হারিয়ে যাওয়া বন্ধুকে নিয়ে গান বেঁধেছিলেন কবীর সুমন। বহুদিন পর বন্ধুর খোঁজ পেয়ে চমকে যাওয়ার গল্পও রেখেছিলেন তাতে। কে জানত গানটি তারই জীবনের গল্প হয়ে ধরা দেবে? হ্যাঁ, ১৩ বছর পর ঢাকায় গান করতে এসে এমনই এক অভিজ্ঞতা হলো তার। খুঁজে পেলেন হারানো এক বন্ধুকে।
জীবনের একটা সময় চাকরি নিয়ে জার্মানিতে চলে যান কবীর সুমন। সেখানে গিয়ে বাংলাদেশের কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় তার। গতকাল শনিবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন অডিটোরিয়ামে গান শোনানোর মাঝে খানিকটা বিরতি নিয়ে সেইসব বন্ধুদের স্মৃতিচারণ করছিলেন। কেউ চলে গেছেন না ফেরার দেশে, কেউ অন্য দেশে। আর একজন এখনও ঢাকাতেই আছেন, তার নাম শাহজাহান ফারুক।
‘আমি জানি না, শাহজাহান ফারুক এখানে আছেন কি না’— কথাটি গানওয়ালার মুখনিঃসৃত হতেই দর্শক সারিতে একটি প্রবীণ হাত উঠে এলো। সেইসঙ্গে শোনা গেল ‘আছে।’
সুমন বুঝতে পারলেন হাতটি তারই হারিয়ে যাওয়া বন্ধু শাহজাহান ফারুকের। অবাক গায়ক কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। আশপাশের লোকদের ডেকে বললেন, ‘আমাকে ধরো, দাঁড়াতে হবে।’ বন্ধু শাহজাহান ফারুখকেও চলে আসতে বললেন মঞ্চে।
হারিয়ে যাওয়া বন্ধুটি কাছে যেতেই জড়িয়ে ধরেন আবেগ আপ্লূত সুমন। চোখ জোড়া ছলছল করছিল। রুমাল দিয়ে মুছতে মুছতে জানালেন খুব কষ্টে কান্না চেপে রেখেছেন তিনি। ভারি কণ্ঠে বললেন, ‘জীবনটা কি সুন্দর না! মা কালির দিব্যি খেয়ে বলছি আমি সত্যিই জানতাম না ফারুক এখানে আছে।’
দীর্ঘদিন পর হারিয়ে যাওয়া দুই বন্ধুর এই মিলন ছিল গতকালের আসরের শ্রোতাদের জন্য বাড়তি পাওনা। সেই মাহেন্দ্রক্ষণের সাক্ষী থেকে গেলেন তারা। তাদের করতালিতে মুখর হয়ে গেল মিলনায়তন।
কবীর সুমন সর্বশেষ ঢাকায় এসেছিলেন ২০০৯ সালে। ১৯৯২ সালে প্রকাশিত তার প্রথম আধুনিক গানের অ্যালবাম ‘তোমাকে চাই’ প্রকাশের ৩০ বছর পূর্তি হয়েছে এ বছর। এ উপলক্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে গাইতে এসেছেন তিনি। অনুষ্ঠানের নাম তাই রাখা হয়েছে, ‘তোমাকে চাই’-এর ৩০ বছর উদযাপন, ‘সুমনের গান ও বাংলা খেয়াল’।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন