সবুজের হাতছানিতে প্রকৃতিপ্রেমীরা ছুটছেন রাঙামাটি। দুর্গাপূজা ও সাপ্তাহিক ছুটিতে বিপুল পর্যটকের আগমন ঘটেছে। পর্যটন বিনোদন কেন্দ্রগুলো এখন লোকে লোকারণ্য। হোটের মোটেল ছাড়াও শহরের পর্যটন সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যবসাও জমজমাট। এতে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে পরিবহন, হোটেল, রেস্তোরাঁ, পোশাক ও স্থানীয় উৎপাদিত পণ্য-সামগ্রী বিপণীসহ পর্যটন সংশিষ্ট ব্যবসা-বাণিজ্য। এর ফলে ব্যস্ত সময় পার করছেন রাঙামাটি শহরের অভ্যন্তরীণ একমাত্র যানবাহন অটোরিক্সা ও নৌযান চালকেরাও।
বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে আগত পর্যটকরা রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুসহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ঝুলন্তক সেতু ছাড়াও রাঙামাটিতে পর্যটনের আকর্ষণীয় স্পটের মধ্যে শুভলং ঝর্ণা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জাদুঘর, ডিসি বাংলো পলওয়েল পার্ক, কাপ্তাই লেক, পেদাটিংটিং, টুকটুক ইকো ভিলেজসহ কাপ্তাই লেকের পাড়ে গড়ে ওঠা বিভিন্ন পর্যটন স্পটগুলো পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে।
এছাড়া রাঙামাটি শহরে সেনাবাহিনী পরিচালিত আরণ্যক হলিডে রিসোর্টে দৃষ্টিনন্দন ওয়াটার পার্ক ‘হ্যাপি আইল্যান্ড’ রয়েছে। তবে রাঙামাটিতে পর্যটকদের মূল আকর্ষণ ৩৩৫ ফুট দৈর্ঘের ঝুলন্ত সেতু ঘিরেই। আর পর্যটকদের ভিড়ে পর্যটন স্পটগুলোতে অন্যান্য ব্যবসাও জমে উঠেছে। প্রাণহীন এলাকাগুলোতে সাময়িকভাবে চাঙা হয়ে উঠেছে অর্থনীতি।
রাজধানী ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক দম্পতি রবিন বিশ্বাস বলেন, রাঙামাটিতে আতœীয়ের বাসায় বেড়াতে এসেছি পূজা উপলক্ষ্যে। রাঙামাটি এত সুন্দর তা আগে জানতাম না। বিয়ের পর এই প্রথম আসলাম। খুব ভাল লাগছে।
চট্টগ্রাম থেকে আসা আশিক দাশ বলেন, আমাদের দেশে এত সুন্দর জায়গা আছে এখানে না এলে জানতাম না। খুব ভাল লাগছে রাঙামাটি। তবে পর্যটনের উন্নয়নে এ শহরকে আরও বেশি ঢেলে সাজানো উচিত। তাহলে মানুষ বিদেশে বেড়াতে না গিয়ে এ শহরে বেড়াতে আসবে।
রাঙ্গামাটি হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন সেলিম বলেন, ‘তিন দিনের টানা ছুটিতে এখানে প্রচুর পর্যটক এসেছেন। এছাড়াও ছুটির দিনেও পর্যটকের ভিড় লেগেই থাকে। শীত মৌসুমের শেষ দিকে ভালো সারা পাচ্ছি আমরা। আগে থেকেই বুকিং হয়ে থাকায় প্রতিটি হোটেল-মোটেল পরিপূর্ণ পর্যটকে।’
রাঙ্গামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক সৃজন বিকাশ বড়ুয়া বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ‘টানা তিন দিনের ছুটিতে রাঙামাটির সরকারি পর্যটন মোটেলের শতভাগ আগাম বুকিং হয়ে গেছে। শহরের অন্যান্য আবাসিক হোটেলেও একই অবস্থা। পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আর পর্যটন স্পটগুলো আরো বেশি আকর্ষণীয় করতে ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। রাঙ্গামাটিতে পর্যটন স্পটগুলো সংস্কার করে যুগোপযোগী করা গেলে পর্যটন শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা যাবে বলে মনে করেন পর্যটনসংশিষ্টরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন