌশল না থাকাকেই দুষলেন সবাই। তাছাড়া পালহিনহার মতন প্লেয়ারকে বসিয়ে রেখে অকার্যকর উইলিয়াম কার্ভালহোকে খেলানো মেনে নিতে পারছে না পর্তুগিজরা। তবে এসবে থোরায় কেয়ার সান্তসের। তার দাবি কাতার বিশ্বকাপের ‘অন্যতম ফেবারিট’ পর্তুগাল। এই ৬৭ বছর বয়সী ম্যানেজার জানান, ‘প্রথমার্ধে আমরাই গোছালো ফুটবল খেলেছি। ওরা সুযোগই পায়নি। আর আমরা অনেক সুযোগ পেয়েও গোল পাইনি।’
অন্যদিকে ম্যাচের আগেই চাপ কমাতে পর্তুগালকে ফেবারিট বলেছিলেন এনরিকে। ম্যাচ জিতে এই স্প্যানিশ কোচ বলেন, ‘পর্তুগাল খুব উঁচু মানের দল। তাদের হারিয়ে আবারও শেষ চারে উঠতে পারাটা দারুণ ব্যাপার।’ সেমিফাইনালসে ওঠা বাকি তিন দল- ক্রোয়েশিয়া, ইতালি ও নেদারল্যান্ডস। আগামী বছর জুনে চ‚ড়ান্ত চার দলের শিরোপা লড়াই অনুষ্ঠিত হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন