সিলেটের মাটিতে এশিয়া কাপের সূচনাতে দারুণ খেলেছে বাংলাদেশের মেয়েদের। কথায় বলে, শুরুতে ভালো মানে অর্ধেক শেষ। থ্যাইল্যান্ডকে একেবারে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। প্রথম ম্যাচে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে জয়ে স্বভাবতই ফুরফুরে জ্যোতিরা। এবার সামনে পাকিস্তান। টুর্নামেন্টে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে এ দুই দল। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের আজ সকাল ৯টায় লড়বে নিগার সুলতানা জ্যোতি ও বিসমাহ মারুফের দল।
শক্তিমত্তার বিচারে থাইল্যান্ড থেকে অনেক এগিয়ে পাকিস্তান। টি-২০তে দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ের পরিসংখ্যানও বাংলাদেশের জন্য সুখকর নয়। ফলে টুর্ণামেন্টের দ্বিতীয় ম্যাচে এসে শক্ত প্রতিদ্ব›িদ্বতার মুখেই পড়তে হচ্ছে বাংলাদেশকে। পাকিস্তানও দারুণ সুচনা করেছে টুর্ণামেন্টে। গতকালই মালদ্বীপকে ৯ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েছে তারা। যদিও প্রতিপক্ষ নিয়ে না ভেবে নিজেদের সা¤প্রতিক পারমরম্যান্সই ধরে রাখার দিকে মনোযোগি বাংলাদেশের মেয়েরা। এমনটিই জানালেন অলরাউন্ডার রোমানা আহমেদ। পাকিস্তানের সাথে মাঠে নামার আগে গতকাল সকালে সিলেট স্টেডিয়ামে অনুশীলন করে বাংলাদেশ দল। অনুশীলন শেষে রোমানা বলেন, ‘এবার ভালো প্রস্তুতি নিয়েই এসেছি আমরা। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের সঙ্গে বেশ কিছু ম্যাচ খেলেছি আমরা। সা¤প্রতিক সময়ে আমরা জয়ের মধ্যেই আছি। সবমিলিয়ে ওদের সঙ্গে খেলার জন্য প্রস্তুত রয়েছি আমরা।’
সা¤প্রতিক সময়ে জয়ের ধারাবাহিকতায় থাকলেও পাকিস্তানের সাথে টি২০’র রেকর্ড একেবারেই নাজুক সালমা-জ্যোতিদের। ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত সংস্করণে দুইদল ১৫ বার মুখোমুখি হয়ে বাংলাদেশের জয় মাত্র একটিতে। পরিসংখ্যান বলছে- পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৭ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ জিতেছে কেবল একটি। তবে আপাতত ওসব ভুলে পাকিস্তানকে হালকাভাবেই নিচ্ছেন রোমানারা। পরিসংখ্যান নিয়ে উদ্বিগ্ন নন রোমানা, বরং শক্তির জায়গা দেখানোর প্রত্যয় তার কণ্ঠে, ‘আমরা তো আমাদের শক্তির জায়গা দেখবো। আমরা শক্তভাবেই এগোচ্ছি। শেষ কয়েকটা টুর্নামেন্টে আমাদের মেয়েরা অনেক ভালো করেছে। ইনফ্যাক্ট বড় কিছু অর্জন করার লক্ষ্য আমাদের। আমরা শক্তভাবে এগোচ্ছি, এটুকু বলতে পারি আমাদের মেয়েরা ভালো করছে। সামনের ম্যাচগুলোতে ভালো করবে আরও।’
সবশেষ এশিয়া কাপ ও ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের মেয়েদের হারানোর সুখস্মৃতি নিয়েই এবার নামবে বাংলাদেশ। সবমিলিয়ে টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৫ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশের জয় মাত্র এক ম্যাচে। তবে সেটি আবার ২০১৮ সালের এশিয়া কাপে। তবে ওয়ানডে ফরম্যাটে পাকিস্তানের বিপক্ষে শেষ পাঁচ ম্যাচের চারটিই জিতেছে টাইগ্রেসরা। এর মধ্যে ওয়ানডে বিশ্বকাপের জয়ও রয়েছে। সেই সুখস্মৃতি কথা মনে করিয়ে রোমানা বলেন, ‘শেষ বিশ্বকাপে আমরা ওদের হারিয়েছি। ওদের মাটিতেই হারিয়েছে টি-টোয়েন্টিতে। বেশ কিছু অর্জন আছে ওদের বিপক্ষে। শেষ অনেকদিন ওদের কাছে হারিনি। এবার আমাদের মেয়েরা অবশ্যই ভালো কিছু করবে। শেষ এশিয়া কাপেও আমরা ভালো করেছি।’ ঘরের মাঠে নিজেদের সেরাটা দেয়ারা কথা জানিয়ে রোমানা বলেন, ‘আমরা আমাদের অ্যাটাকেই চলবো। সর্বশেষ ওয়ানডেতে হারিয়েছি ওদের। এখন টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের সেরাটা দেবো। হার-জিত এটা খেলার পর বোঝা যাবে, কিন্তু আমরা নিজেদের সেরাটা দেবো।’
বরাবরই স্পিনে শক্তিশালী পাকিস্তান। প্রতিপক্ষকে ঘূর্ণিপাকে ফেলতে তাদের দলেও আছে নিদা দার, সাদিয়া ইকবাল, তুবা হাসানের মতো স্পিনাররা। সেই দলটিকেই স্পিন দিয়ে কাবু করার পরিকল্পনা আঁটছে সালমা খাতুন, রুমানা ও নাহিদা আক্তারদের বাংলাদেশ। দুই দলের স্পিন আক্রমণই যে ম্যাচের ফল নির্ধারণ করে দেবে তা অনুমেয়। তবে অভিজ্ঞতা ও সা¤প্রতিক ছন্দ মিলিয়ে পাকিস্তানের থেকে নিজেদের বোলিং আক্রমণ এগিয়ে রাখছেন লেগ স্পিনার রুমানা, ‘জানি ওরা স্পিন বল ভালো খেলে। কিন্তু স্পিন দিয়েই তো ওদের বরাবর অ্যাটাক করেছি। আমাদের স্পিনাররা আগে যেটা করতো, এর চেয়ে বেশি ভালো করছে। আমরা দেখেছি যে ম্যাচগুলো খেলেছি, স্পিনাররা বেস্ট এফোর্টটা দিয়ে আসছে। এখানেও পাকিস্তানকে হারাতে আমাদের স্পিন পর্যাপ্ত।’
সা¤প্রতিক সময়ে ফরম্যাট ভেদে পাকিস্তানের বিপক্ষে এই ভালো খেলার অনুপ্রেরণাই এবার কাজে লাগাতে চান বাংলাদেশ দলের এই তারকা অলরাউন্ডার। বলেছেন, এবার ভালো কিছু করবে বাংলাদেশ, ‘আমরা ওদের সঙ্গে বেশ কিছু ম্যাচ খেলেছি, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দুটোই। আমার মনে হয় এখন অবধি যেভাবে প্রস্তুত আছি, ওদের সঙ্গে খেলার জন্য যথেষ্ট।’ এই মাঠে ১৪০ হলেই ম্যাচ জেতা সম্ভব জানিয়ে রোমানা বলেন, ‘এখানে স্কোর করার মতো অনেক সুযোগ আছে। এখানে যদি ১৪০ করতে পারলে সহজ হয়ে যাবে আমাদের জন্য।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন