আগামী ডিসেম্বর মাসে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন হবার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এখনো তা চূড়ান্ত করা হয়নি। আগামী ২৮ অক্টোবর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকের সম্মেলনের দিন তারিখ চূড়ান্ত করা হবে বলে জানা গেছে। সম্মেলন ছাড়াও বৈঠকে আগামী জাতীয় নির্বাচন এবং নির্বাচনে প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা, বিএনপির আন্দোলন মোকাবেলা করা, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষঢ়যন্ত্র মোকাবেলা করার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে।
এছাড়া মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলনের মাধ্যমে তৃণমূল সংগঠন শক্তিশালী করা, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, মহিলা লীগ, যুব মহিলা লীগ, ছাত্রলীগ, তাঁতী লীগ, মৎসজীবি লীগের ম্মেলনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা হতে পারে। দলীয় সূত্রে জানা যায়, বৈঠকে ১১ টি এজেন্ডা সামনে রাখা হয়েছে। এর বাইরে অন্যান্য ইস্যুগুলো অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা করা হবে। এজেন্ডাগুলো হল: যেমনÑশোক প্রস্তাব পাঠ, ৩ নভেম্বর জেল হত্যা দিবস, ১০ নভেম্বর শহীদ নূর হোসেন দিবস, ২৭ নভেম্বর শহীদ ডা. মিলন দিবস, ৫ ডিসেম্বর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী, ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস, ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল-২০২২, দেশের আর্ত সামাজিক পরিস্থিতি, সাংগঠনিক কার্যক্রম ও বিবিধ।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ইনকিলাবকে বলেন, দিবস ভিত্তিক কিছু এজেন্ডা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে। এছাড়া জাতীয় সম্মেলন, বিএনপির আন্দোলন মোকাবেলায় আওয়ামী লীগের কর্মসূচি কি হতে পারে তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী দিক নির্দেশনা দিবেন।
এদিকে গাইবান্ধা-৫ ও জেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়েও আলোচনা হতে পারে। নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ইতোমধ্যে দলের মধ্যে বেশ আলোচনা সমালোচনা চলছে। নির্বাচন কমিশন কী আগামী নির্বাচনে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে কীনা তা নিয়ে বৈঠকে কথা উঠতে পারে। বিএনপির মিছিল, সমাবেশের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার বিপরীতে আওয়ামী লীগের কৌশল নিয়ে কথা বলবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। এ বিষয়ে খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, বিএনপি দেশে অরাজকতা তৈরী করলে অবশ্যই আওয়ামী লীগ চুপচাপ বসে থাকবেনা।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের একজন সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বলেন, সম্প্রতি মাঠ প্রশাসনের সাথে নির্বাচন কমিশন এবং মাঠ প্রশাসনের সাথে জনপ্রতিনিধি ও দলীয় নেতাদের বৈরী সম্পর্ক লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এছাড়া দলীয় নেতাকর্মীদের সাথে এমপিদের বৈরী আচার-আচরণ, আওয়ামী লীগ বাদ দিয়ে বিএনপি জামায়াতের নেতাদের নিয়ে বলয় তৈরী করার বিষয়টি তুলে ধরার চেষ্টা করা হবে।
এছাড়া বৈঠকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে দলের সাংগঠনিক সম্পাদকরা তাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগের সাংগঠনিক রিপোর্ট পেশ করবেন। কোন বিভাগের সংগঠনের বর্তমান অবস্থা কি? কয়টির সম্মেলনের বাকী রয়েছে, কোন্দল কোন পর্যায়ে তা তুলে ধরবেন সাংগঠনিক সম্পাদকরা।
দেশীয় ও আন্তর্জাতিক নানা গুরুত্বপূর্ণ দিক নিয়ে আলোচনার বিষয়বস্তু থাকলেও বৈঠকের জাতীয় সম্মেলন এবং মহিলা লীগ, যুব মহিলা লীগ, তাঁতী লীগ, মৎসজীবি লীগ, ছাত্রলীগের সম্মেলনের ঘোষণা আসবে কী না নেতাকর্মীদের চোখ সেই দিকে।
এর আগে কাউন্সিলের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বিভিন্ন উপকমিটির খসড়া তালিকা প্রণয়ন করতে দলের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াকে নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এছাড়াও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি, অভ্যর্থনা, গঠনতন্ত্র, ঘোষণাপত্র, অর্থ, দফতর, প্রচার-প্রকাশনা, মঞ্চ সাজসজ্জা, শৃঙ্খলা, স্বাস্থ্য ও সাংস্কৃতিক উপকমিটির একটি করে খসড়া তৈরির নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। ইতোমধ্যে গঠনতন্ত্র উপ-কমিটি গঠনতন্ত্র সংশোধনের বিষয়ে কাজ শুরু করে দিয়েছে। এর দায়িত্বে আছেন দলের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, এই বৈঠকের অনেক বিষয়েই আলোচনা হবে। সব সময়েই হয়। তিনি বলেন, সহযোগী সংগঠনের মেয়াদউত্তীর্ণ কমিটির কাউন্সিলের বিষয়ে আলোচনা হতে পারে এবং এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তও হতে পারে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন